রাজবংশী রায়
প্রকাশ : ১২ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৩ এএম
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৬ এএম
রূপকথার সোনার ডিম পাড়া হাঁসের গল্প অনেকেরই জানা আছে। প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম দিত সেই হাঁস। কিন্তু তাতে খুশি ছিলেন না দরিদ্র কৃষক ও তার স্ত্রী। দ্রুত ধনী হওয়ার জন্যে হাঁসটিকে জবাই করে সেটার পেটের মধ্য থেকে সবগুলো সোনার ডিম বের করে ফেলার ফন্দি আঁটলেন তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্য, জবাই করে হাঁসটির পেটে কোনো ডিমই পেলেন না। মাঝখান থেকে প্রতিদিন একটি করে সোনার ডিম পাওয়ার সুযোগও হারালেন সেটির মৃত্যু হওয়ায়।
ওই রূপকথার মতোই ঘটনা ঘটেছে ঢাকা শিশু হাসপাতালে। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দরিদ্র, জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের চিকিৎসায় দেওয়া ১০ কোটি টাকা ব্যয় করতে গিয়ে একই কাণ্ড ঘটিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অর্থ বিভাগ ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছিল, প্রধানমন্ত্রীর ১০ কোটি টাকার এ অনুদান এফডিআর করে রাখা হবে। সেখান থেকে প্রতি বছর প্রাপ্ত মুনাফার টাকা ব্যয়ে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির মাধ্যমে হৃদরোগী শিশুদের জন্য মেডিকেল ডিভাইস ও যন্ত্রপাতি কেনা হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ জন শিশুর জন্যে এ ধরনের ডিভাইস প্রয়োজন হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এক বছর এ টাকা এফডিআর করে রাখাও হয়। কিন্তু পরে সবাইকে অন্ধকারে রেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরো টাকা ব্যয় করে যন্ত্রপাতি কিনেছেন। ক্রয় করা যন্ত্রপাতির পরিমাণ চাহিদার তুলনায় চার-পাঁচ গুণ বেশি। অথচ এগুলোর মেয়াদ আবার অব্যবহৃত অবস্থাতেই আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে! অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের পুরো টাকাই জলে যাবে। অথচ টাকাটি এফডিআর করে রাখলেই এরকম হতো না। বরং প্রতি বছর সেখান থেকে পাওয়া মুনাফা দিয়েই এ ধরনের শিশুদের প্রতি বছরের চিকিৎসা ব্যয় মেটানো যেত।
নেপথ্যে কমিশন!
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ঠিকাদারের কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমিশন পাওয়া যায়- এটি ওপেন সিক্রেট। সে হিসাবে ১০ কোটি টাকার কেনাকাটায় প্রায় দুই কোটি টাকা সংশ্লিষ্টদের পকেটে গেছে। কিন্তু যে ক্ষতি হয়েছে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী। অভিযোগ, কমিশনের লোভে পড়ে হাসপাতাল পরিচালক, উপপরিচালক (অর্থ) এবং আরও কয়েকজন কর্মকর্তা ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে এই ভয়ংকর অমানবিক হৃদয়বিদারক বাণিজ্য করেছেন। জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের এই টাকা ব্যবহার করা যেত বছরের পর বছর। কিন্তু কতিপয় দুর্নীতিপরায়ণ, অপরিণামদর্শী ক্ষমতাধর ব্যক্তি তার পুরোটাই নয়ছয় করে ফেলেছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ প্রক্রিয়ায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্মগত দরিদ্র শিশু হৃদরোগীদের চিকিৎসার জন্যে ১০ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয়। তিন দিন পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তখনকার সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকার চেক শিশু হাসপাতালের পরিচালকের কাছে হস্তান্তর করেন। অনুদানের ১০ কোটি টাকার ব্যয় পরিকল্পনা করার উদ্দেশে ২০২১ সালের ৬ মার্চ পাঁচ সদস্যের একটি সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি এবং ২২ মার্চ পাঁচ সদস্যের আরেকটি নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। শিশু হৃদরোগীদের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সংরক্ষণ ও বণ্টন ব্যবস্থা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এই দুই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন (পিপিএ) -২০০৬ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর)-২০০৮-এর অধীনে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করে যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এসব যন্ত্রপাতি কেনার লক্ষ্যে ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল একটি বিনির্দেশ কমিটি গঠন করা হয়। ওই বছরের ১১ মে ঢাকা শিশু হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ কোটি টাকা যেকোনো তফসিলি ব্যাংকে রেখে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিনিয়োগ থেকে প্রতিবছর অর্জিত মুনাফায় দরিদ্র জন্মগত শিশু হৃদরোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদানের লক্ষ্যে যন্ত্রপাতি কেনা হবে। সে অনুযায়ী ২০২১ সালের ৯ জুন কৃষি ব্যাংকের শ্যামলী শাখা ওই ১০ কোটি টাকা ৬ দশমিক ১ শতাংশ সুদে এক বছর মেয়াদে এফডিআর করা হয়।
টেন্ডার কার্যক্রমে যা ঘটেছিল
এর মধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির আওতায় যন্ত্রপাতি ক্রয়ের লক্ষ্যে ওই বছরের ২৮ জুলাই তিনটি দৈনিক পত্রিকায় টেন্ডার নোটিস আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেয়। এতে আটটি দরপত্র জমা পড়ে। কিন্তু দরপত্র আহ্বানে ত্রুটি ধরা পড়ে। এ কারণে কমিটি নোটিস থেকে শুরু করে দরপত্র দলিল প্রস্তুতসহ সব প্রক্রিয়া নতুনভাবে সম্পন্ন করে দরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করে। সে অনুযায়ী ২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুটি জাতীয় দৈনিকে দুটি লটে দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে সাতটি দরপত্র জমা পড়ে। এ সংক্রান্ত কমিটি ২০ অক্টোবর প্রথম লটের জন্য এম/এস স্পেস মেড এন্টারপ্রাইজ এবং দ্বিতীয় লটের জন্য এম/এস দ্য স্পন্দন লিমিটেডের পক্ষে কার্যাদেশ প্রদানের সুপারিশ করে। প্রতিষ্ঠান দুটিকে ২৭ অক্টোবর ‘নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠান দুটি পারফরমেন্স সিকিউরিটি মানি ও কন্ট্রাক্ট সাইনিং না করায় কার্যাদেশের শর্ত ভঙ্গ হয়।
পরে ২২ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠান দুটি ‘অনিবার্য কারণের’ কথা জানিয়ে পারফরমেন্স সিকিউরিটি মানি জমা দেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহের সময় চেয়ে পরিচালক বরাবর আবেদন করে। পরদিন ২৩ ডিসেম্বর পরিচালক পিপিএ-২০০৬ এবং পিপিএ-২০০৮-এর বিধান অনুযায়ী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে দরপত্রের সমস্ত নথি দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির কাছে পাঠান। ওই কমিটি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের লক্ষ্যে তিনটি সুপারিশ করে। এগুলো হলো- প্রথমত, ফ্রেমওয়ার্ক কন্ট্রাক্ট ছাড়া এককালীন যন্ত্রপাতি না কেনা। দ্বিতীয়ত, পিপিএ-২০০৮-এর বিধি-২৫(১) (গ) এবং আইটিটি ক্লোজ ৩৫.১ (সি) অনুযায়ী দরপত্র জামায়াত বাজেয়াপ্ত করা। তৃতীয়ত, বর্ণিত টেন্ডারের লট-১ এবং লট-২-এর জন্য একটি করে রেসপনসিভ দরদাতা থাকায় টেন্ডারটি পুনরায় আহ্বান করা।
এমন প্রেক্ষাপটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করে। ওই টেন্ডারের প্রথম লটে ৭ কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে কার্ডিয়াক মেকানিক্যাল ডিভাইস কেনার জন্যে মনোনীত করা হয় স্পেস মেড এন্টারপ্রাইজকে। দ্বিতীয় লটে এক কোটি ২৯ লাখ ২০ হাজার ২৫০ টাকা ব্যয়ে কার্ডিয়াক ডিসপোজেবল আইটেমের জন্য মনোনীত করা হয় দ্য স্পন্দন লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। গত বছরের ৬ জুলাই এ দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চুক্তি করে। পরদিন ৭ জুলাই তাদের অনুকূলে কার্যাদেশ প্রদান করে। দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ছয় মাসের মধ্যে যন্ত্রপাতি সরবরাহের শর্ত দেওয়া হয়।ওই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর যন্ত্রপাতি সরবরাহের বিল জমা দেয় প্রতিষ্ঠান দুটি। চার দিন পর ২১ সেপ্টেম্বর পুরো বিল পরিশোধ করা হয়।
কালো তালিকাভুক্ত করা হয়নি প্রতিষ্ঠান দুটিকে
অভিযোগ উঠেছে, পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহুল প্রচলিত ই-টেন্ডার না করে এনালগ প্রক্রিয়ায় টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন করে। প্রথম টেন্ডারের সময় এই প্রতিষ্ঠান দুইটি ‘নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড’ পেলেও পারফরমেন্স সিকিউরিটি মানি জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় টেন্ডার বাতিল করতে হয়েছিল। আইন অনুযায়ী ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দুটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার কথা। কিন্তু সেটি না করে পুনরায় আহ্বান করা টেন্ডারে ওই প্রতিষ্ঠান দুটিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তারা যন্ত্রপাতি সরবরাহের কার্যাদেশও পেয়ে যায়। অথচ অর্থ মন্ত্রণালয় ও হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ কোটি টাকা ব্যাংকে এফডিআর করার কথা। প্রতিবছর ওই এফডিআর থেকে প্রাপ্ত মুনাফার টাকা দিয়ে শিশুদের জন্মগত হৃদরোগের চিকিৎসা দেওয়ার কথা। আর এই যন্ত্রপাতি ক্রয় ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করার কথা। অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থাপনা বোর্ডকে অন্ধকারে রেখে পুরো ১০ কোটি টাকাই যন্ত্রপাতি ক্রয়ের পেছনে ব্যয় করে ফেলেছে।
কর্মকর্তারা যা বলছেন
এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বোর্ডের সিদ্ধান্ত ছাড়া কোনোকিছু করা হয় না। কেনাকাটা থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সবকিছুতেই বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের টাকা ব্যয়ে অর্থ বিভাগ ও বোর্ডের সিদ্ধান্ত তুলে ধরে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিচালক জানান, ১০ কোটি টাকা যখন দেওয়া হয় তিনি তখন পরিচালক ছিলেন না। গত বছরের ২০ জানুয়ারি তিনি পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এই যোগদানের দুই বছর আগে ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়। ওই টাকা দিয়ে কেনাকাটার বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তিনি শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন।’
ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ওই টাকা দিয়ে কেনাকাটা করার জন্যে তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে যন্ত্রপাতি ক্রয় করে ওই টাকা ব্যয় করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কে এ ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন বা এ সংক্রান্ত কোনো লিখিত পত্র আছে কি না, জানতে চাইলে উত্তরে পরিচালক বলেন, ‘লিখিত নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। ফোন করে কেউ একজন বলেছেন। কিন্তু তার নাম মনে করতে পারছি না।’
প্রথমবার যে দুটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পারফরমেন্স সিকিউরিটি মানি জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় টেন্ডার বাতিল হলো, সে দুটি পুনরায় কীভাবে টেন্ডারে অংশ নিল? -এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, ‘এটি আমি জানি না। এটি অন্যরা বলতে পারবে।’ সেই অন্যরা কারা- এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তৎকালীন সচিব ও বর্তমানে মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ কোটি টাকার চেক সাবেক পরিচালক সৈয়দ সফি আহমেদের কাছে হস্তান্তর করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের সঙ্গে প্রতিদিনের বাংলাদেশের কথা হয়েছে- এটি জানানোর পর পরিচালক বলেন, ‘মোবাইল ফোনে তো এত কথা বলা যায় না। একদিন আসেন, কথা বলব।’
কিন্তু পরিচালকের বক্তব্যের সঙ্গে কাগজপত্রে সংরক্ষিত তথ্যের মিল পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২১ সালের ৬ জুলাই বোর্ডের এক সভায় প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ কোটি টাকার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত আসে। এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের আসল ১০ কোটি টাকা ও মুনাফার যাবতীয় হিসাব রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে সংরক্ষণ নথিতে থাকবে এবং ওই রেজিস্ট্রারে উপ-পরিচালক (অর্থ) স্বাক্ষর ও পরিচালক প্রতিস্বাক্ষর করবেন। এ ছাড়া হিসাব শাখা উক্ত বিনিয়োগের (এফডিআর) মেয়াদ শেষে পুনর্বিনিয়োগের ব্যবস্থা নেবে। বিনিয়োগ বাবদ প্রাপ্ত মুনাফা থেকে পরবর্তী সময়ে সমন্বয়ের শর্তে চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ক্রয়ের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখা হবে।ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বোর্ড সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সহিদুল্লা। এ বিষয়ে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সহিদুল্লার মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বর্তমান পরিচালক দায়িত্বভার গ্রহণ করার কিছু আগে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ড গঠন করা হয়। এই বোর্ডের সদস্য হিসেবে তিনি (ডা. আজিজ) কখনও এ সংক্রান্ত এজেন্ডা সভায় উপস্থাপন হতে দেখেননি। সুতরাং বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুদানের ১০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে- এটি সঠিক নয়।
ডা. এমএ আজিজ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়েও একই সময়ে ১০ কোটি টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে অনুদান দেওয়া হয়েছিল। ওই প্রতিষ্ঠান টাকা এফডিআর করে রেখে সেখান থেকে প্রাপ্ত মুনাফার অর্থ দিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা কার্যক্রম নিশ্চিত করে যাচ্ছে। শিশু হাসপাতাল ব্যত্যয় ঘটালে এটি অনিয়ম বলা যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।
সার্বিক বিষয় তুলে ধরে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, বিষয়টি এমন হওয়ার কথা নয়। তিনি খোঁজ নিয়ে ঘটনাটি জানবেন। তিনি জানান, কোনো অব্যবস্থাপনা হয়ে থাকলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।