প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৩ ১৪:৫৩ পিএম
আপডেট : ২৩ জুন ২০২৩ ১৫:১৭ পিএম
মোনা হ্যাম্বির সঙ্গে আলিঙ্গনরত অরোরা স্কাই ক্যাস্টনার। ছবি : সংগৃহীত
হাই স্কুলে পড়ার সময় থেকেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢোকার আবেদনপত্র জমা দিয়ে রেখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক কিশোরী।
সেই আবেদনপত্রের সঙ্গে তার লেখা প্রবন্ধের প্রথম লাইনটি ছিল, ‘আমার জন্ম জেলকুঠুরিতে।’ না! কোনও কল্পকথা লেখেননি যুক্তরাষ্ট্রের ওই কিশোরী। ওই প্রবন্ধে নিজের জীবনকাহিনী লিখেছিলেন টেক্সাসের মন্টগোমারি কাউন্টির কিশোরী অরোরা স্কাই ক্যাস্টনার।
এর পরই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার টিকিট জুটে যায় তার। আগামী সেসনে হার্ভার্ডের ক্যাম্পাসে পাড়ি জমাবেন তিনি।
অরোরার এমন ‘কীর্তি’ নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে পশ্চিমা মিডিয়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘পিপল’ থেকে শুরু করে ‘নিউইয়র্ক পোস্ট’- সবাই তার ওই কাহিনী ফলাও করে প্রকাশ করেছে।
নিজের জীবনের গোড়ার গল্প নিয়ে অরোরা তার প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘মন্টগোমারির গ্যালভেস্টন কাউন্টি কারাগারে তার জন্ম হয়েছিল ১৮ বছর আগে। তবে জন্মের কয়েক দিন পর থেকে তাকে বাড়িতে এনে প্রায় একা হাতে মানুষ করে তোলেন তার বাবা। বাবার সঙ্গেই নানা জায়গায় বেরিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
হার্ভার্ডে পড়াশোনার স্বপ্নপূরণে অবশ্যই অবদান রয়েছে তার পরামর্শদাতা মোনা হ্যাম্বির।
ছোট থেকেই পড়াশোনায় ঝোঁক ছিল অরোরার। তার প্রতিভা নজরে পড়েছিলেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে স্কুলকর্মীদেরও। মূলত তাদের প্রচেষ্টায় কনরো ইনডিপেনডেন্ট স্কুল ডিস্ট্রিক্ট (সিআইএসডি) ‘প্রজেক্ট মেন্টর’ নামে একটি প্রকল্পের আওতায় ঠাঁই হয় অরোরার।
‘প্রজেক্ট মেন্টর’ প্রকল্প অনুযায়ী কনরোর বাসিন্দাদের সঙ্গে এলাকার বাছাই করা পড়ুয়াদের নানাভাবে সাহায্যের জন্য এক মেন্টর বা পরামর্শদাতা নিযুক্ত করা হয়। যাতে ওই পড়ুয়াদের সার্বিক উন্নতি করতে পারেন তিনি।
পরামর্শদাতা হিসেবে শিশু বয়সেই মোনা হ্যাম্বির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল অরোরার। হার্ভার্ডের টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে মোনার অবদানও অনস্বীকার্য বলে মত তার।
সংবাদমাধ্যমের কাছে অরোরা বলেন, ‘মোনার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি, তার মূল্য অপরিসীম।’
সংবাদমাধ্যম ‘ক্যুরিয়ার’-এর কাছে মোনা বলেন, ‘অরোরার সম্পর্কে একটা লেখা পড়েছিলাম। সেখান থেকে জানতে পারি, ওর আদর্শ হল রোজা পার্কস। ট্যাকো খেতে খুব ভালোবাসে এবং পড়তে অত্যন্ত আগ্রহী।’
বেড়ে ওঠার প্রতিটি বাঁকেই মোনার উপস্থিতি ছিল বলে জানিয়েছেন অরোরা।
হার্ভার্ডে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় অনেকে আগে থেকেই অরোরাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলেন মোনা। সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী র্যান্ডি হ্যাম্বি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন কেমন হয়, তা অরোরাকে দেখানোই উদ্দেশ্য ছিল মোনার।
হার্ভার্ডের টিকিট পেতে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস ওয়ালেশের সাহায্যও কাজে এসেছে বলে মত অরোরার।
তিনি বলেন, ‘হার্ভার্ডের কাছে জমা দেওয়ার জন্য আবেদনপত্র তৈরিতে খুবই সাহায্য করেছিলেন ওয়ালেশ। আবেদনপত্রের প্রবন্ধে নিজের কাহিনী যতটা সম্ভব গুছিয়ে লেখার কথাও বলেছিলেন তিনি।’
মোনার সঙ্গ থেকে ওয়ালেশের পরামর্শ- সবই কাজে লেগেছে তার। এখন হার্ভার্ডের ক্যাম্পাসে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন অরোরা। তিনি বলেন, ‘হার্ভার্ডের কলেজে পড়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’
সূত্র : পিপল