প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৪ ১৬:২১ পিএম
আপডেট : ২০ জুন ২০২৪ ১৭:০৩ পিএম
ইরানের ইসলামিক রিভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। ছবি : সংগৃহীত
কানাডা ইরানের ইসলামিক রিভল্যুশনারি গার্ড কর্পসকে (আইআরজিসি) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এ ছাড়া ইরানে অবস্থানরত নাগরিকদের ইরান ত্যাগ করে দেশে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে কানাডা। কানাডার এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে ইরান।
বুধবার (১৯ জুন) কানাডার সরকার আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। আর জানিয়েছে, এই পদক্ষেপ অটোয়াকে ‘সন্ত্রাসী অর্থায়ন মোকাবিলায়’ সহায়তা করবে।
কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি এই ঘোষণার পর ইরানে অবস্থানরত কানাডীয়রা নির্বিচারে আটক হওয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলে সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘যারা বর্তমানে ইরানে আছেন তাদের জন্য আমার বার্তা পরিষ্কার। তাদের দেশে ফেরার সময় হয়েছে। আর যারা ইরানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তারা যাবেন না।’
বুধবার দেশটির জননিরাপত্তামন্ত্রী ডমিনিক লেব্ল্যাঙ্কি এ সিদ্ধান্তকে ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ার হাতিয়ার’ বলে অভিহিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার ইরানের ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি কানাডার এ তালিকাভুক্তকরণের সিদ্ধান্তকে ‘অবিবেচক ও অপ্রচলিত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ পদক্ষেপ বলে নিন্দা করেছেন।
কানানি বলেছেন, ‘কানাডার এ পদক্ষেপ রেভল্যুশনারি গার্ডের বৈধ ও প্রতিরোধমূলক ক্ষমতার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না। তেহরান তালিকাভুক্তির বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রাখে।’
কানাডার এ সিদ্ধান্তের ফলে আইআরজিসির শীর্ষ কর্মকর্তারা কানাডায় প্রবেশ করতে পারবেন না। একই সঙ্গে ইরানের কয়েক হাজার জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার ওপরও কানাডায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তা ছাড়া কানাডায় অবস্থানরত ইরানের বর্তমান ও সাবেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করা হতে পারে। তাদের অপসারণ করা হতে পারে।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে তেহরানে ফ্লাইট পিএস৭৫২-কে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল। নিহতদের পরিবারসহ কিছু প্রবাসী সদস্য আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী তকমা দিতে চাপ প্রয়োগ করেছিল। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন কানাডা সরকার তখন আইআরজিসিকে সন্ত্রাসবাদের তকমা দিতে অস্বীকার করেছিল।
কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ কানাডার বিরোধী কনজারভেটিভদের পাশাপাশি ইরানি প্রবাসীরাও লিবারেল প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে আইআরজিসিকে কালো তালিকাভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। যার ফলে অবশেষে আইআরজিসিকে সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের রিভল্যুশনারি গার্ডের বিরুদ্ধে একই রকম পদক্ষেপ নিয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোয় অভিযোগ করেছিল।
তেহরান এই ধরনের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। আর বলেছে, ইরানের এই এলিট ফোর্স একটি সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান, যা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য দায়ী।
আইআরজিসি হচ্ছে ইরানের একটি প্রধান সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি। যার নিজস্ব স্থল বাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীসহ মোট ১ লাখ ৯০ হাজারের বেশি সক্রিয় কর্মী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এর সঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।