× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হাসপাতালগুলোই যেন ‘অসুস্থ’

কুমিল্লা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৩ এএম

আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৪ এএম

নানা সংকটে ব্যাহত কুমিল্লার গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। প্রবা ফটো

নানা সংকটে ব্যাহত কুমিল্লার গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। প্রবা ফটো

কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন উপজেলা শিক্ষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস, মন্ত্রী-এমপি, সফল ব্যবসায়ী, সরকারি কর্তাব্যক্তিতে ভরপুর থাকলেও সঠিক পরিচর্যা, দিকনির্দেশনা, পর্যাপ্ত লোকবল ও সেবাহীন মানসিকতায় গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।

নির্মিত হাসপাতালগুলো ধুঁকছে নানা সংকটে। কোনোটির দরজা মাঝে-মধ্যে খোলা হয়, আবার কোনোটির চালু রয়েছে নামমাত্র বহির্বিভাগ। হাসপাতালগুলোর কোনোটিতেই আন্তঃবিভাগ চালু নেই, নেই পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা।

বরুড়ার সোনাইমুড়ি, নাঙ্গলকোটের গোহারুয়া, দাউদকান্দির শহীদনগরের ট্রমা সেন্টারসহ চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা দেখলে মনে হয়- হাসপালগুলো যেন নিজেই রোগী।

গ্রামীণ পর্যায়ে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কুমিল্লায় ২০ শয্যার ৩টি ও ১০ শয্যার ১টি হাসপাতাল রয়েছে। ২০ শয্যার হাসপাতালগুলো হচ্ছে- বরুড়া উপজেলার সোনাইমুড়ি, নাঙ্গলকোট উপজেলার গোহারুয়া, দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগরের ট্রমা সেন্টার। এ ছাড়া চৌদ্দগ্রামের ১০ শয্যার কালিকাপুর হাসপাতাল।

২০০৬ সালের ১৭ অক্টোবর উদ্বোধন করা হয় নাঙ্গলকোট উপজেলার গোহারুয়ায় ২০ শয্যার হাসপাতালটি। প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতালটি নির্মাণের প্রায় ১৭ বছরেও জনগণের তেমন কোনো কাজে আসছে না। ডাক্তার, নার্স এবং নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় হাসপাতাল আঙিনা এখন গোচারণভূমি। লতাপাতায় ঢেকে যাচ্ছে হাসপাতালের নয়টি ছোট-বড় ভবন। এখানে বহির্বিভাগে রোগী দেখা হয় সপ্তাহে এক-দুই দিন।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেবদাস দেব বলেন, হাসপাতালটিতে ১৩টি পদে ১৮ জন লোকবল থাকার কথা, সেখানে রয়েছে নয়জন। নয়জনের মধ্যে পাঁচজন আবার কাজ করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পদ পুরোপুরি খালি। এ অবস্থায় শুধু বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছে।

এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা সংকট আছে। হাসপাতালের চারপাশে সীমানা প্রাচীর করার জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে যোগাযোগ করেছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নির্বিঘ্ন হলে এবং জনবল সংকট দূর করা গেলে এখানে ইনডোর চালু করা সম্ভব হবে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি সেবা দিতে প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৬ সালে কুমিল্লার দাউদকান্দির শহীদনগরে ট্রমা সেন্টার নির্মাণ করা হয়। সেখানেও জনবল না থাকায় কার্যক্রম চলছে নামমাত্র। মাঝে-মধ্যে আউটডোরে রোগী দেখা হয়।

বরুড়ার সোনাইমুড়ি হাসপাতালটির কাজ ২০০২ সালে শুরু হয়। দেড় যুগে সেটি পূর্ণাঙ্গতা পায়নি। ২০০৫ ও ২০০৬ সালে এটি মামলা জটিলতায় পড়ে। তখন কাজ বন্ধ হয়ে যায়। মাঝে নামমাত্র বহির্বিভাগ চালু ছিল। বর্তমানে সেটিও নেই।

বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন, মামলার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আমরা হাসপাতালটির কাজ শেষ করার জন্য রিভাইজড শিডিউল পাঠিয়েছি। হাসপাতালের কাজ শেষ হলে চিকিৎসা শুরু হবে।

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তৌহিদ আল হাসান বলেন, যে উদ্দেশ্যে হাসপাতালটি চালু করা হয়েছে, তা বাস্তবায়িত হয়নি। আন্তঃবিভাগ চালুর জন্য এখানে লোকবলের অনুমোদনই দেওয়া হয়নি।

কালিকাপুর হাসপাতালে আন্তঃবিভাগ চালু করা হলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। বহির্বিভাগে মাত্র একজন ডাক্তার রোগী দেখেন। হাসপাতালটি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত। এটি কুমিল্লার পুরোনো হাসপাতালের মধ্যে অন্যতম।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, এই হাসপাতালে অনুমোদিত পদের বিপরীতে লোকবল নেই। দুইজন ডাক্তার ছিলেন, তাদের মধ্যে একজন দীর্ঘদিন ধরে ছুটিতে। এ অবস্থায় আন্তঃবিভাগ চালু করার সুযোগ নেই। আমরা ডিজি মহোদয়কে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছি।

কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রতিটি হাসপাতালে ১৩টি পদের বিপরীতে ১৮ জন জনবল নিয়োগ দিয়ে তাদের হাসপাতালে দুই বছর টানা দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিতে হবে। কারণ বিচ্ছিন্নভাবে নিয়োগে কেউ গ্রাম এলাকায় থাকতে চায় না।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. নিসর্গ মেরাজ চৌধুরী বলেন, শুধু চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতাল চালানো যায় না, এজন্য প্রয়োজনীয় সাপোর্ট স্টাফের প্রয়োজন হয়। জনবল সংকটের কারণে আমরা গোহারুয়া ও শহীদনগরসহ অন্য হাসপাতালগুলো পুরোপুরি চালু করতে পারছি না। মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করলে পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করতে পারব।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা