আইসিডিডিআর,বি’র গবেষণা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:০০ পিএম
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:০২ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ফর উইমেনস অ্যান্ড চিলড্রেনস হেলথ রিসার্চের এক গবেষণা বলছে, স্বাভাবিক প্রসবের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকের দুই গ্রাম ওরাল ডোজ গ্রহণ করলে মায়েদের মৃত্যুঝুঁকি ৩৩ শতাংশ হ্রাস পায়। গবেষণাকর্মটি সম্প্রতি নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে এ তথ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তারা ‘প্রসবের সময় অ্যাজিথ্রোমাইসিন প্রফিল্যাক্সিস ব্যবহার (এ-প্লাস)’ নামে একটি বহুদেশীয় গবেষণা পরিচালনা করেছেন। গবেষণাটি সাতটি দেশের ২৯ হাজার ২৭৮ জন প্রসূতি নারীর ওপর করা হয়। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, কঙ্গো, গুয়াতেমালা, ভারত, কেনিয়া, পাকিস্তান এবং জাম্বিয়া। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত প্রসূতিদের দুটি ভাগে বিভক্ত করে এই গবেষণা চালানো হয়। একটি গ্রুপকে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও অন্য গ্রুপকে প্লাসিবো (মূল ওষুধের মতই দেখতে, কিন্তু এতে স্টাডি ড্রাগের উপাদান থাকে না) দেওয়া হয়। প্লাসিবো গ্রুপের তুলনায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন গ্রুপে স্বাভাবিক প্রসবকালে মৃত্যুঝুঁকি ৩৩ শতাংশ কম দেখা যায়। এছাড়া অ্যাজিথ্রোমাইসিন গ্রহণকারী নারীদের মধ্যে এন্ডোমেট্রাইটিস (গর্ভের আস্তরণের সংক্রমণ), ক্ষত থেকে রোগ সংক্রমণ এবং প্রস্রাবের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার শংকাও কম দেখা যায়। অ্যাজিথ্রোমাইসিন গ্রহণকারী নারীরা প্লাসিবো গ্রুপের তুলনায় প্রসব পরবর্তী জটিলতা থেকে হাসপাতালে কম ভর্তি হয়েছেন এবং পাশাপাশি ডাক্তারের কাছেও অনির্ধারিত সময়ে কম দেখা করেছেন। গবেষণাটি চলাকালীন বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া ফলাফলের প্রভাব এতই বেশি ছিল যে, ট্রায়াল সাইটগুলির মধ্যে কঙ্গোতে সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী যেন সুফল পায় তা নিশ্চিত করতে নতুন করে নারীদের এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্তি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তবে গবেষণায় অ্যাজিথ্রোমাইসিন নবজাতকের মৃত্যুর ওপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে কিনা তা জানা যায়নি। গবেষকদলের বাংলাদেশ সাইটের সহ-নেতৃত্বে ছিলেন ইমেরিটাস বিজ্ঞানী ড. রাশিদুল হক এবং আইসিডিডিআর,বি-এর সহযোগী বিজ্ঞানী এসকে মাসুম বিল্লাহ এবং আমেরিকার ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. উইলিয়াম পেট্রি। ড. রাশিদুল হক জানান, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি তিনটি প্রসবের মধ্যে দুটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হয়। এ অবস্বায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে প্রসবের সময় দুই গ্রাম অ্যাজিথ্রোমাইসিনের একক ডোজ অনেকের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে। তিনি আশা করেন, স্বাস্থ্যসেবাদানকারী এবং নীতিনির্ধারকরা স্বাভাবিক প্রসবের সময় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।