× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

পদোন্নতি-বদলি বাণিজ্যে কর্মচারী কোটিপতি

সৈয়দ ঋয়াদ

প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৫৯ এএম

আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১১:০৬ এএম

দুর্নীতি দমন কমিশন। ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশন। ফাইল ছবি

আলাদিনের জাদুর চেরাগ পাওয়ার মতোই ভাগ্য বদলেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার প্রধান সহকারী জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের। পদোন্নতি ও বদলি বাণিজ্য করে স্বাস্থ্যের এই কর্মচারী হাতিয়ে নিয়েছেন সোয়া কোটি টাকা। সম্প্রতি অনুসন্ধানে তার অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল- এই ৭ বছরে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি থেকে নিয়েছেন। এর মধ্যে তার নিজ নামে তিনটি ব্যাংক হিসাবে ৮২ লাখ টাকা, ৩টি বিকাশ অ্যাকাউন্টে ৪২ লাখ টাকা নেন, যা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ও বেতনভাতাবহির্ভূত লেনদেন বলে জানিয়েছে দুদক।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে উচ্চমান সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরে পদোন্নতি পেয়ে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রধান সহকারী হিসেবে প্রশাসন শাখায় পদায়নকৃত ছিলেন।

দুদক সূত্রটি আরও জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখায় প্রধান সহকারী দায়িত্ব পালনের সময় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দেশের সব জায়গায় স্বাস্থ্য সহকারী এবং মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের (ইপিআই) বদলি ও পদোন্নতির নথির দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের রূপালী ব্যাংক লিমিটেডের মহাখালী শাখায় স্যালারি ও সঞ্চয়ী হিসাবে ১৯ জন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (ইপিআই) কাছ থেকে বদলি ও পদোন্নতি বাবদ মোট ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া আরও দেখা যায়, জাহাঙ্গীর হোসেন মিরপুরে ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় একটি জমি কিনেছেন। তবে এই জমি কেনার অর্থ অর্জনের কোনো ব্যাখ্যা তিনি দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে দিতে পারেননি। একইভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য সহকারী, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও জেলা ইপিআই সুপারিনটেনডেন্টদের বদলি ও পদোন্নতির জন্য ঘুষ বাবদ আরও ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন।

এসব অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে তিনি দুদকের কাছে দাবি করেছেন ব্যাংক হিসাব ও বিকাশে যে টাকা লেনদেন করেছেন, তা তার বাড়ি মেরামত ও ফ্ল্যাট কেনার জন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, জাহাঙ্গীর যাদের কাছ থেকে টাকা ধার নেওয়ার কথা বলছেন, তাদের সঙ্গে তার দাপ্তরিক কোনো সম্পর্ক বা আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই।

একই সঙ্গে জাহাঙ্গীর হোসেন যাদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন, নগদে বা ব্যাংকে ওই টাকা পরিশোধ করার কোনো প্রমাণ বা রেকর্ডপত্র দেখাতে পারেননি বলে জানায় দুদক।

দুদক জানায়, জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদারের তিনটি বিকাশ অ্যাকাউন্টে ৪২ লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণ এবং তথ্য রয়েছে তাদের কাছে।

পদোন্নতি এবং বদলি বাবদ আসামি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন প্রশাসন শাখায় কর্মরত থাকাকালে ঘুষ হিসাবে ওই অর্থ নিয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা দণ্ডবিধি-১৬১ ধারার একটি অপরাধ। যে কারণে আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের সহকারী পরিচালক বিলকিস আক্তার এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন। তার অনিয়মের বিষয়টি এখন তদন্ত করছে সংস্থাটি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার আর কোনো বক্তব্য নেই। আমি যা বলার দুদককে বলেছি। সব কাগজপত্র দুদকে জমা দিয়েছি, আয়কর নথি দিয়েছি। ওনারা মামলা করার করুক, আমাকে জেল হাজতে পাঠাক তাতেও আমার আর কিছু করার নেই।’


 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা