প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:২৫ পিএম
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ২১:১৩ পিএম
বুধবার রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধে সেমিনার ও সচেতনতামূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। প্রবা ফটো
দেশে ক্যানসারে নারী মৃত্যুর মধ্যে জরায়ুমুখ
ক্যানসার দ্বিতীয় প্রধান কারণ। প্রতিবছর দেশে ১১ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে মারা যান। এ ছাড়া পাঁচ কোটির বেশি নারী এই ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। ৯ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত সব সুস্থ নারীকে ভ্যাকসিন দেওয়া হলে দেশে জরায়ুমুখের
ক্যানসার নির্মূলের পথ অনেকটা এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
দেশব্যাপী চলছে জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধের
মাস। এর কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ইনসেপ্টার সহযোগিতায় আনোয়ার খান মডার্ন
মেডিকেল কলেজে জরায়ুমুখে ক্যানসার প্রতিরোধে সেমিনারে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে
ক্যানসার প্রতিরোধে শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা র্যালিতে অংশ নেন। র্যালি শেষে
আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গণটিকা কর্মসূচির আওতায় জরায়ুমুখের ক্যানসারপ্রতিরোধী ‘প্যাপিলোভ্যাক্স’ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. এখলাসুর রহমান, ভাইস প্রিন্সিপাল অধ্যাপক
ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী, গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের প্রধান ডা. শেহরিন এফ
সিদ্দিকা, অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম আরিফ, অধ্যাপক ডা.
এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. জাকিয়া
শহীদ ও অধ্যাপক ডা. মৌসুমী সেন।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাল্যবিয়ে ও অল্প বয়সে মা
হওয়াসহ ঘন ঘন সন্তান ধারণ জরায়ুমুখের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। এ ক্যানসারের
ভাইরাস দীর্ঘ সময় সুপ্ত অবস্থায় থাকে। ফলে নারীর রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে
ক্যানসারটি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য বাল্যবিবাহ রোধ করা সবার আগে
প্রয়োজন। একই সঙ্গে সবাইকে ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনতে হবে। একে সহজলভ্য করে
প্রান্তিকের নারীদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।
সেমিনারে ডা. শেহরিন এফ সিদ্দিকা বলেন, ‘জরায়ুমুখের
ক্যানসার নারী মৃত্যুর অন্যতম কারণ। সময় এসেছে এই মৃত্যু প্রতিরোধের। এজন্য
সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গণসচেতনতা তৈরি ও স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা সবার কাছে নিয়ে
যাওয়া। ৯ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত মেয়েদের সচেতন করা গেলে ও সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন
নিশ্চিত করা গেলে শত বছরের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা
সম্ভব হবে।’
জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান
অধ্যাপক পারভীন শাহীনা রহমান বলেন, ‘আগে
সার্জিক্যাল ট্রিটমেন্ট ছিল। এখন ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি
যোগ হয়েছে। তবে জরায়ুমুখে ক্যানসারের প্রাথমিক চিকিৎসায় টেস্টের সংখ্যা বাড়ছে না।
একদম শেষ পর্যায়ে রোগীরা আসছেন। এর প্রধান কারণ অসেচতনতা ও এ সম্পর্কে জানার অভাব।’
হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘ক্যানসার আক্রমণ করে না এমন কোনো জায়গা নেই। তবে একমাত্র জরায়ু ক্যানসারই সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব। সামান্য খেয়াল করলেই এ ক্যানসার থেকে নারীরা রক্ষা পেতে পারে।’