প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:৫৩ পিএম
আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৬:২১ পিএম
৫০০ দিন নির্জন গুহায় বসবাস করে অবশেষে বেরিয়ে এসেছেন পর্বতারোহী বিট্রিজ ফ্ল্যামিনি। ছবি : সংগৃহীত
নিজেকে বা নিজের প্রজাতিকে বুঝতে মানুষ কত কিছুই না করে। মাঝেমধ্যে সাধারণ
মানুষের কাছে তা অদ্ভুতও শোনাতে পারে। যেমন ৫০ বছর বয়সি এক স্পেনীয় নারী পর্বতারোহী
মানবদেহে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্নতার প্রভাব বুঝতে এক পরীক্ষার অংশ হিসেবে ভূগর্ভস্থ
গুহায় কাটিয়ে দিয়েছেন টানা ৫০০ দিন।
অবশেষে দক্ষিণ স্পেনের মন্ট্রিল গুহা থেকে তিনি যখন বের হন তখন পরিবারের
সদস্যসহ উৎসাহী অনেকেই তাকে অভ্যর্থনা জানাতে গুহামুখে জড়ো হওয়াদের দেখতে পান। বিট্রিজ
ফ্ল্যামিনি নামের সেই নারী যখনই গুহা থেকে বেরিয়ে আসেন, তার পরিবারের সদস্যরা তাকে
জড়িয়ে ধরেন।
সাংবাদিকদের ফ্ল্যামিনি বলেছেন, ‘আমি দেড় বছর ধরে কারও সঙ্গে কথা বলিনি।
শুধু নিজের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিজ্ঞতাটি চমৎকার।’
ফ্লামিনি চ্যালেঞ্জ শুরু করেছিলেন ২১ নভেম্বর ২০২১ সালে। রাশিয়ার ইউক্রেন
আক্রমণের আগে এবং বিশ্ব তখন কোভিড মহামারির কবলে ছিল। গুহা থেকে বের হওয়ার পর তিনি
সাংবাদিকদের বলেন, পৃথিবীতে কী ঘটেছে আমি জানি না। আমার জন্য এখনও ২১ নভেম্বর ২০২১।
তিনি ৭০ মিটার (২৩০ ফুট) ভূগর্ভে ছিলেন। তবে এর মধ্যে এক সপ্তাহের জন্য
তিনি বাধ্য হয়ে গুহা থেকে বেরিয়ে আসেন কারণ যে ইন্টারনেট রাউটার জরুরি পরিস্থিতিতে
সাহায্যের জন্য কল করার অনুমতি দেয়, সেটি ভেঙে যায়। তবে তার রাউটার ঠিক করার সময়ও তিনি
একটি তাঁবুতে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তার দলের সদস্যরা দৈনিক পত্রিকা এল পাইস ও অন্যান্য স্প্যানিশ
গণমাধ্যমকে এমনটাই বলেছিলেন।
ফ্লামিনি জানান, তিনি কৃত্রিম আলোর সাহায্যে পড়া, ব্যায়াম এবং উলের টুপি
বুনতে সময় কাটিয়েছেন।
তিনি কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করলেও একটি প্রযুক্তিগত দল তাকে সব সময় পর্যবেক্ষণে
রেখেছিল। যারা তার সঙ্গে যোগাযোগ না করেই গুহার একটি বিনিময় পয়েন্টে খাবার রেখে দিত।
ফ্লামিনির কাছে তার অভিজ্ঞতা নথিভুক্ত করার জন্য দুটি ক্যামেরা ছিল। স্প্যানিশ
প্রযোজনা সংস্থা ডকুমালিয়া এটি থেকে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করবে।
স্প্যানিশ পর্যটনমন্ত্রী হেক্টর গোমেজ এটিকে চরম সহনশীলতার পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা বিজ্ঞানের জন্য অমূল্য হবে বলে তিনি আশা করেন।
সূত্র : আরব নিউজ