প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৪ ২২:১৫ পিএম
আপডেট : ০৭ মে ২০২৪ ২২:১৬ পিএম
নাজমুল হোসেন শান্ত
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংই এখন টি-টোয়েন্টির প্রাণ। যে কারণে ব্যাটারদের নজরই থাকে হার্ড-হিটিংয়ে। স্ট্রাইক রেট বাড়ানো মানেই সাফল্য ব্যাটারদের হাতের মুঠোয়। প্রতিপক্ষ বোলারদের কচুকাটা করাটাই কুড়ি ওভারের ক্রিকেটের মূল ধর্ম। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে এগিয়ে থাকা মানেই রান উৎসবের ম্যাচে জয়ের মুকুট মাথায় তোলা।
মার-কাটারি ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হলে সঙ্গী হবে রাজ্যের হতাশা। তাই তো চার-ছক্কার বৃষ্টি ঝরিয়েই প্রায়শই ক্রিকেট দুনিয়াকে চমকে দেয় স্কটল্যান্ড ও হংকংয়ের মতো সহযোগী দেশগুলো। যাদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণের তেতো স্বাদ হজম করার বাজে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে টাইগারদের।
দেশের ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টির স্টাইলটা এখনও ঠিক রপ্ত করতে পারেননি। এক দিনের ক্রিকেটেই যেন আটকে রয়েছেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। অনেক সময় লিটন দাস-নাজমুল হোসেন শান্তদের ব্যাটিং দেখে বোঝার উপায় থাকে না তারা টেস্ট খেলছে না টি-টোয়েন্টি নাকি ওয়ানডে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে এখন ২০০-২৫০ রানও নিরাপদ নয়। আইপিএলের চলতি আসরে মিলছে তার প্রমাণ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে হতে যাওয়া বিশ্বকাপেও বইয়ে যেতে পারে সেই রান উৎসবের ঢেউ। কিন্তু সেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে জিম্বাবুয়ের মতো অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলের বিপক্ষেও ছোট্ট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গলদঘর্ম অবস্থা লিটনদের। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ টাইগারদের ব্যাটিংয়ের সেই কষ্টের কথাই তুলে ধরছে।
আজ তৃতীয় ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করতে নেমেও বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ। মাত্র ১৬৫ রানেই গুটিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে এমন মন্থর গতির ব্যাটিং মোটেই সুখকর নয়।
বাংলাদেশের ব্যাটিং কতটা ধীরগতির? তার প্রমাণ মিলবে দলের অধিনায়কের দিকে নজর রাখলেই। এবারের বিশ্বকাপে ২০ দলের অধিনায়কদের স্ট্রাইক রেট বিচারে শান্ত পড়ে আছেন যে তালিকার প্রায় তলানিতে। ব্যাটিংয়ে তার চেয়ে এগিয়ে আছেন ১৮ কাপ্তান। তবে শান্তর মান বাঁচিয়েছেন বায়ান মাসাবা। যিনি কি না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অভিষেক হতে যাওয়া উগান্ডার ক্যাপ্টেন।
৩৩ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শান্ত নিজের নামের পাশে যোগ করেছেন ৭১৩ রান। তার ব্যাটিং গড় ২৬.৪০। এই রান সংগ্রহ করতেই শান্ত ব্যাট চালিয়েছেন ১১১.০৫ স্ট্রাইক রেটে। আর ৫৯ টি-টোয়েন্টিতে মাসাবার স্ট্রাইক রেট ১০৭.৯৪। একজন বোলার হয়েও উগান্ডার এ ক্যাপ্টেন ১৮.১২ গড়ে রান করেছেন ৪৩৫!
এবারের বিশ্বকাপের ক্যাপ্টেনদের মধ্যে স্ট্রাইক রেটে সবচেয়ে এগিয়ে এইডেন মার্করাম। দক্ষিণ আফ্রিকান দলনেতার ১৫০.৬৭। দুরন্ত ব্যাটিংয়ের ফুল ফুটিয়ে ৩৯ টি-টোয়েন্টিতে ৩৮.৫৫ গড়ে তুলেছেন ১ হাজার ১১৮ রান। নাম্বার ওয়ান মার্করামের সঙ্গে ১৯তম শান্তর পার্থক্য তো এবার স্পষ্ট হলো!
স্ট্রাইক রেট হয়তো কম। তবে অধিনায়কত্বে দারুণ সফল মাসাবা। সর্বাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতায় পাকিস্তান ক্যাপ্টেন বাবর আজমের রেকর্ড এরই মধ্যে ছুঁয়ে ফেলেছেন। দুজনেই নিজ নিজ জন্মভূমিকে অধিনায়ক হিসেবে জয় উপহার দিয়েছে সমান ৪৪টি করে। শান্তর জন্য এ পরিসংখ্যানটা প্রেরণা হতেই পারে।