আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২২ ১১:৩০ এএম
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২ ১৫:০১ পিএম
জল ও আকাশপথে চীনের সামরিক মহড়া শুরু
চরম উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফর শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বীপটির আকাশ ও জলসীমায় ‘অভূতপূর্ব’ সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার দিকে তাইওয়ানের আশেপাশে ছয়টি এলাকায় এ সশস্ত্র মহড়া শুরু করে বেইজিং।
তাইওয়ান বলছে, এ সামরিক মহড়ার মধ্য দিয়ে চীন দেশটির স্থিতাবস্থা নষ্ট করতে চাইছে।
বেইজিং জানিয়েছে, এ মহড়া হবে ব্যস্ত জলপথে এবং এতে দূরপাল্লার অস্ত্র পরীক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
চীনের আপত্তি সত্ত্বেও গত মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ান সফরে যান পেলোসি। তার আগমনের পর চীন সেই রাতে সামরিক কূটকৌশল শুরু করে। এ ছাড়া পেলোসির সফরের প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে চীন। তাইওয়ানের শতাধিক খাবারের ব্যবসার ওপর আরোপ করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
বুধবারও তাদের সামরিক তৎপরতা অব্যাহত ছিল। তাইওয়ান বলেছে, এ মহড়াগুলো জাতিসংঘের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। একই সঙ্গে দেশটির আঞ্চলিক স্থান আক্রমণ করে তাদের আকাশ ও সমুদ্রসীমা অবরোধ করে রেখেছে।
তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড মনে করে বেইজিং। প্রয়োজনে দ্বীপরাষ্ট্রটি নিয়ন্ত্রণে নিতে চাপ প্রয়োগের হুঁশিয়ারিও দিয়ে আসছে দেশটি।
তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এখন পর্যন্ত কৌশলগত অবস্থান বজায় রেখেছে। তবে দীর্ঘদিন তাইওয়ানকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার চীনা সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মহড়াগুলোকে সমন্বিত মহড়া হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ান প্রণালীজুড়ে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার পরিকল্পনা করছে।
চীনের মূল ভূখণ্ডের সামরিক বিশেষজ্ঞ সং ঝংপিং-এর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ভবিষ্যত সামরিক সংঘাতের ক্ষেত্রে বর্তমানে চীন যে মহড়াগুলো পরিচালনা করছে তা সরাসরি যুদ্ধ অভিযানে প্রয়োগ করা হবে।
চীনের আরেক সামরিক বিশেষজ্ঞ ঝাং জুয়েফেংকে উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি বলছে, যদি পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) তাদের নিয়মিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলোও মূল ভূখণ্ড থেকে পশ্চিম দিকে উৎক্ষেপণ করে, তাহলে পূর্ব দিকে তাইওয়ানের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করবে। এর অর্থ দাঁড়ায় চীন যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উৎক্ষেপণ করবে তা দ্বীপরাষ্ট্রটির ওপর দিয়েই যাবে, যেটিকে ঝাং ‘অভূতপূর্ব’ মহড়া বলে উল্লেখ করেছেন।
বেইজিং বলেছে, ছয়টি অঞ্চলে মহড়া অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে কয়েকটি তাইওয়ানের আঞ্চলিক জলসীমার অন্তর্ভুক্ত।
তাইওয়ান ইতোমধ্যে তাদের শিপিং ফার্ম এবং বিমানব্যবস্থাকে এসব এলাকা এড়াতে সতর্ক করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, চীনের এ সামরিক মহড়াগুলো দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। এ ছাড়া তারা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
গত ২৫ বছরের মধ্যে তাইওয়ান সফর করা সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ মার্কিন রাজনীতিবিদ পেলোসি। সফর শেষে তিনি তাইওয়ানের প্রতি সংহতি ও এর গণতন্ত্রের প্রশংসা করেন। এখন এর কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন শি জিনপিং।
/এনএস/এমজে/