রাঙামাটি প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫০ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৬:২২ পিএম
রাঙামাটির বরকল উপজেলা। প্রবা ফটো
রাঙামাটির বরকলে চার নম্বর ভূষণছড়া ইউনিয়নের চান্দবী ঘাট পাড়ায় প্রত্যন্ত দুর্গম একটি গ্রামে অজ্ঞাত এক রোগের প্রাদুর্ভাবে পাঁচজন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অজ্ঞাত এ রোগে আরও ১০ থেকে ১৩ জনের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। চিকিৎসকরা বলছে, আমরা অনেক দেরিতে জানতে পেরেছি, এটা খাবারের বিষক্রিয়া থেকে হতে পারে।
স্থানীয়রা জানায়, গত জানুয়ারি মাস থেকে এ অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। হঠাৎ করে শরীর ব্যথা হয়, প্রচন্ড জ্বর আসে, বমি বমি ভাব হয়। এমনকি রক্ত বমি করেও মারা গেছেন অনেকে। গ্রামটি অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় গ্রামের আশপাশে কোনো স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র নেই। পাহাড়ি কবিরাজই ভরসা। তবে এতে কেউ সুস্থ হচ্ছে না।
গ্রামবাসীদের ধারণা, ‘তারা অনেক পুরোনো একটি বটগাছ কেটে পাপ করেছে। বটগাছটিকে একটি আধ্যাত্মিক গাছ বলে বিশ্বাস করত তারা। তাই তাদের এ ফল ভোগ করতে হচ্ছে।’
চান্দবী ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ জানান, ওই এলাকায় গত কয়েক মাস ধরে একটা অজ্ঞাত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত ৫ জন মানুষ মারা গেছে তার মধ্যে আমার স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির একজন ছাত্রী রয়েছে। গতকালকে আমার স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সহসভাপতি জানিয়েছে আরও নাকি ১৩ জনের মতো আক্রান্ত রয়েছে।
বরকল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান চাকমা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সেখান থেকে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর কথা রয়েছে।
বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংক্যছিং (সাগর) বলেন, গতকালকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিষয়টি আমাকে অবগত করেছে। এর আগে বিষয়টি কেউ আমাদের অবগত করেনি। আমরা এ পর্যন্ত ৫ জনের মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। আজকে আমরা ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জন স্যারের সঙ্গে আলাপ করে ৬ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। সন্ধ্যায় মেডিকেল টিমটি রওনা করবে আশা করছি। কাল তারা সেখানে পৌঁছে চিকিৎসা সেবা দিতে পারবে।
রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, আমাদের খবর পেতে খুব দেরি হয়ে গেছে। এলাকাটি খুব দুর্গম। আমরা ইতোমধ্যে মেডিকেল টিম রেডি করে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি এবং এর কারণটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। তবে এটা খাবারের বিষক্রিয়ায় হয়েছে বলে আমার ধারণা।
তিনি জানান, এর আগে নাকি সেই পাড়ায় পুরোনো একটা বটগাছ ছিল। স্থানীয় গ্রামবাসীরা সেটি কেটে ফেলার কারণে এ রোগ হয়েছে। তবে এটা তাদের কুসংস্কার।