প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৪ ২৩:৫৬ পিএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৪ ০০:২২ এএম
বাংলাদেশে যক্ষ্মার যে রকম ব্যাপ্তি তাতে সরকারের একার পক্ষে এর মোকাবিলা করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে এসে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। এর একটি উদাহরণ হিসেবে আইসিডিডিআর,বি সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসক এবং ফার্মেসির মালিকদের একটি নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার কথা বলা যায়। এর মাধ্যমে যেসব রোগীরা অনেকদিন ধরে কাশিতে ভুগছেন তাদেরকে আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত টিবি সেন্টারগুলিতে রেফার করা হয় এবং এখানে অত্যাধুনিক জিনএক্সপার্ট ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ের মধ্যে যক্ষ্মা নির্ণয় করা হয়।’
মঙ্গলবার (৪ জুন) আইসিডিডিআর,বি, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও দ্য স্টপ টিবি পার্টনারশিপের সহযোগিতায় ‘যক্ষ্মা চিকিৎসা ও নির্মূলে পলিসি অ্যাডভোকেসি ও বেসরকারিখাতের যুক্তকরণ’ শীর্ষক সভার এ কথা বলা হয়।
আইসিডিডিআর,বির সাসাকাওয়া মিলনায়তনে আয়োজিত ওই সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু। তিনি বলেন, যক্ষ্মা রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সামাজিক আন্দোলন প্রয়োজন। এই সামাজিক আন্দোলনে সরকার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সবার সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইসিডিডিআর,বি-র সহযোগিতায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্যদের দিয়ে ইতিমধ্যেই ‘সংসদীয় যক্ষ্মা ককাস’ গঠন করা হয়েছে। এই সংসদীয় প্ল্যাটফর্মটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যক্ষ্মা প্রতিরোধে প্রাসঙ্গিক লক্ষ্য অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি, সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা যক্ষ্মাকে পরাজিত করব।”
সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোগের সম্পৃক্ততা নিয়ে বক্তব্য রাখেন, প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বাংলাদেশে যক্ষ্মা গবেষণায় আইসিডিডিআর,বি-র ভূমিকা ও যক্ষ্মা বিষয়ক জাতীয় নীতি ও নির্দেশিকা তৈরিতে ও বাস্তবায়নে এ প্রতিষ্ঠানের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
সভায় ‘জার্নি টু কিউ ‘ নামের একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনার মাধ্যমে যক্ষ্মা মোকাবেলায় বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও সহযোগিতা নিয়ে আলোকপাত এবং যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রমের উপরে বেসরকারি খাতের নানা প্রচেষ্টা তুলে ধরা হয়। এছাড়া ‘বাংলাদেশে পাবলিক-প্রাইভেট মিক্স পলিসি অ্যাডভোকেসি’ শীর্ষক একটি উপস্থাপনায় বিভিন্ন নীতি ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়।
সভায় টিবি পিপিএম স্টেকহোল্ডাররা যক্ষ্মা মোকাবেলায় সরকারী ও বেসরকারী অংশীদারদের সম্মিলিত কর্তব্য ও পিপিএম উদ্যোগকে শক্তিশালী করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ চিহ্নিত করেন। টিবি-এল অ্যান্ড এএসপি’র লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহাফুজার রহমান সরকার তার বক্তব্যে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য অর্জনের জন্য সরকারী ও বেসরকারী খাতের মধ্যে টেকসই সহযোগিতাসংশ্লিষ্ট বিষয়ে গুরুত্ব দেন।
ইউএসএআইডি বাংলাদেশ-এর ডেপুটি অফিস ডিরেক্টর (ওপিএইচএন) মিরান্ডা বেকম্যান বাংলাদেশের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য ইউএসএআইডির প্রতিশ্রুতি ও বেসরকারি খাতকে জড়িত করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
সভায় যক্ষ্মা বিষয়ে গবেষক ও আআসিডিডিআর’বির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ডা. সায়েরা বানু সকল অংশগ্রহণকারী, স্টেকহোল্ডার ও যক্ষ্মা আন্দোলনে যুক্ত সকল অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ও বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্মূলে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা সভায় যক্ষ্মার বিরুদ্ধে দেশে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করার জন্য কার্যকর নীতি তৈরি ও উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা কথাও তুলে ধরা হয়।