× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুই ডাক্তারের কাঁধে পুরো হাসপাতাল

লামা-আলীকদম (বান্দরবান) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫ ১৯:১৩ পিএম

আপডেট : ২১ মে ২০২৫ ১৯:১৫ পিএম

দুই ডাক্তারের কাঁধে পুরো হাসপাতাল

বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডাক্তার, নার্স, ওষুধের চরম সংকটে ভুগছে। প্রায় দুই লাখ মানুষের ভরসাস্থল এই ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি। কিন্তু এতে সেবা দিতে রয়েছে ২ জন চিকিৎসক। বহু সমস্যায় জর্জরিত হাসপাতালটি দেখার যেন কেউ নেই। 

লামা হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ডাক্তার ফরহাদ উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ২৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। আন্তঃবিভাগে গড়ে ৮৫ জন ভর্তি থাকে। এদিকে বিদ্যুৎ সমস্যায় সবসময় পানির ঘাটতি দেখা দেয়, ওষুধ সংকট, অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট, ল্যাবের পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি নষ্ট ও স্টাফ সংকট চরমে। তারপরও দুজন চিকিৎসক মিলে সাধ্যমতো আমরা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ অন্যদিকে রোগী ও স্বজনরা বলছেন এভাবেই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে লামা হাসপাতাল চলছে। তারা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না।

জানা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসক পদ আছে ২২টি। কিন্তু দুজন চিকিৎসক রয়েছে হাসপাতালে। অন্যদিকে ৩২ জন নার্স থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৮ জন। এ ছাড়া ৬ জন কনসালট্যান্ট ও ১২ জন মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে। উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের ৪টি পদের মধ্যে ১ জন কর্মরত থাকলেও তিনি আগামী ১৯ মে হজ পালনে যাচ্ছেন।

চরম ডাক্তার সংকটের মধ্যে গত ৫ মে মেকি মার্মা নামে একজন চিকিৎসক হাসপাতালে যোগ দিলেও তিনি বান্দরবান জেলা পরিষদের সুপারিশে ডেপুটেশনে বান্দরবান সদর হাসপাতালে বসবেন। ফলে হাসপাতালে আসা রোগীরা নূন্যতম চিকিৎসাসেবা পাওয়া থেকে আরও বঞ্চিত হবেন। 

লামার রূপসীপাড়া থেকে আসা ডায়রিয়া রোগী মনির হোসেন, গজালিয়া বড়পাড়া থেকে আসা উচিমং মার্মা, বাজার পাড়ার নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু তাবাচ্ছুমের অভিভাবক জানান, তিন দিন ধরে হাসপাতালে পানি নেই। অ্যাম্বুলেন্স বেহাল। দুটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি এক যুগ ধরে অচল, অন্যটি প্রায় ব্যবহারের অযোগ্য অবস্থায় পৌঁছেছে। এ ছাড়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার দুর্বলতায় সাম্প্রতিক বন্যায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফি, ইসিজি, অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিনসহ ল্যাবের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে অনেক রোগী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছেন না।

লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা, সাতটি ইউনিয়ন, আলীকদম উপজেলা চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন ও চকরিয়া উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দারা এই হাসপাতালের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে হাসপাতাল থাকলেও পর্যাপ্ত ওষুধ, ডাক্তার ও নার্সের অভাবে দরিদ্র ও অসহায় রোগীরা চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। 

ফলে অনেক রোগী বাধ্য হয়ে পাশের চকরিয়া উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে ছোটেন। এতে তাদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকেই সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শোভন দত্ত বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালটি চরম জনবল সংকটে ভুগছে। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা. শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘আমি কিছুদিন হলো এখানে যোগ দিয়েছি। লামা হাসপাতালের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা