প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ২১:৪৮ পিএম
গাজার রাফা অভিযানকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলে অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর
ওপর যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত
নিয়েছে ওয়াশিংটন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের একাধিক সরকারি কর্মকর্তা মার্কিন
সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কর্মকর্তারা
বলেছেন, শিগগির ইসরায়েলকে ১ হাজার ৮০০টি বোমার একটি চালান পাঠানো হবে। প্রতিটি বোমার ওজন ৫০০
পাউন্ড বা ২২৬ কিলোগ্রাম। গত এপ্রিলে এই চালানের ওপরই স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বাইডেন
প্রশাসন। এ নিয়ে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন
করেছিলেন। যদিও গত ২৩ জুন ইসরায়েল প্রশাসনের কয়েকজন জানিয়েছিলেন, ওয়াশিংটনের সঙ্গে
বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সোমবার এক্সিওসের এক প্রতিবেদনে অবশেষে
তথ্যের নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে গাজা উপত্যকা
নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে গাজায় যে অভিযান শুরু
করেছে ইসরায়েলি বাহিনীÑ তার অংশ হিসেবে গত মার্চ মাসে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায়
সেনা অভিযান চালানোর পরিকল্পনা প্রকাশ করেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে এই পরিকল্পনার সবচেয়ে বড় সমালোচক ছিলেন ইসরায়েলের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ইসরায়েলের সেনা অভিযান থেকে প্রাণ বাঁচাতে গাজার বিভিন্ন
এলাকা থেকে রাফায় আশ্রয় নিয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। বাইডেনের বক্তব্য ছিল, ইসরায়েলি
বাহিনী রাফায় অভিযান শুরু করলে বিপুল পরিমাণ প্রাণহানি ঘটবে। রাফায় অভিযান
পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে নেতানিয়াহুকে বেশ কয়েবার আহ্বানও জানিয়েছিলেন তিনি। তবে নেতানিয়াহু নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। তার বক্তব্য ছিলÑ গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি
রাফা। তাই হামাসকে চিরতরে নিষ্ক্রিয় করতে হলে রাফায় অভিযান অপরিহার্য। এই নিয়ে বাইডেন প্রশাসন এবং নেতানিয়াহুর মধ্যে কয়েক সপ্তাহ টানাপড়েন চলার পর
এপ্রিল মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সহায়তার একটি চালানে স্থগিতাদেশ দেন
বাইডেন। এর মধ্যেই গত মে মাসের শুরু থেকে রাফায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী।
স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের কারণ প্রসঙ্গে এক্সিওসকে মার্কিন
কর্মকর্তারা বলেছেন,
হামাসের পাশাপাশি সম্প্রতি লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র ইসলামী
গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গেও তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর
(আইডিএফ)। মূলত এ কারণেই ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ ফের ‘স্বাভাবিক’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে
ওয়াশিংটন। ২৭ জুন রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা
জানিয়েছেন, অক্টোবরের পর থেকে ওয়াশিংটন এখন পর্যন্ত ইসরায়েলকে ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন মূল্যের
সামরিক সহায়তা দিয়েছে।
সূত্র : এক্সিওস