× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল : জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা তলানিতে

হবিগঞ্জ প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:১৯ এএম

আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:২১ এএম

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল : জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা তলানিতে

তীব্র জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা তলানিতে পৌঁছেছে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি সরঞ্জামের অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লাখো সেবাপ্রত্যাশী।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালটিতে পুরোনো ও জরাজীর্ণ যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়। জেলার একমাত্র হাসপাতালটির এই ভগ্নদশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। এর মধ্যেই আবার হাসপাতালটিতে রয়েছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও দালালদের দৌরাত্ম্য। 

হাসপাতালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আউটডোরে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ এবং ইনডোরে ৩০০ থেকে ৪০০ রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে ৫৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও রয়েছে মাত্র ২৫ জন। এগুলোর মধ্যে মেডিসিন, গাইনি, নাক-কান-গলা বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্টের পদ ফাঁকা রয়েছে। ফাঁকা রয়েছে কার্ডিওলজি, ইউরোলজি, সার্জারি, শিশু চর্ম ও যৌন, চক্ষু বিভাগের সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালট্যান্টের পদও। 

এ ছাড়া অ্যানেসথেটিস্ট ৪টি পদের মধ্যে ৩টি; রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রারের ৯টি পদের মধ্যে ৬টিই শূন্য। শূন্য রয়েছে ৩টি মেডিকেল কর্মকর্তার পদও। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় এক রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দিচ্ছে অন্য রোগের। ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। 

হাসপাতালে রেডিওলজিস্টের একটি পদ থাকলেও সেটিও ফাঁকা। হাসপাতালে নার্সসহ দ্বিতীয় শ্রেণির ১৬৪টি পদের মধ্যে লোকবল আছে ১৪৯। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৯৫টি পদের মধ্যে শূন্য ৩৬টি। মেডিকেল ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্ট, রেডিওগ্রাফি, ব্লাডব্যাংকসহ হিসাবরক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদও শূন্য। 

শুধু লোকবল নয়, সংকট রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জামেরও। পুরোনো ও জরাজীর্ণ যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগ নির্ণয়। একটি ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন দিয়ে চলছে কাজ। এ ছাড়া তিনটি আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনের মধ্যে দুটি বিকল থাকায় পরীক্ষার রিপোর্ট সময়মতো দেওয়া সম্ভব হয় না। রয়েছে ওষুধ সংকটও।

ফলে রোগীদের অধিকাংশই পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নির্ভর করতে হয় বিভিন্ন প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর। সরকারি হাসপাতালের চেয়ে সেখানে কয়েক গুণ বেশি টাকা খরচ করতে হয়, যা অধিকাংশ গরির ও দুস্থ রোগীদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে তাদের থেকে যেতে হচ্ছে চিকিৎসার বাইরেই।

যারা কর্মরত আছেন, তাদের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ। চিকিৎসকরা হাসপাতালে দায়িত্ব পালন না করে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকেন। আবার ভর্তিকৃত গরিব রোগীরা পাচ্ছেন না বিনামূল্যে সরকারি ওষুধ। এ ছাড়া বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ না থাকায় চরম কষ্টে ও বিপাকে পড়তে হয় রোগী ও স্বজনদের। বিভিন্ন বিভাগে পর্যাপ্ত বেড না থাকায় মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। এর মধ্যেই রয়েছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি ও দালালদের দৌরাত্ম্য। ফলে নানা প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন হাসপাতালের সেবাপ্রত্যাশীরা। 

সম্প্রতি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন পৌর এলাকার নাসির মিয়া, সালমা খাতুন, জারু মিয়া, গোপেশ মোদক। তারা জানান, ডাক্তাররা সময়মতো রোগী না দেখে প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে ব্যস্ত থাকেন। ফলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও সেবা পাচ্ছেন না তারা।

বানিয়াচং উপজেলার চানপুর গ্রামের মাহফুজ চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি জানান, বেশিরভাগ ওষুধ বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনে আনতে হয়। সেবার মানও তেমন ভালো না।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আমিনুল হক সরকার জনবল ও যন্ত্রপাতিসহ সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘প্রয়োজনীয় লোকবল ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। জনবল সংকটের বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা