× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বাজেট ফাঁসের যত কাণ্ড

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৩ ১০:৪৫ এএম

 ১৯৪৭ সালে বাজেট পেশের আগে তা ফাঁস হওয়ায় চাপের মুখে পদত্যাগ করেন ব্রিটেনের লেবার চ্যান্সেলর এডওয়ার্ড জন ডালটন। ছবি : সংগৃহীত

১৯৪৭ সালে বাজেট পেশের আগে তা ফাঁস হওয়ায় চাপের মুখে পদত্যাগ করেন ব্রিটেনের লেবার চ্যান্সেলর এডওয়ার্ড জন ডালটন। ছবি : সংগৃহীত

জটিল ভাষা-পরিভাষায় মোড়ানো জাতীয় বাজেট একটি দেশের অর্থনীতির খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসাব-নিকাশের বিষয়। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে বাজেটের অধিকাংশ বোধগম্য না হলেও আগ্রহের কমতি নেই। শুধু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নয়, পৃথিবীর উন্নত দেশের মানুষের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রায় সমভাবে প্রযোজ্য। তবে বাস্তবতা হচ্ছে প্রতিবছর নিয়ম মেনে বাজেট আসে।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও জানতে চায়- নিত্যপ্রয়োজনীয় কোন জিনিসের দাম বাড়ছে আর কোনটার কমছে। তবে বাজেট সংসদে উপস্থাপনের আগে এসব তথ্য গোপন রাখাই প্রথা। কারণ বাজেটের তথ্য আগে ফাঁস হয়ে গেলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিতে পারে। তাই বাজেট প্রণয়ন ও প্রকাশে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়।

গোপনীয়তা রক্ষার চেষ্টা সত্ত্বেও বেশ কয়েকবার বাজেটের তথ্য ফাঁস হয়েছে। ঘটেছে মজার কাণ্ড। এখানে জানাব উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বাজেট ফাঁসের তথ্য।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদে সাধারণত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী বা অর্থ উপদেষ্টারা। তবে কখনও কখনও সরকারপ্রধানরাও এটি উপস্থাপন করেন। ব্রিটেনে বাজেট পেশ করেন ‘চ্যান্সেলর অব এক্সচেকার’। যেহেতু বাজেট বক্তৃতা দীর্ঘসময় নিতে পারে, তাই চাইলে দেশটির চ্যান্সেলর সঙ্গে অ্যালকোহল রাখতে পারেন। শুধু এই একটি দিনই চ্যান্সেলর তার বক্তৃতার সময় সুরায় চুমুক দিতে পারেন। আর বাজেট ফাঁসের বেশিরভাগ কাণ্ডও এ দেশে ঘটেছে।

১৯৩৬ সালে ব্রিটেনের মন্ত্রী জিমি থমাস বিপক্ষ রাজনৈতিক দলের এক সদস্য এবং ব্যবসায়ীদের কাছে বাজেটের তথ্য ফাঁস করে দেওয়ায় পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। বলা হয়, তিনি নাকি গলফ খেলার সময় ‘টি আপ’ বলে চিৎকার দিয়েছিলেন। এর অর্থ হচ্ছে চায়ের ওপর শুল্ক বাড়ছে।

১৯৪৭ সালে এডওয়ার্ড জন ডালটন বাজেট বক্তৃতা শেষ করার আগেই দ্য স্টার পত্রিকায় বাজেট হুবহু ছাপা হয়। চলে যায় জনসাধারণের হাতে। বাজেট ফাঁস হওয়ার এই দায় নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন ডালটন।

ভারতে বাজেট ফাঁস হয় ১৯৫০ সালে। তখন বাজেট প্রিন্ট করা হতো রাষ্ট্রপতি ভবনে। ওই ঘটনার পর দেশটির বাজেট প্রিন্টের প্রেস পরিবর্তন করে নয়াদিল্লির মিন্টো রোডে নেওয়া হয়। ১৯৮০ সালে নর্থ ব্লকে প্রেস স্থাপন করে সরকার। সেখানে বাজেট মুদ্রণ শুরু হওয়ার পর থেকে সেই কাজে যুক্ত কর্মীদের নর্থ ব্লকেই থাকার বন্দোবস্ত করা হয়। সেখানে তাদের গতিবিধি ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হয়। নর্থ ব্লকের বেজমেন্টে সবাইকে থাকতে হয় যতক্ষণ পর্যন্ত না অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করছেন।

১৯৮৬ সালে নিউজিল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী স্যার রজার ডগলাস পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কারণ তার অফিসের কর্মচারীরা ভুলবশত বাজেট ডকুমেন্ট সময়ের আগে বিভিন্ন অফিসে পাঠিয়ে দেন।

১৯৯৬ সালে ব্রিটেনের কেনেথ ক্লার্কের বাজেট আগেই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ডেইলি মিরর বাজেট আগাম পেয়েও প্রকাশ না করে নৈতিকতার কথাটি মাথায় রেখে অর্থ মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

বাজেট ফাঁস এড়াতে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ব্রিটেনের আরেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন। সংসদে উপস্থাপনের আগে বাজেট নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের একটি নীতি চালু করেছিলেন, যাতে গণমাধ্যম বাজেট রিপোর্ট ভালোভাবে করতে পারে। তবে বাজেট পেশ করার আগে তা প্রকাশ না করার শর্ত ছিল। এখানেও বিপত্তি ঘটেছিল একবার। ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকাটির বাজেট সংখ্যার প্রথম পাতার ছবি তুলে ওই পত্রিকাটিরই এক সাংবাদিক টুইটারে প্রকাশ করে দেন। অথচ তখনও বাজেট বক্তৃতা শুরু হয়নি। সেটি ছিল ২০১৩ সালের ঘটনা। এজন্য ওই পত্রিকাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হয়।

আগে বাজেটের তথ্য গোপন রাখায় কড়াকড়ি থাকলেও বর্তমানে এমনটা হয় না। এখন বিভিন্ন দেশে পণ্যের দাম বাড়া-কমা গোপন রেখে বাজেটের মৌলিক কাঠামোর তথ্য আগে প্রচার করে থাকে সরকার। বাংলাদেশের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও একাধিকবার বাজেটের পরিমাণটা আগে জানিয়েছেন। এ ধরনের তথ্য ফাঁস হলে অর্থনীতিতে বড় কোনো ক্ষতি হয় না।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান ও নিউজএইটিন


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা