প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৩ পিএম
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৫ পিএম
নারীর খতনা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিলের বিপক্ষে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ করছে এক নারী। ১৮ মার্চ গাম্বিয়ার বানজুলে জাতীয় সংসদের বাইরে। ছবি : সংগৃহীত
গাম্বিয়া নারী খতনা নিয়ে নিষেধাজ্ঞামূলক একটি আইন প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে। দেশটির পার্লামেন্টে আইনটি প্রত্যাহার করতে একটি বিল পাস হয়েছে। এটি চূড়ান্ত হলে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে নারীদের খতনা বা যৌনাঙ্গচ্ছেদের মতো ভয়ংকর চর্চার বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষা আর থাকবে না। নারী খতনা নিষিদ্ধের আইন প্রত্যাহারের এমন সিদ্ধান্ত বিশ্বে এটাই প্রথম।
২০১৫ সালে নারী যৌনাঙ্গ বিকৃতকরণের (এফজিএম) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে গাম্বিয়া। আইনে এফজিএমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এফজিএম সংক্রমণ, রক্তপাত, বন্ধ্যাত্ব, প্রসবে জটিলতাসহ গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
কিন্তু গাম্বিয়ার পার্লামেন্টে রাজনীতিবিদরা সোমবার (১৮ মার্চ) এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য একটি বিতর্কিত বিল উত্থাপন করেন। এতে বিলটির পক্ষে ৪২ আর এর বিপক্ষে ভোট চারটি ভোট পড়ে।
বিলটি উত্থাপনকারী আইনপ্রণেতা আলমামেহ গিব্বা বলেন, ‘এ নিষেধাজ্ঞা নাগরিকদের সংস্কৃতি ও ধর্ম অনুশীলনের অধিকার লঙ্ঘন করেছে। উত্থাপিত নতুন বিলটি ধর্মীয় আনুগত্য বজায় রাখা, সাংস্কৃতিক রীতিনীতি ও মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য করা হয়েছে।’
এফজিএম-বিরোধী এনজিও সেফ হ্যান্ডস ফর গার্লসের জাহা মারি ডুকুরেহ আলজাজিরাকে বলেন, ‘এটা শিশু নির্যাতন। আমি নিজেই এর ভুক্তভোগী। এটা করতে গিয়ে আমার বোন মারা গেছে। এ দেশে যারা এফজিএমের প্রশংসা করেন, তাদের বেশিরভাগই পুরুষ।’
গাম্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া জাম্মেহ ২০১৫ সালে এফজিএম নিষিদ্ধ করে যান। ২২ বছর দেশ শাসনের পর ২০১৬ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাম্বিয়ায় ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি নারীদের ৭৬ শতাংশই এফজিএমের শিকার হয়েছে।
২০২৩ সালের আগস্টে আট কন্যাশিশুকে এফজিএম করায় তিন নারীকে জরিমানা করা হয়। আইনটির অধীনে এটাই প্রথম শাস্তি। আইনটির অধীন শাস্তি হওয়ার পর মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এখন সোমবারের বিলটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানো হবে। চূড়ান্ত হওয়ার আগে একটি তৃতীয় পক্ষ বিলটি খতিয়ে দেখবে। কমিটি চাইলে বিলটি সংশোধন করতে পারবে। প্রক্রিয়াটি শেষ হতে তিন মাস লাগতে পারে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা ও পশ্চিমা অনেক দেশে এই এফজিএমের অনুশীলন করা হয়ে থাকে। তবে অনেক দেশেই এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা