রাজবংশী রায়
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫০ এএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৫৭ এএম
স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেও নিশ্চিত করা যায়নি সবার জন্য স্বাস্থ্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পেছনে বড় বাধা চিকিৎসা ব্যয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণাপত্র অনুযায়ী, সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে ব্যক্তির ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশে ঘটছে উল্টো ঘটনা। ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয় দিন দিন বাড়ছে আর সরকারের ব্যয় কমছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৯ শতাংশের বেশি নিজের পকেট থেকে খরচ করে এই দুই দেশের নাগরিকরা। আর সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয়ে রোগীর নিজের ব্যয়ের অংশ সবচেয়ে বেশি।
সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে বছরে ৮৬ লাখের বেশি মানুষের আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। আর ৬৪ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছে। অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে ১৬ শতাংশ মানুষ চিকিৎসাই পাচ্ছে না। এ হিসাবে ব্ছরে এ দেশের প্রায় তিন কোটি মানুষ প্রয়োজন হলেও চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছে পারছে না।
স্বাস্থ্য বিভাগের হিসাব বলছে, গ্রামাঞ্চলে থাকা কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন সাব-সেন্টার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতাল এবং নগরাঞ্চলে থাকা নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, নগর প্রাইমারি হেলথকেয়ার ডেলিভারি সার্ভিসেস প্রজেক্ট এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সরকারিভাবে মোট জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। বাকি প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষকে এখনও সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আমার স্বাস্থ্য, আমার অধিকার’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
সরকারি কার্যক্রমের সমালোচনা করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধ, পথ্য সরবরাহ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বিত্তবানরা বেসরকারি হাসপাতালে উচ্চ চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারলেও দরিদ্র মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয়। এর বাইরে জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের বিনামূল্যে চিকিৎসাপ্রাপ্তিতে সরকারি হাসপাতালে নানামুখী সংকট রয়েছে। এ অবস্থায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য ন্যূনতম মানসম্পন্ন স্বাাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হলে সরকারি বরাদ্দ বাড়াতে হবে। অন্যথায় এ সংকট দূর হবে না।
৩ কোটি মানুষ চিকিৎসাই নেয় না
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে প্রায় ১৫ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় মেটাতে গিয়ে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে। তারা দরিদ্রসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে অবস্থান করছে এবং প্রতি বছর অসুস্থতার কারণে ৬৪ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছে।
সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে ব্যক্তির ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে হবেÑ এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণাপত্রের বক্তব্য। এই চাপ কমাতে সরকারের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট ২০১২-২০৩২ সাল মেয়াদি একটি কৌশলপত্র তৈরি করে। ওই কৌশলপত্র অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতে ক্রমান্বয়ে ব্যক্তির ব্যয় কমে ২০৩২ সালে হবে ৩২ শতাংশ। যখন ওই কৌশলপত্র করা হয়, তখন ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় ছিল ৬৪ শতাংশ। কিন্তু সে ব্যয় আর না কমে বরং বেড়েছে। ২০১৫ সালে ব্যক্তির ব্যয় ৬৪ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ শতাংশ। ২০২০ সালে এই ব্যয় ৬৮ দশমিক ৫ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। পরবর্তী তিন বছরের হিসাব এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণা বলছে, ব্যক্তির সিংহভাগ অর্থ ব্যয় হয় ওষুধের পেছনে। মোট টাকার ৬৪ শতাংশ ব্যয় হয় ওষুধ কিনতে। দ্বিতীয় বড় খাত হাসপাতাল। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে ব্যয় হয় ১২ শতাংশ এবং হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে সেবা নিতে ১১ শতাংশ ব্যয় হয়। অন্যদিকে ৮ শতাংশ ব্যয় হয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পেছনে। বাকি ৫ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয় স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত পেশাজীবীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের পেছনে।
স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক ড. মো. এনামুল হক প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয় প্রত্যাশা অনুযায়ী কমানো যায়নি। তবে বৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী ধারা আটকে রাখা সম্ভব হয়েছে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও পরবর্তী পাঁচ বছরে এই ব্যয় দেড় শতাংশ বেড়েছে। তবে গত তিন বছরের হিসাব এখনও করা হয়নি। এটি সম্পন্ন হলে ব্যক্তির ব্যয় কত তা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে।
উপেক্ষিত স্বাস্থ্য খাত, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন ব্যয় বাংলাদেশে
গত এক দশকে বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৬ শতাংশের সামান্য বেশি থেকে ৫ শতাংশের নিচে থাকছে। আর দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশের কিছু বেশি। মোট বরাদ্দের অর্ধেকের বেশি বেতন-ভাতা, ওষুধ কেনাসহ পরিচালন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে। বাজেটের একটি বড় অংশ ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয়। গবেষণায় বরাদ্দ অপ্রতুল। পরিবহন ও যোগাযোগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং স্থানীয় সরকারের খাতগুলোতে পরিচালন ব্যয়ের তুলনায় উন্নয়ন ব্যয় বেশি। শিক্ষায় উন্নয়ন ব্যয় পরিচালন ব্যয়ের কাছাকাছি হলেও স্বাস্থ্যে উন্নয়ন ব্যয়ের চেয়ে পরিচালন ব্যয় বেশি।
স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন অর্থবছরের বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১০-১১ অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ টাকার অঙ্কে তিন গুণ বেড়েছে। অপরদিকে এই সময়ে বাজেটের আকার বেড়েছে প্রায় সোয়া চার গুণ। ২০১০-১১ অর্থবছরে ৬ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দ নিয়ে স্বাস্থ্য খাত নবম অবস্থানে ছিল। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের ৪ দশমিক ৯ শতাংশ বরাদ্দ নিয়ে স্বাস্থ্য খাত ১১তম স্থানে ছিল। মোট বরাদ্দ বাজেটের ৫ শতাংশেরও কম। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ খাতে মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বরাদ্দ ছিল। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের জন্য মোট বাজেটের ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, দেশের মোট বাজেটের ১৫ এবং জিডিপির ৫ শতাংশ হতে হবে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ। কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেট মোট বাজেটের ৫ শতাংশেরও কম। আর জিডিপির ১ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্বের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় যুক্তরাষ্ট্রের। দেশটি জিডিপির মোট ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করে। এরপর পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় সুইজারল্যান্ড ১২ দশমিক ২ শতাংশ এবং তৃতীয় অবস্থানে থাকা জার্মানি ১১ দশমিক ২ শতাংশ ব্যয় করে। জিডিপির তুলনায় স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে কম ব্যয় করে যথাক্রমে মোনাকো, পাপুয়া নিউগিনি ও ব্রুনাই। এই তিন দেশেরও পেছনে ১ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যয় বাংলাদেশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু সরকারি ব্যয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় মাথাপিছু সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ডলার ব্যয় করে মালদ্বীপ। এরপর পর্যায়ক্রমে শ্রীলঙ্কা ৩৬৯ ডলার, ভারত ২৬৭ ডলার, পাকিস্তান ১২৯ ডলার ব্যয় করে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ সবচেয়ে কম মাত্র ৮৮ ডলার ব্যয় করে। স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। চিকিৎসা ব্যয়ের ৭০ শতাংশের বেশি নিজের পকেট থেকে খরচ করে এই দুই দেশের নাগরিকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, নিজের পকেট থেকে ব্যয় কমিয়ে জনবান্ধব স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ব্যক্তির ব্যয় কমাতে হবে। অন্যথায় চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে প্রতি বছর অনেক মানুষ দরিদ্র হয়ে পড়ছে, ভবিষ্যতে তা বাড়তেই থাকবে। একই সঙ্গে মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগোতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
তবু এগিয়ে যাচ্ছে স্বাস্থ্য খাত
বিভিন্ন সংকটের মধ্যেও গত পাঁচ দশকে স্বাস্থ্য খাত ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছে। দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে। হাম, পোলিও, ধনুস্টংকারসহ বেশ কিছু রোগ নির্মূল হয়েছে। ফাইলেরিয়া, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ নিয়ন্ত্রণের পথে রয়েছে বাংলাদেশ। কলেরা, গুটি বসন্তসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রকোপ অনেকাংশে কমে এসেছে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদরোগ, ক্যানসারসহ অসংক্রামক রোগ অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ৬৭টি হাসপাতাল নিয়ে শুরু করা বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, বিভাগীয় পর্যায়ে একটি বড় হাসপাতাল এবং ৩৭টি মেডিকেল কলেজ এবং বিশেষায়িত অনেক রোগের হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেছে। তবে এসব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সুচিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে অনেক। অধিকাংশ জেলা, উপজেলায় চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা কর্মস্থলে উপস্থিত না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলছে না। আবার জেলা, উপজেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নেই। অধিকাংশ জেলায় আইসিইউ শয্যা নেই। কিডনি ডায়ালাইসিস, হার্টের রিং পড়ানো কিংবা ক্যানসারের চিকিৎসা নেই। গুরুত্বপূর্ণ সার্জারির চিকিৎসাও অপর্যাপ্ত। গত কয়েক বছরে চিকিৎসক ও নার্সও নিয়োগ দেওয়া হলেও এ খাতে ৪০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর পদ ফাঁকা। এ প্রভাব পড়ছে জেলা, উপজেলা ও গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায়। এ কারণে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজধানীমুখী হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য খাতকে বিকেন্দ্রীকরণের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিকেন্দ্রীকরণের দাবি বেশ পুরোনো। এই বিকেন্দ্রীকরণ করা হলে চিকিৎসার জন্য গ্রামের মানুষকে ঢাকায় আসতে হতো না। প্রত্যেকটি জেলা সদর হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুযোগসুবিধা থাকা প্রয়োজন। তাহলে মানুষের ভোগান্তি কমবে। একই সঙ্গে পৃথকভাবে বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরি না করে টারশিয়ারি হাসপাতালে সবগুলো বিভাগ শক্তিশালী করে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
এর পক্ষে উদাহরণ তুলে ধরে ডা. রশিদ-ই মাহবুব আরও বলেন, একজন রোগীর কিডনি, হার্ট, লিভার ও ডায়াবেটিস সমস্যা রয়েছে। এখন এই রোগী কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে আগে যাবেন? কারণ এই বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর একটিতেও তিনি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা পাবেন না। এ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠানে এ-সংক্রান্ত সবগুলো বিভাগ শক্তিশালীভাবে থাকলে সেখান থেকেই এই রোগীর পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব হতো। জেলা পর্যায়েও এ ধরনের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
গতকাল স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে হবে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সঠিকভাবে কাজ করলেই সেটি সম্ভব হবে। সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, যার যার জায়গা থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন। আপনাদের যা প্রয়োজন মন্ত্রী হিসেবে আমি দেখব।’