অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন।
তিনি বলেছেন, লাইসেন্স ছাড়া হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলোকে নিজেদেরই বন্ধ করতে হবে। নয়তো কঠিন পদক্ষেপ নেবে সরকার।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রী জীবনের তৃতীয় দিন সাংবাদিকদের এসব কথা জানালেন সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর রবিবার (১৪ জানুয়ারি) প্রথম অফিস করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও লাইসেন্সবিহীন হাসপাতালের ভুক্তভোগী। সুতরাং আমি কখনই এ বিষয়ে ছাড় দেব না। ইতোমধ্যে আমি বলেছি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমার অবস্থান থাকবে, তেমনি অনুমোদনবিহীন হাসপাতালের ব্যাপারেও ছাড় দেওয়া হবে না।’
আয়ানের মৃত্যুর বিষয়েও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় কমিটির প্রতিবেদন সাপেক্ষে ব্যবস্থা তো হবেই। তবে এরকম কার্যক্রম সমর্থনযোগ্য না।’
তিনি বলেন, ‘শিশু আয়ানের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক ঘটনা। তার মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যতটুকু জানি আগামীকালই আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে। চিকিৎসায় যদি কোনো অবহেলা থাকে তাহলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
এর আগে আয়ান হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিসহ চার দফা দাবি নিয়ে সকালে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসেন আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ ও তার পরিবার। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আয়ানের বাবা তার ছেলের মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা দেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পাশে থাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আহমেদুল কবীর বলেন, ‘অনিবন্ধিতদের নিবন্ধনের আওতায় আনা এবং বন্ধের অভিযান শিগগিরই শুরু হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইউনাইটেড হেলথ সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে লাইসেন্স নিতেই হবে। সব মিলে প্রায় ৮ হাজার হাসপাতাল, ৯ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিবন্ধিত রয়েছে। বড় হাসপাতাল বলে কোনো ছাড় নয়।’
এদিকে ভারতসহ কয়েকটি দেশে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত ও সংক্রমণ বাড়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘করোনা বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। করোনার নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে এ বছর ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষকে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। আর ১ বছরে আড়াই কোটি মানুষকে চতুর্থ ডোজ দেওয়া হবে।’
নতুন সরকার গঠনের পর গত রবিবার নিজ কর্মস্থলে যোগ দিয়ে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমরা যদি সবাই সিনসিয়ারলি কাজ করি অসম্ভব কিছু না। পাঁচ থেকে ৫০০ বেডে (বার্ন ইউনিট) আসতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমি অনেকের কাছে গেছি প্রথম প্রথম। আমাকে অনেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং ফাইল ছুড়ে মেরেছেন এরকম ঘটনাও আমার আছে। কিন্তু আমি ধৈর্য ধরে আসছি এবং সবার সহযোগিতা পেয়েই এ জায়গায় আসছি। আমি প্রত্যেকটা হাসপাতালে যাব, কী কী সমস্যা আছে জানব। তারপর আমি একটা কর্মপরিকল্পনা করব।