সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৩০ পিএম
আপডেট : ২৭ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৫৩ পিএম
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে গত তিন দিনে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ২৬০ জন শিশু-কিশোর। ছবি : প্রবা
সুনামগঞ্জে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছেই। ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোররা। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে গত তিন দিনে ২৬০ জন শিশু-কিশোর ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে এক বছর বয়সি ৪২ জন এবং ১৪ বছর বয়সি ২১৮ জন।
অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকরা বলছেন, শীতে সবসময়ই ঝুঁকিতে থাকে শিশুরা। শীত থেকে রক্ষা পেতে গরম কাপড় ব্যবহার করা জরুরি। ঠান্ডা লাগলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
রবিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। বেডে জায়গা না পেয়ে অনেকে মেঝে ও ওয়ার্ডের বাইরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক বেড শেয়ার করছেন তিন-চারজন রোগী। অতিরিক্ত রোগীর চাপে দুর্গন্ধযুক্ত-অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি হয়েছে দুই শিশু ওয়ার্ডেই।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশু ওয়ার্ড আছে দুটি। দুই ওয়ার্ডে বেড রয়েছে ৮০টি। গত তিন দিনে এক বছর বয়সি ওয়ার্ডে (নিওনেটাল ওয়ার্ড) ৪২ জন এবং ১৪ বছর বয়সী ওয়ার্ডে ২১৮ জন ভর্তি হয়েছে। এরা সবাই নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত।
সুনামগঞ্জের বনগাঁও থেকে শিশু রাসেলকে নিয়ে আসা অভিভাবক রাবেয়া খাতুন বলেন, এক বছরের ছেলেকে নিয়ে তিন দিন ধরে ভর্তি হয়েছি। অন্য আরও দুই শিশু রোগীর সঙ্গে ছেলেকে একই শয্যায় রেখেছি। শয্যা শেয়ার করতে গিয়ে বাচ্চা নিয়ে ভালো করে বসতেও পারছি না।
রোগী তাজিয়া খাতুনের মা জুলেখা খাতুন বলেন, আমার মেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। সাত দিন ধরে এক বেডে দুজন শেয়ার করে আছি। দিনে যেমন তেমন, রাতে বসে কাটাতে হয়।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনকারী ডা. সৈকত দাস বলেন, জ্বর-কাশি হলেই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে অধিকাংশ শিশু বাড়িতেই সুস্থ হতে পারে। আমাদের কাছে রোগী এলে আমরা দেখি নিউমোনিয়াজনিত সমস্যা কি না, নিউমোনিয়া হলেই হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বেডের তুলনায় হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। সেজন্য চিকিৎসা দিতে আমাদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আনিছুর রহমান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য জ্বরের রোগী বেশি। আমাদের চিকিৎসক, কর্মচারীরা সেবা দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।