× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তরুণদের মধ্যে হৃদরোগের পরিমাণ বাড়ছে

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৫৩ পিএম

প্রবা ফটো

প্রবা ফটো

দেশে তরুণ বয়সী মানুষের মধ্যে হৃদরোগের পরিমাণ বাড়ছে। এতে অনেকেই অকালে মারা যাচ্ছে। এজন্য মূলত অধিক পরিমাণে তেল খাওয়াকে দায়ী করেছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, ৪-৫ জনের একটি পরিবারে মাসে ৫ থেকে ৮ লিটার পর্যন্ত তেল খাওয়া হচ্ছে। এসব তেলে নেই ভিটামিন এ ও ডি। তাই রোগমুক্ত সুস্থ প্রজন্ম গড়ে তুলতে ভিটামিনসমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা ছাড়া ড্রামে খোলা ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ একটি বড় বাধা। একইসঙ্গে ভোজ্যতেলে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধকরণ ও গুণগত প্যাকেজিংও অত্যন্ত জরুরি।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর বাংলা মোটরে বিআইপি রুমে “সবার জন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ নিরাপদ ভোজ্যতেল: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়’’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রিন্ট, টেলিভিশন এবং অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৬ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর উপপরিচালক (সিএম) এস এম আবু সাঈদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, কনসালটেন্ট ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথের অ্যাসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট আবু আহমেদ শামীম, বাংলাদেশ ফার্স্ট পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোর্শেদ নোমান ও প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন কান্ট্রি এডভোকেসি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. রীনা রাণী পাল এবং প্রজ্ঞার কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার।

জাতীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট জরিপ ২০১১-১২ উল্লেখ করে ডা. রীনা রাণী পাল তার উপস্থাপনায় বলেন, , প্রাক-বিদ্যালয়গামী প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন ভিটামিন ‘এ’ এবং দুইজন শিশু ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভুগছে। ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ সমৃদ্ধকরণ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী- ভিটামিন এ সমৃদ্ধকরণ ব্যতীত ভোজ্যতেল বাজারজাত করা নিষিদ্ধ।

আইসিডিডিআরবির গবেষণা তুলে ধরে জানান, বাজারে মোট ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামে বিক্রি হয়। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ তেলে কোনো ভিটামিন এ নেই, আর ৩৪ শতাংশ তেলে রয়েছে প্রয়োজনের চেয়ে কম মাত্রায়। মাত্র ৭ শতাংশ ড্রামের খোলা তেলে আইন অনুসারে ভিটামিন এ-এর নির্ধারিত পরিমাণ পাওয়া গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ আইনটির সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, নন-ফুড গ্রেড উপকরণে তৈরি ড্রাম দিয়ে ভোজ্যতেল পরিবহন করা হয়; যেগুলো আগে কেমিক্যাল, লুব্রিকেন্ট/মবিল বা অন্যান্য শিল্পপণ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে। এ ধরনের ড্রামে সংরক্ষিত খোলা ভোজ্যতেল জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, পাশাপাশি এতে ভেজাল মেশানোর আশঙ্কাও থাকে। এই পুরোনো ড্রামগুলোতে কোনো লেবেল বা উৎস সম্পর্কিত তথ্য না থাকায় তেলের উৎপত্তিস্থল বা সরবরাহকারীকে শনাক্ত করা যায় না। তাই খোলা ড্রামে ভোজ্যতেল বাজারজাতকরণ আইন বাস্তবায়নে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই ২০২২ এর পর থেকে ড্রামে খোলা সয়াবিন তেল এবং ডিসেম্বরের পর থেকে খোলা পাম তেল বাজারজাতকরণ বন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। তাই নিরাপদ ভোজ্যতেল ভোক্তার হাতে পৌঁছাতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।

ভিটামিন এ-এর ঘাটতি অন্ধত্ব, গর্ভকালীন মাতৃমৃত্যুসহ নানা শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। অন্যদিকে, ভিটামিন ‘ডি’-এর অভাব রিকেটস ও হাড় ক্ষয়ের পাশাপাশি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মতো অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এ প্রেক্ষাপটে, ভোজ্যতেলে ভিটামিন এ ও ডি সমৃদ্ধকরণ একটি সাশ্রয়ী ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের খাবারের মাধ্যমে সহজেই এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন পেতে পারে।

কর্মশালায় ভোজ্যতেলে গুণগতমানের প্যাকেজিং নিশ্চিতের উপরও জোর দেওয়া হয়। সাধারণত সূর্যরশ্মিসহ যেকোন আলোর সংস্পর্শে ভিটামিন এ নষ্ট হতে থাকে এবং একপর্যায়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। ভোজ্যতেল বাজারজাত হয় যেসব বোতলে সেগুলোর অধিকাংশই আলো প্রতিরোধী না হওয়ায় ভোজ্যতেলের গুণগত ও পুষ্টিমান হ্রাস পায়। সে কারণে ভোজ্যতেলের প্যাকেজিংয়ের জন্য আলো প্রতিরোধী অস্বচ্ছ উপাদান ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, খোলা তেল বিক্রি বন্ধ করতে হবে। কেননা ব্যবসায়ীরা ভোক্তাকে সন্তুষ্ট করতে তেলের গুণাগুণ নষ্ট করে ফেলছেন। বিদেশি তেলের রং গাঢ় বাদামি হলেও আমাদের দেশে তা সাদা করা হচ্ছে।

এস এম আবু সাঈদ বলেন, প্রতি মাসে ২০০ স্যাম্পল কিনে বিএসটিআই। তাতে দেখা গেছে, বোতলজাত তেলে ৯৭ শতাংশ পাস করে। তেলে ভিটামিন এ যুক্ত করার আইন ২০১৩ সালে ও ২০১৫ সালে প্রবিধান তৈরি হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

মোরশেদ নোমান বলেন, গণমাধ্যমে সাপ্তাহিক বাজার দরের রিপোর্টে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের স্বাস্থ্যবিষয়ক পরিস্থিতি তুলে ধরতে পারে।

মুশতাক মুহ. ইফতেখার বলেন, এক লিটার সয়াবিন তেলে ভিটামিন এ সমৃদ্ধিকরণে ব্যয় আগে ৩৫ পয়সা ছিল, বর্তমানে ৫৭ পয়সায় উন্নীত হয়েছে।

হাসান শাহরিয়ার বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগ এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনতে সরকার বদ্ধ পরিকর। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা