ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৪ ২২:২৭ পিএম
আপডেট : ০৭ মে ২০২৪ ২২:৩৭ পিএম
তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রধান ক্যানেলসহ টারশিয়ারি ও সেকেন্ডারি খাল সংস্কারের জন্য চার লাখ গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রবা ফটো
তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রধান ক্যানেলসহ টারশিয়ারি ও সেকেন্ডারি খাল সংস্কারের জন্য চার লাখ গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। সংস্কারের নামে নির্বিচারে অতিরিক্ত গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশবাদীরা। দেশব্যাপী যখন প্রচণ্ড দাবদাহে হিট অ্যালার্ট জারি করতে হচ্ছে, ঠিক সেই সময় এত বেশি গাছ একবারে কেটে ফেলা ঠিক নয় বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এবং বন বিভাগের উদ্যোগে কাটা হচ্ছে এসব গাছ। নীলফামারী বন বিভাগ ও সামাজিক বনায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, তার দায়িত্বে থাকা নীলফামারী সদর উপজেলা ও ডিমলা উপজেলার প্রকল্প এলাকায় এ পর্যন্ত ৫০ শতাংশ গাছ কাটা হয়ে গেছে।
সামাজিক বনায়ন প্রকল্প অনুসারে, গাছ পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার পর কাটার কথা। আর নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে ৫৫ শতাংশ অর্থ পাওয়ার কথা পরিচর্যাকারীদের, ২০ শতাংশ পাবে পাউবো, বাকি ২৫ শতাংশ যাবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও খাতে। তিস্তা সেচ প্রকল্পের জন্য গাছ কাটা হলেও যারা পরিচর্যা করেছেন, তাদের কিছু জানানো হয়নি।
রাশেদা বেগম নামে একজন পরিচর্যাকারী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘গাছগুলো পরিচর্যা করে বড় করেছি আমরা, কিন্তু এখন পর্যন্ত বেতনের কোনো টাকা পাইনি। গাছ বিক্রির টাকা পাব কি না জানি না।’ তবে সামাজিক বনায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলছেন, উপকারভোগীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই করে তাদের ন্যায্য অর্থ পরিশোধ করা হবে।
গাছ কাটা সম্পর্কে ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসাফউদ্দৌলা বলেন, প্রকল্প সংস্কার ও সম্প্রসারণের স্বার্থে গাছ কাটা হচ্ছে। ক্যানেলের কাজ শেষ হলে নতুন করে আবারও গাছ লাগানো হবে এবং নতুন করে বন বিভাগের সঙ্গে ইতোমধ্যে চুক্তি হয়েছে।
কিন্তু পরিবেশসচেতন বিশেষজ্ঞরা একবারে এত বেশি গাছ কাটার বিরোধিতা করেছেন। রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক এবং রিভারাইন পিপলের পরিচালক তুহিন ওয়াদুদ বলেন, এত গাছ একসঙ্গে কাটা অন্যায়। সাড়ে ৭০০ কিলোমিটার সেচ খাল সংস্কার ও সম্প্রসারণের নামে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার যে প্রজেক্ট নিয়েছে সরকার, তার কোনো দরকার নেই। অপ্রয়োজনে বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হচ্ছে। এটা কোনো কাজেই আসবে না। এজন্য আবার গাছগুলো কাটা হচ্ছে। গাছগুলো না কাটলে অর্থের অপচয় করতে পারত না।