প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১২ পিএম
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৪ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক না হলে দাম্পত্য জীবনে কি কোনো সমস্যা হয়? সাধারণত এটি বড় কোনো ইস্যু নয়, তবে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপের পার্থক্য কিছু জটিলতা তৈরি করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কীভাবে রক্তের গ্রুপ প্রভাব ফেলে?
মানুষের রক্তের গ্রুপ সাধারণত চারটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত—A, B, AB ও O। এর সঙ্গে Rh ফ্যাক্টর (পজিটিভ বা নেগেটিভ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিশেষ করে স্বামী Rh+ এবং স্ত্রী Rh- হলে গর্ভাবস্থায় কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হলো Rh ইনকমপ্যাটিবিলিটি। এটি একটি শারীরিক সমস্যা, যেখানে মায়ের শরীরের ইমিউন সিস্টেম শিশুর রক্তকে শত্রু হিসেবে গণ্য করতে পারে এবং অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে, যা ভবিষ্যতে গর্ভধারণের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
সমস্যাগুলো কী হতে পারে?
প্রথম সন্তান সাধারণত নিরাপদ: প্রথমবার গর্ভধারণের সময় সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না, কারণ তখন মায়ের শরীরে খুব বেশি অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না।
দ্বিতীয় বা পরবর্তী গর্ভধারণ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে: একবার অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেলে, ভবিষ্যতে এটি নবজাতকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে, এমনকি গর্ভপাত বা নবজাতকের মৃত্যুও ঘটতে পারে।
নবজাতকের রক্তস্বল্পতা বা জন্ডিস হতে পারে: যদি Rh ইনকমপ্যাটিবিলিটি ঘটে, তাহলে নবজাতকের রক্তে অক্সিজেন পরিবহন কমে যেতে পারে, যার ফলে শিশুর শরীরে তীব্র জন্ডিস, রক্তস্বল্পতা এবং বিভিন্ন জন্মগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সমাধান কী?
Rh- স্ত্রীদের জন্য অ্যান্টি-ডি ইনজেকশন: প্রথম সন্তানের জন্মের পর বা গর্ভাবস্থার নির্দিষ্ট সময়ে অ্যান্টি-ডি ইমিউনোগ্লোবুলিন ইনজেকশন নেওয়া হলে পরবর্তী গর্ভধারণ ঝুঁকিমুক্ত হতে পারে।
গর্ভধারণের আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা: গর্ভধারণের পরিকল্পনা করার আগে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো।
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: গর্ভাবস্থায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত।
বাংলাদেশে সচেতনতা বাড়ছে
বাংলাদেশে এখন অনেক দম্পতি গর্ভধারণের আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করাচ্ছেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলছেন, সচেতন হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা নিলে স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপের পার্থক্য কোনো সমস্যাই নয়।
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ মিল না হলেও দাম্পত্য জীবনে কোনো সমস্যা হয় না। তবে গর্ভধারণের সময় Rh ইনকমপ্যাটিবিলিটি হলে কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে, যা সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই বিয়ের পর বা গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো পথ।