× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাঙালির ডায়াবেটিসের পেছনে ব্রিটিশ শোষণ!

তাসনিম আলম ও গোলাম আনোয়ার সম্রাট

প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:২৫ এএম

আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ১১:২৪ এএম

বাঙালির ডায়াবেটিসের পেছনে ব্রিটিশ শোষণ!

মাহিন কবিরের বয়স ১৭ বছর। জন্ম ও বেড়ে ওঠা মফস্বল শহরে। এই বয়সেই তার দেহে বাসা বেঁধেছে দুরারোগ্য কঠিন ব্যাধি ডায়াবেটিস। দুই বছর আগে তার শরীরে ধরা পড়ে এই রোগ। ইনসুলিন না নিলে রক্তে চিনির মাত্রা বেড়ে যায়। মাহিনের মা শাহিন কবির বলেন, ‘ও এখনও ইনসুলিন নেওয়ার ব্যাপারে সচেতন হয়ে ওঠেনি। প্রতিদিন নিয়ম করে আমাকে মনে করিয়ে দিতে হয়। বয়স কম, কখনও  কখনও  জোর করে ওকে নিয়ম মানতে বাধ্য করতে হয়।’ 

মাহিনের মতো এমন পীড়াদায়ক জীবন এ দেশের হাজারো মানুষের। শুধু তার বয়সি নয়, বয়স, শ্রেণি-পেশা ও লিঙ্গভেদে এ দেশে ডায়াবেটিসের বাড়বাড়ন্ত বহু বছর ধরে। কেন এ রোগ বাড়ছে এই অঞ্চলে? গবেষণায় পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য। গবেষকরা বলছেন, বাঙালির ডায়াবেটিস রোগের হার বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে ব্রিটিশদের নির্মম শোষণ। শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেই রোগটির বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী তারা।

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রিটিশদের নীতির কারণে অল্প সময়ের মধ্যে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতে ২৫টি বড় দুর্ভিক্ষ হয়েছে। এসব দুর্ভিক্ষের প্রভাবে এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে জিনগত পরিবর্তন এসেছে। শরীর একদিকে ক্ষুধাসহনশীল, অন্যদিকে ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে উঠেছে। বংশপরম্পরায় এ অঞ্চলের মানুষকে তার খেসারত দিতে হচ্ছে। 

বিশ্বের সব দেশের মানুষই আক্রান্ত হয় ডায়াবেটিসে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয়– বিশেষ করে বাংলাদেশসহ ভারত ও পাকিস্তানে ডায়াবেটিস টাইপ টু রোগীর সংখ্যা বেশি। যা ইউরোপের তুলনায় ছয় গুণ বেশি। 

ডায়াবেটিস রোগটি এমন একবার শরীরে ধরা পড়লে পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হয়। প্রতিদিন ইনসুলিন নিতে হয়, জীবনধারায় আনতে হয় পরিবর্তন, মেনে চলতে হয় নানা নিয়মকানুন- এরপরও রোগটি সঙ্গী হয়েই থেকে যায়।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্যমতে, বাংলাদেশে ২০০০ সালে ২০-৭৯ বছর বয়সি ডায়াবেটিস রোগী ছিলেন ৮৩ হাজার ৭৯৭ জন। ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৭ হাজার ৭০৮ জনে। ২০২১ সালে এই সংখ্যা উন্নীত হয় ১ লাখ ৫ হাজার ২৫৭ জনে। অর্থাৎ ১০ বছরের ব্যবধানে ডায়াবেটিস রোগী বেড়েছে ১৭ হাজার ৫৪৯ জন। ২০৪০ সালে দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দাঁড়াতে পারে প্রায় দেড় লাখে।

এ প্রসঙ্গে ডা. লেনিন চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘যেহেতু এটি প্রতিকার করা সম্ভব নয়, সেহেতু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়াও সরকারিভাবে আলাদা উদ্যোগ নিতে হবে।’

শিশু মাহিনের মতো হাজার পরিবার ডায়াবেটিস নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। আর এই দুশ্চিন্তার ইতিহাসও বহু পুরোনো। যুগ যুগ ধরে এ রোগ টিকে আছে বংশপরম্পরায়। কিন্তু কেন? আর কত? এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে ১৬৫ বছর পেছনের দিকে ফিরে তাকিয়ে গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন এই অভিশপ্ত রোগের ইতিবৃত্ত। যে ইতিবৃত্ত সৃষ্টি হয়েছে অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ আর নিপীড়নের ফলে। 

ব্রিটিশ শাসনের কালো অধ্যায়

ইতিহাস সাক্ষী দেয়, ভারতে ব্রিটিশ শাসন চলেছে ১৯০ বছর। ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত চলেছে ব্রিটিশ কোম্পানির শাসন, ব্রিটিশ সরকার বা ব্রিটিশ রাজ সরাসরি শাসন করেছে ৮৯ বছর (১৮৫৮-১৯৪৭ সাল)। এই ৮৯ বছরে ভারতে ২৫টি বড় দুর্ভিক্ষ হয়। এসব দুর্ভিক্ষে অন্তত ছয় কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। অথচ ব্রিটিশ শাসনের আগের দুই হাজার বছরের ইতিহাসে ভারতে বড় দুর্ভিক্ষের সংখ্যা মাত্রটি ১৭টি।

ব্রিটিশরা আসার আগে থেকেই অবশ্য ভারতে খরা সমস্যা ছিল। কিন্তু ব্রিটেনের নীতি এ পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তোলে। ব্রিটিশদের উচ্চভূমি কর, প্রজাদের ব্যয় সক্ষমতা হ্রাস, দেশে তৈরি খাদ্য ব্রিটেনে রপ্তানি নীতি– ভারতের অবস্থাকে দুর্বিষহ করে তোলে। ব্রিটিশ আমলের শেষদিকে ১৯৪৩ সালে বাংলার ভয়াবহ মন্বন্তরে ৩০ লাখের বেশি মানুষ না খেতে পেরে মারা যায়। 

ব্রিটিশ সরকার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৪০-১৯৪৫ সাল) ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ নিত্যপণ্য রপ্তানি করতে থাকে। ফলে এখানে ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ব্রিটিশ আমলে দক্ষিণ এশিয়ায় বড় বড় দুর্ভিক্ষ হওয়ায় স্থানীয় মানুষের জিন ক্ষুধাসহনশীল বা স্টারভেশন অ্যাডাপটেশন হয়ে উঠেছে। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিস ও অন্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। 

স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলে, মানুষের জিনোম সিকোয়েন্স কীভাবে কাজ করবে, সেটিকে প্রভাবিত করে আচরণ ও পরিবেশ; চিকিৎসাবিজ্ঞানে যেটিকে বলে এপিজেনেটিক। চাইলে এপিজেনেটিক পরিবর্তন ঠেকানো যায়। এতে ডিএনএ সিকোয়েন্স পাল্টায় না। তবে এতে ডিএনএ সিকোয়েন্স কীভাবে হিসাব করা হচ্ছে, সে প্রক্রিয়ায় হেরফের ঘটাতে পারে। এই ধারা নীরবে বংশপরম্পরায় মানুষের শরীরে প্রবাহিত হয়। ভারতীয়দের শরীরে বর্তমানে চর্বি কীভাবে জমা হয় এবং তাদের শরীর কীভাবে চিনি বা শর্করা প্রক্রিয়াজাত করে, তার সঙ্গে ১০০ বছর আগের ব্রিটিশদের নিপীড়নমূলক নীতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। চিকিৎসাশাস্ত্রের এপিজেনেটিক এই ধারণাকে সমর্থন করে। 

গবেষণায় যা উঠে এসেছে

দক্ষিণ এশিয়ায় ২০০ কোটি মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার এত বেশি কেন, তা নিয়ে এত দিন মূলত জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসকে দায়ী করা হতো। এটি সত্য, ডায়াবেটিস হওয়ার পেছনে এসবের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার বেশি হওয়ার জন্য ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক নীতিরও বড় দায় আছে বলে গার্ডিয়ানের সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। 

এটি নিয়ে গবেষণা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ। ‘দ্য সাসেপটিবিলিটি অব সাউথ এশিয়ানস টু কার্ডিয়োমেটাবোলিক ডিজিস অ্যাজ আ রেজাল্ট অব স্টারভেশন অ্যাডাপটেশন এক্সসারব্যাটের ডিউরিং দ্য কলোনিয়াল ফেমিনস’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি ২০২২ সালে প্রকাশ পায়। ওই তিন গবেষক হলেন ড. মুবিন আই সৈয়দ, ফিরাজ ডীক ও আজিম শেখ। তিন গবেষকের প্রধান ৫৬ বছর বয়সি মুবিন আই সৈয়দ যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওতে কাজ করেন। এই রেডিওলজিস্ট রক্তনালী ও স্থূলতার ওষুধ নিয়ে কাজ করেন। তাদের গবেষণাকে ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি ও প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’।

গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে ব্রিটিশ আমলের একটি দুর্ভিক্ষের পর নতুন প্রজন্মের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দুর্ভিক্ষে পড়েছিল এমন মানুষের সন্তানদের রক্তে চিনির পরিমাণ দ্বিগুণ হওয়ার ঝুঁকি বেড়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জিন ক্ষুধাসহনশীল হওয়ায় তাদের শরীরের হরমোন ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে পড়েছে। অথচ হরমোন ইনসুলিন মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি খাদ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে শরীরে শক্তির জোগান দেয়। ইনসুলিন খাদ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে রক্তের চিনিকে সেলে পাঠায়। সেখান থেকে মানুষ শক্তি পায়। তাই মানুষের শরীর হরমোন ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে পড়লে, সোজা কথায় শরীরে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হলে খাদ্যকে প্রক্রিয়াজাত করে রক্তের চিনিকে সেলে প্রবেশ করানো সম্ভব হয় না। 

মানুষের শরীরে যে শক্তি তৈরি হয় তার একটা অংশ ব্যয় হয়ে যায়। বাকিটা জমা থাকে লিভার বা যকৃতে। প্রয়োজনে তা পরে ব্যবহার করা যায়। বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে আমরা যখন শক্তি ব্যয় করতে থাকি, তখন আমাদের রক্তের চিনি ও ইনসুলিন লেভেল কমতে থাকে। ইনসুলিন লেভেল কমলে আমাদের যকৃতে সংকেত যায়। ফলে সেখানে মজুদ থাকা বাড়তি শক্তি আমাদের তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয়। ফলে আমরা কয়েক ঘণ্টা না খেলেও শক্তি পাই। 

যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞের মতে, সুস্থ শরীর তথা যাদের পূর্বপুরুষ দুর্ভিক্ষে পড়েনি তাদের শরীর এভাবে কাজ করে। কিন্তু দুর্ভিক্ষের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের শরীরের জিন এখন এমনভাবে তৈরি হয়ে গেছে যে যতক্ষণ সম্ভব তারা শক্তি ধরে রাখতে পারে। কারণ দুর্ভিক্ষে তো দরকার হলেই খাবার পাওয়া যায় না। তাই তাদের শরীর পরবর্তী খাবার পাওয়া পর্যন্ত শক্তি ধরে রাখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। শরীর ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে উঠলে সেল ও মাংসপেশি রক্ত থেকে চিনি টেনে নিতে পারে না। ফলে রক্তের চিনি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যকৃতে জমা না হয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চর্বিতে পরিণত হয়। কারণ চর্বি দীর্ঘ অনাহারের সময় অল্প অল্প করে শক্তি সরবরাহ করতে পারে।

প্রতিবেদন বলছে, বর্তমানে যুগ বদলে গেছে। এখন চারদিকে বিপুল পরিমাণ প্রক্রিয়াজাত খাবার। প্রক্রিয়াজাত বা প্যাকেট খাবারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশে অতিরিক্ত চিনি দেওয়া থাকে। ফলে চলতি বিশ্বের খাদ্যসংস্কৃতি দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের বিরুদ্ধে চলে গেছে। একদিকে প্রক্রিয়াজাত খাবারে বাড়তি চিনি, অন্যদিকে বাড়তি চর্বির চিনিÑ এ পরিস্থিতির কারণে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও হৃদরোগ বাড়ছে। দীর্ঘ ইতিহাস ও বিদ্যমান পণ্যজাত খাবারের সংস্কৃতির ফলে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার গতি বদলানোর সহজ কোনো পথ নেই। তবে হ্যাঁ,Ñজীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনে বংশগত এ সমস্যায় ধীরে ধীরে পরিবর্তন আনা সম্ভব। তখন টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের ইতি টানা হয় এভাবে, দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জীবনাচার ও খাদ্যাভ্যাস প্রাচীন। তাদের এসব প্রাচীন অভ্যাস জটিল হলেও উন্নত। এই অঞ্চলে আয়ুর্বেদ, ইয়োগা ও ইউনানির মতো নানা চিকিৎসা ও শরীরচর্চার রীতি রয়েছে, যা পশ্চিমা বিশ্বে ছিল না। বর্তমানে সুস্থভাবে বাঁচতে হলে এসবে ফিরে যেতে হবে। চিকিৎসাসংক্রান্ত গবেষণাকে আরও বেশি বি-ঔপনিবেশিক করতে হবে।

বিশেষজ্ঞ মত

স্থূলতা, হৃদরোগ বা ডায়াবেটিস– এ অঞ্চলে এসব রোগী বেশি হওয়ার পেছনে যেমনি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, তেমনি শুধু এক পক্ষকেও দায় দিতে নারাজ লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। তার ভাষ্য, এই অঞ্চলে ব্রিটিশদের আগেও অনেকে উপনিবেশ গড়েছিল। ঠিক একই কায়দায় না হলেও শোষণ আর নিপীড়ন ছিল তাদের প্রধান হাতিয়ার। তা ছাড়া শুধু ডায়াবেটিস নিয়ে বলতে হলেও তার গবেষণা বলে, এই অঞ্চলে ধান চাষের পরিমাণ অন্য অঞ্চলের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে মানুষের মধ্যে অন্যান্য খাবারের চেয়ে ভাত খাওয়ার প্রবণতাও বেশি।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সমস্যা বহু পুরোনো হলেও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আপনি ১০০ বছর পেছনে যেতে ৫০ বছর পেছনে গেলেই দেখতে পাবেন– এসব প্রতিরোধে আমরা সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় কতটুকু উদ্যোগী হতে পেরেছি। কারও দায় এড়ানোর সুযোগ নেই।’

চিকিৎসাশাস্ত্রের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিসকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না– বাংলাদেশে এমন বহু মানুষ রয়েছে। শনাক্ত হওয়ার পরও চিকিৎসকের কাছে যেতে চান না অনেকে। গেলেও পরামর্শ মেনে চলেন না। আবার অনেকের আস্থা ভেষজ চিকিৎসায়। অনেকে জানেনও না, ডায়াবেটিসের চিকিৎসা আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। আগে সুই দিয়ে ইনজেকশন দিতে হতো, এখন পেনের মতো ডিভাইস দিয়েই তা সম্ভব। আবার ইনসুলিন বাজারে এসেছে, যা শরীরে খুব দ্রুত কাজ করে। তবে মানুষের শরীরের স্থূলতার সঙ্গে যেহেতু ডায়াবেটিসের সম্পর্ক রয়েছে, সেক্ষেত্রে যার শরীরের ওজন বেশি তার ঝুঁকি বেশি। তার ক্ষেত্রে ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তাও বেড়ে যায়। বর্তমানে এমন ইনজেকশন পাওয়া যায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তা ছাড়া খাওয়ার ইনসুলিন বড়ি বা ক্যাপসুলও বাণিজ্যিকভাবে পাওয়ার আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন চৌধুরী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ডায়াবেটিস সম্পর্কে অনেকের ধারণা পরিষ্কার নয়। এটি প্রতিরোধে করণীয় কতটুকু মান্য, তা-ও অনেকের অজানা। ডায়াবেটিস অসংক্রামক রোগ। এটা প্রতিরোধের জন্য চিন্তাভাবনা, জীবনাচরণ ও সর্বোপরি খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা