মোদির মন্ত্রিসভা
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ২৩:৪২ পিএম
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪ ২৩:৫১ পিএম
জওহরলাল নেহরুর পর টানা তিন মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে শপথ পড়ান দ্রৌপদী মুর্মু। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হলেন নরেন্দ্র মোদি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ১৮তম লোকসভায় ফিরছে জোট সরকার। নির্বাচনী ফল ঘোষণার পর শরিক দলগুলো মোদিকে সরকার গঠনের আহ্বান জানানোয় তার এ পদে শপথ নিতে কোনো বাধা পেতে হয়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রবিবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় নরেন্দ্র মোদির পর একে একে ৭২ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। সকাল থেকেই মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় যারা থাকবেন তাদের সঙ্গে ফোনালাপ চলছিল। শেষ পর্যন্ত মোদির ৩.০ মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৩০ জন, স্বতন্ত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত পাঁচজন এবং প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন ৩৬ জন। তবে কে কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন তা এখনও জানানো হয়নি।
মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) থেকে মন্ত্রী হয়েছেন দুজন। জনতা দল (জেডিইউ) থেকেও দুজন মন্ত্রী হয়েছেন। বিজেপি থেকে মন্ত্রী হয়েছেন ৩৭ জন। এই মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন রাজনাথ সিং, অমিত শাহ, নীতিন গড়করি, জেপি নাড্ডা, শিবরাজ সিং চৌহান, নির্মলা সীতারমণ, এস জয়শঙ্কর, মনোহর লাল খট্টর, এইচডি কুমারস্বামী, পীযূষ গয়াল, ধর্মেন্দ্র প্রধান, জিতন রাম মাঞ্জি, রাজীব রঞ্জন সিং ওরফে লালন সিং, সর্বানন্দ সোনোয়াল, ডা. বীরেন্দ্র কুমার, কিঞ্জরাপু রাম মোহন নাইডু, প্রহ্লাদ জোশী, জুয়াল ওরাম, গিরিরাজ সিং, অশ্বিনী বৈষ্ণব, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, ভূপেন্দর যাদব ও গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত।
প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হয়েছেন টিডিপির সাংসদ রাম মোহন নায়ডু, এলজেপি সাংসদ চিরাগ পাসওয়ান, করিমনগরের বিজেপি সাংসদ সঞ্জয় কুমার, জেডিইউর রামনাথ ঠাকুর, বিজেপির সুরেশ গোপি, শিবসেনা (শিন্ডে) থেকে প্রতাপ রাও যাদব, বিজেপির ভি সোমান্না, বাংলার বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, বিজেপির রক্ষা খাড়সে, রাভনিত সিং বিট্টু, অজয় তামতা, জিতিন প্রসাদ, হর্ষ মালহোত্রা ও অন্নপূর্ণা দেবী।
মোদির ৩.০ মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হলেও পূর্ণমন্ত্রিত্ব পাননি বাংলার কেউ। সুকান্ত মজুমদার ও শান্তনু ঠাকুরকে সম্ভবত স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হবে। নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে সুকান্ত আর শান্তনুকে দেখার পর অনেকেই আন্দাজ করেছিলেন এ দুজন মন্ত্রী হবেন। অনেকে ভেবেছিলেন তারা পূর্ণমন্ত্রী হবেন। দুজনকেই সম্ভবত প্রতিমন্ত্রী করা হবে। শান্তনু ২০১৯-এর পর মন্ত্রী হয়েছিলেন। তাকে জাহাজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে সুকান্ত এবারই প্রথম মন্ত্রিত্ব পেলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুর এক প্রতিবেদন অনুসারে, নতুন মন্ত্রিসভা নির্ধারণের জন্য বিজেপি ও এনডিএ জোটের শীর্ষ নেতারা গত শনিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে টানা ১১ ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা ও জাতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মন্ত্রিসভার স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, অর্থ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো জরুরি পদগুলো বিজেপির কাছেই থাকবে। ভারতীয় গণমাধ্যমের বিভিন্ন সূত্রের ধারণা অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাজনাথ সিং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও নীতিন গড়করি সড়ক ও জনপথমন্ত্রী হিসেবে নিজেদের পদ ধরে রাখবেন। রাজ্যসভার সংসদ সদস্য নির্মলা সীতারমণ ও ড. এস জয়শঙ্করের পদও পরিবর্তন হবে না, এমন ইঙ্গিতও পাওয়া গেছে। আর ভারতের সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক উন্নতি করায় নীতিন গড়করিই এ মন্ত্রণালয় পাচ্ছেন, সেটা প্রায় নিশ্চিত।