প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪৮ পিএম
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৪৮ পিএম
প্রবা ফটো
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি ৪৮.৪% রোগী মানসিক রোগী বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির মনোরোগবিদ্যা বিভাগ ৩৪৭ জন রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে তাদের মধ্যে ১৬৮ জন অর্থাৎ ৪৮.৪ শতাংশ রোগী কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ ও ৪৫ দশমিক ২ শতাংশ নারী।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিএসএমএমইউতে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে
গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
গবেষণায়
বলা হয়েছে, গত বছর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসটিকে উপলক্ষ করে বিশ্ববিদ্যালয়টির
মনোরোগবিদ্যা বিভাগের পক্ষ থেকে একটি গবেষণা চালানো হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন
ও সার্জারি অনুষদের ২৯টি বিভাগে ভর্তি রোগীদের মধ্যে মানসিক রোগের হার নিয়ে গবেষণা
করে দেখা হয়। সেখানে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে ভোগা রোগীদের মধ্যে ৩৩.৩
শতাংশের বয়স ৫১-৬৫ বছর এবং ১৯ শতাংশের বয়স ৩১-৪০ বছর।
গবেষণায়
আরও দেখা যায়, রোগীদের মধ্যে ১৭.৩ শতাংশ বিভিন্ন রকম মানসিক রোগের ওষুধ সেবন করছেন।
মেডিসিন ও সার্জারি অনুষদের অধিভুক্ত বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীদের মধ্যে যথাক্রমে
৫৫.৩ শতাংশ এবং ৩৯.৩ শতাংশ রোগীর বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা রয়েছে।
গবেষণায়
অন্তর্ভুক্ত জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক (৪৮.৪ শতাংশ) কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছেন
বলে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এদের মধ্যে ১.৭ শতাংশ রোগীকে মানসিক চিকিৎসার জন্য
অন্য বিভাগ থেকে মনোরোগবিদ্যা বিভাগে পাঠানো হয়। ৭.৮ শতাংশ রোগী তাদের রোগ সম্পর্কে
জানেন এবং ১৭.৩ শতাংশ রোগী বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগের ওষুধ খেয়ে আসছেন। মেডিসিন অনুষদের
বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীদের ৬৫ শতাংশের মধ্যে মানসিক রোগ শনাক্ত করা গেছে। আর সার্জারি
অনুষদের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি রোগীদের মধ্যে মানসিক রোগীর হার ৩৫ শতাংশ প্রতিবেদনে
উল্লেখ করা হয়েছে।
গবেষণা
প্রতিবেদনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক
ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মনোরোগবিদ্যা বিভাগের এ গবেষণাটি সময়োপযোগী।
এ গবেষণার মাধ্যমে রোগীসহ রোগীর চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা সচেতন হবেন। চিকিৎসকরা হাসপাতালে
ভর্তিকৃত রোগীর সেবার মান আরও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনানুযায়ী দ্রুত অন্য বিভাগের চিকিৎসার
জন্য রেফারেল দেবেন। রেফারেলকৃত রোগীরা যাতে দ্রুত সেবা পায়, সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজর
দিতে হবে।
তিনি
আরও বলেন, ভালো থাকার জন্য দিন শেষে সবাই একটু হাসুন, অপরের হৃদয়ের সহানুভূতি নিজের
হৃদয় দিয়ে বুঝে পরিবারের সদস্যসহ সবার সঙ্গে আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলুন। আমাদের মনে
রাখতে হবে শরীর ও মন ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা করুন। মানসিক সুস্থতা ছাড়া
শারীরিক সুস্থতা সম্ভব না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহাজাবিন মোর্শেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা. এম এম এ সালাহউদ্দিন কাউসার বিপ্লব। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. দেবব্রত বণিক, প্রখ্যাত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুহিত কামাল, চর্মরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. হরষিত কুমার পালসহ মনোরোগবিদ্যা বিভাগের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।