× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সব সময় ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলে যাব : প্রধানমন্ত্রী

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৪ ১৬:৩৭ পিএম

আপডেট : ০৮ মে ২০২৪ ১৬:৫৪ পিএম

২০২৪ সালের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : ফোকাস বাংলা

২০২৪ সালের হজ কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : ফোকাস বাংলা

আরব ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আরব ভূখণ্ডে ফিলিস্তিন তাদের জায়গা তারা পাবে, এটা তাদের অধিকার। এ অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সেই অধিকার তাদের দিতে হবে। বিশ্বের মুসলিম-প্রধান দেশগুলো এক হলে ফিলিস্তিনিদের দাবি আদায় সহজ হতো। 

বুধবার (৮ মে) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন আশকোনা হজক্যাম্পে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘হজ কার্যক্রম ২০২৪’-এর উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেছেন, সেখানে নারী পুরুষসহ শিশুদেরও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। এ ব্যাপারে সবখানেই আমার কণ্ঠ সোচ্চার। সব জায়গাতেই আমি এর প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। সব সময় ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলে যাব।

শেখ হাসিনা বলেন, মুসলিম বিশ্ব এক হলে ফিলিস্তিনির অধিকার আদায়ে আরও এগিয়ে যেতে পারতাম। ওআইসি ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আমি একমাত্র বোন। একমাত্র বোন হিসেবে আমি সব মুসলিম দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছি আপনার এক হোন। 

এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। যেখানে সব ধর্মের মানুষের অধিকারের কথা বলা আছে। অথচ মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ধর্মের নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, যা দুঃখজনক।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেখছেন ফিলিস্তীনে গণহত্যা চালানো হচ্ছে। সেখানে নারী ও ছোট ছোট শিশুদেরকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। কাজেই তাদের জন্য, বাংলাদেশের জন্য ও সারাবিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য আপনারা (হজ যাত্রী) দোয়া করবেন।

তিনি হজ যাত্রীদের কাছে দেশ ও জাতির জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, তার সরকার হাজিদের জন্য যে সুযোগ সুবিধা সংবলিত হজ ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছে, সেটা ধরে রেখে যেন এটাকে আরো উন্নত করতে পারে- সে দোয়াটা আপনারা করবেন আর দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন আমাদের মানুষের জন্য গোলা ভরা ধান দেন, পুকুর ভরা মাছ দেন, সুন্দর-উন্নত জীবন দেন, সেই দোয়া করবেন।’

 এ সময় তার সরকার হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও উন্নত করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

ধর্ম মন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী ও বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান বক্তৃতা করেন।

হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার ও বক্তৃতা করেন। দু’জন হজযাত্রী অনুষ্ঠানে নিজস্ব অভিব্যক্তিও ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ২০২৪ সালের হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল পরিবেশনা প্রদর্শিত হয় এবং শেষে দেশ-জাতি ও হজ যাত্রীদের সার্বিক মঙ্গল কামণায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এ বছর মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ বাংলাদেশী হজ পালন করতে পারবেন। তাদের মধ্যে ৪ হাজার ৫৬২ জন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকী ৮০ হাজার ৬৯৫ জন ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করবেন।

এ বছর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশী হজযাত্রীদের নিয়ে হজ ফ্লাইট চালু হওয়ার কথা রয়েছে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-৩৩০১ বিমানটি ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটুকু বলবো যে আজকে আমরা হজ ব্যবস্থপনাকে উন্নত করেছি, প্রতিবারই যারা যাচ্ছেন যে কোন সমস্যা হচ্ছে সেটাকে আরো উন্নত করার পদক্ষেপ নিচ্ছি। আর এক্ষেত্রে সৌদি সরকার সবসময় আমাদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’ তিনি সৌদি বাদশাহ এবং ক্রাউন প্রিন্সকে এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

তাদের সার্বিক সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্রমান্বয়ে হজ ব্যবস্থাপনাটাকে আরও উন্নত করতে পেরেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা করতে পেরেছি বলেই আপনারা আজকে সকলেই ভালোভাবে হজ করতে যেতে পারছেন, এটা আরও সহজ হয়েছে। এই হজ ক্যাম্পটার যথাযথ উন্নতি করে দিয়েছি। এখান থেকে একটি আন্ডারপাস করে দেওয়া হচ্ছে। যেটার মাধ্যমে হজক্যাম্প, বিমানবন্দর এবং রেলষ্টেশনের মধ্যে একটি যোগসূত্র স্থাপিত হবে। এখানে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে এস্কেলেটর ও গলফ কার্টের মত গাড়ি থাকবে। তার সরকার সারা দেশে যে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করছে সেখানে হাজিদের প্রশিক্ষণ, রেজিস্ট্রেশন সহ সেবা প্রদানকারিদেরও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। 

সার্বিক বিমান পরিবহনের উন্নয়নে তার সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সৌদি এয়ারলাইন্সে যেমন তেমনি নিজস্ব বিমানেও আমরা এখন হজযাত্রী আনা নেওয়া করতে পারি। আজকে আমরা ই-হজ ব্যবস্থাপনা করতে পেরেছি। কেননা ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের আগামী দিনের লক্ষ্য হচ্ছে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এরপর আর কোনো কষ্ট করতে হবেনা আপনারা ঘরে বসেই সব ব্যবস্থা পাবেন। সোজা প্লেনে উঠবেন, চলে যাবেন। সেই ধরনের ব্যবস্থা আমরা করতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মালপত্র নেওয়া বা ওখান থেকে মালপত্র নিয়ে আসা বা জমজমের পানি নিয়ে আসার সব ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। মক্কা-মদিনায় হজ অফিস স্থাপন করাসহ জেদ্দায় আলাদাভাবে টার্মিনালে জায়গা ভাড়া নিয়ে আমাদের হাজিরা যাতে সেখানে গিয়ে অবস্থান করতে পারেন সেই ব্যবস্থাটাও করেছি। আমরা যখন সরকারে এসেছি তখন থেকেই এই ব্যবস্থাটা নিয়েছি এবং প্রতিবছর টার্মিনালে এই ব্যবস্থাটা আমরা রাখি। কারণ আগে যাত্রীদের এখানে সেখানে ফুটপাতে বসে থাকতে হোত।

তিনি ১৯৮৪ সালে প্রথম ওমরাহ এবং ১৯৮৫ সালে  হজ পালনে যাবার পর থেকেই দেখেছেন যাত্রীরা ফুটপাত বা এখানে সেখানে অবস্থান করছেন। তাদের অবস্থানের কোন জায়গা ছিলনা, তখন সরকারে না থাকলেও সৌদি প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে তিনি এসব অব্যবস্থাপনা দূর করার প্রচেষ্টা নেন যাঁর অনেকগুলোতেই সৌদি প্রশাসন সাড়া দেয়। তিনি বলেন, পরবর্তীতে সরকারে এসে আধুনিক হজ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নে তিনি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন এটা ঠিক। কিন্তু পাশাপাশি এই হজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং ইসলাসের সেবা করার জন্য ইসলামী ফাউন্ডেশন তিনি তৈরী করে দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশে বিশ^ ইজতেমার ব্যবস্থা এবং আয়োজনের জন্য জমি বরাদ্দ দিয়ে যান।

তিনি বলেন, ইসলাম সম্পর্কে মানুষের যেন সম্যক ধারণা হয় সেই ব্যবস্থাটা তাঁর হাতেই করা। স্বাধীনতার পর মাত্র ৩ বছর ৭ মাস সময় তিনি পান তার মধ্যেই এসব পদক্ষেপ নেন। রেডিও-টেলিভিশনে কোরআন তেলাওয়াত, ঈদে মিলাদুন্নবীতে ছুটি প্রদান- এসব কিছুই জাতির পিতা করে গেছেন। অর্থাৎ এদেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিটাকে সম্মান জানিয়ে সকলে যাতে সহজভাবে ধর্মটা পালন করতে পারেন সে ব্যবস্থটা তিনি করে দিয়ে যান। 

এ সময় আজকে দেশের যে উন্নয়ন সেটা দেশবাসী সকলের সহযোগিতাই সম্ভব হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

এদেশে যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে, শান্তির ধর্ম  ইসলাম এবং আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের সে শিক্ষাই দিয়ে গেছেন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, কাজেই আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এ ধরনের কাজ যেন কেউ না করেন।

মদ, জুয়া, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ করে মুষ্টিমেয় লোক আমাদের পবিত্র ধর্মের নামে যে বদনাম দিয়ে যায় সেটাই দুঃখজনক।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি এটারও প্রতিবাদ করি সবসময়। কারণ আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করতে চাই। মানুষের উন্নয়ন করতে চাই।

সূত্র : বাসস

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা