প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ জুলাই ২০২৩ ১৮:০০ পিএম
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৩ ১৮:১৬ পিএম
খাদ্য ও পানীয়তে কৃত্রিম মিষ্টি কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি : সংগৃহীত
কৃত্রিম মিষ্টিজাত খাদ্য ও পানীয় থেকে ক্যানসার হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দুটি প্রতিষ্ঠানের সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে এই শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটির ভাষ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকলেও মূলকথা এক।
ডব্লিউএইচওর ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসারের (আইএআরসি) বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃত্রিম মিষ্টিজাত খাদ্য ও পানীয় থেকে ‘মানুষের ক্যানসার হওয়ার শঙ্কা’ রয়েছে।
ক্যানসারের শঙ্কা বোঝানোর জন্য আইএআরসির আরও দুটি ক্যাটাগরি রয়েছে। ক্যাটাগরি দুটি আরও শক্তিশালী। একটি ক্যাটাগরি ‘মানুষের ক্যানসার হওয়ার যথেষ্ট শঙ্কা’ রয়েছে। দ্বিতীয় ক্যাটাগরি কৃত্রিম মিষ্টিজাত খাদ্য ও পানীয় থেকে ‘মানুষের ক্যানসার হয়’। দ্বিতীয় ও শেষ ক্যাটাগরিটা ক্যানসার হওয়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।
ডব্লিউএইচওর আরেক প্রতিষ্ঠান ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনের খাদ্যে অতিরিক্ত জিনিস সংযোজনবিষয়ক জয়েন্ট এক্সপার্ট কমিটির প্রতিবেদনে কৃত্রিম মিষ্টিজাত পণ্য-দ্রব্য খাওয়া নিয়েও প্রায় একই ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি নিজের প্রতি কেজি ওজনের বিপরীতে দৈনিক সর্বোচ্চ ৪০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কৃত্রিম মিষ্টি খেলে কোনো সমস্যা নেই। এর বেশি হলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বা ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে।
দুই প্রতিবেদনের মধ্যে মূল পার্থক্য, আইএআরসির প্রতিবেদনে দৈনিক কী পরিমাণ কৃত্রিম মিষ্টিজাত খাদ্য বা পানীয় গ্রহণ করলে ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি হয়, তা উল্লেখ করা হয়নি। অন্যদিকে জয়েন্ট এক্সপার্ট কমিটির প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করা হয়েছে।
গার্ডিয়ান জানায়, ১৯৮০-এর দশক থেকে খাদ্যে কৃত্রিম মিষ্টি বা স্পার্টেম ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। স্পার্টেম চিনির চেয়ে ২০০ গুণ বেশি মিষ্টি। কম ক্যালোরির মিষ্টান্ন দ্রব্যে এটার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। কোল্ড ড্রিংকস, সুইংগাম, কেক, টুথপেস্ট থেকে শুরু করে দৈনন্দিন ব্যবহার করা হয় এমন বিপুল পণ্য-দ্রব্যে স্পার্টেম ব্যবহার করা হয়।
তবে উভয় প্রতিবেদনে সাধারণ সিদ্ধান্ত, কৃত্রিম মিষ্টিজাত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করলে যে ক্যানসার হয়, এ বিষয়ে তারা এখন পর্যন্ত ‘সীমিত প্রমাণ’ পেয়েছেন। অর্থাৎ এসব বিষয়ে আরও গবেষণা দরকার।
ডব্লিউএইচওর পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ড. ফ্রান্সেস্কো ব্রাঙ্কা বলেন, ’স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় না নিয়ে স্পার্টেম ব্যবহার করা হলে তা অবশ্যই উদ্বেগের। এটা নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা দরকার। তবে আমরা ভোক্তাদের স্পার্টেমযুক্ত খাদ্য খেতে বারণ করছি না। আমরা এ বিষয়ে কেবল সতর্ক হতে বলছি।’
লন্ডনের কুইন ম্যারি ইউনিভার্সিটির ওয়ার্ল্ড অ্যাকশন অন সল্ট, শুগার অ্যান্ড হেলথ বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হ্যারিয়েট বার্ট গার্ডিয়ানকে বলেন, ’খাদ্য ও পানীয়তে স্পার্টেম কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে ম্যানুফ্যাকচারারদের নতুন করে ভাবতে হবে। ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদন দুটিতে মূলত এই দিকটার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।’
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান