প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:৪৫ পিএম
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ২২:০২ পিএম
মা ও শিশু। ছবি : সংগৃহীত
শিশুর জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে নিউমোনিয়ার আশংকা শতকরা ১৫ ভাগ কমে যায়। এছাড়া মাত্র ৬০ শতাংশ অভিভাবক উপসর্গ দেখা দিলে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করান। বাংলাদেশে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার এখনও আশংকাজনক। এ রোগে প্রতিঘণ্টায় ২ থেকে ৩ জন শিশু মারা যায়। প্রতি বছরে ২৪ হাজার শিশু এ সংক্রামক ব্যাধিতে মারা যায়।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি) ট্রেকশন কনফারেন্স হলে নিউমোনিয়া দিবসকে সামনে রেখে ‘শিশূদের নিউমোনিয়া: আমরা কি যথেষ্ট করছি?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আইসিডিডিআর,বির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ড. মোহাম্মদ জোবায়ের চিশতী প্রতিষ্ঠানটিতে নিউমোনিয়া নিয়ে কয়েকটি গবেষণার ফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এই রোগে প্রতি বছর প্রায় সাত লাখ শিশুর মৃত্যু হয়। যা পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর মৃত্যুর ১৪ শতাংশ। বছরে প্রায় ২৪ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করে তাদের মধ্যে ২৪ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী নিউমোনিয়া যা বিশ্বব্যাপী গড় থেকেও বেশি।
বাংলাদেশের শিশুদের নিউমোনিয়া আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী, গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বলে জানান ড. মোহাম্মদ জোবায়ের চিশতী।
তিনি বলেন, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে আইসিডিডিআর,বির একটি গবেষণায় দেখা যায়, বিরল গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া শৈশবকালীন নিউমোনিয়ার নতুন কারণ। ঘরের মধ্যে বাতাসের গুণগতমানের জন্যও অর্ধেক মৃত্যু হয়। যেসব পরিবারে ধুমপায়ী আছে সে পরিবারের শিশুর নিউমোনিয়ায় সংক্রমিত হওয়া সম্ভাবনা অন্য পরিবারের শিশুদের তুলনায় দ্বিগুণ থাকে। এছাড়া অক্সিমিটারের ব্যবহার অনেক মৃত্যু কমাতে পারে। এতে পরিবারের বাবা-মা ঘরে বসেই শিশুর অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করতে পারে। মূলত এই সময় অক্সিজেনের মাত্রা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবিদ হোসেন মোল্লা জানান, অল্পবয়সী, প্রবীণ এবং যাদের হৃৎপিণ্ড বা ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে তাদের গুরুতর নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি। নিউমোনিয়ার শুরুতে কাশি হয় যা সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে শ্বাসকষ্ট হলে তা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কখনও হাসপাতালে বেড থাকে না, কখনো মা-বাবা শিশুকে হাসপাতালে রাখতে চায় না। তবে এ ধরনের রোগীকে হাসপাতালে রাখাই ভালো। তাই একটি ডে কেয়ারের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। যেখানে হাসপাতালে শিশুকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেখাশুনা করবেন। যেহেতু শীতকালেই বেশি সম্ভাবনা দেখা যায় তাই অভিভাবকেকেও এসময় সতর্ক থাকতে হবে।