প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১০:০৮ এএম
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৪৫ এএম
ছবি : সংগৃহীত
ক্ষতিকর প্রাণী হিসেবেই পরিচিত ইঁদুর। প্রতিবছর হাজার হাজার টন শস্য এই ইঁদুরের পেটে চলে যায়। তবে ব্যতিক্রম রনিন নামের এক ইঁদুর। মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছে এই ইঁদুর। ঘ্রাণশক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষের এই উপকার করে চলেছে ইঁদুরটি। গন্ধ শুঁকে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা মাইন খুঁজে বের করে সেটি। এই কাজ করে ইতোমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের খাতায় নামও লিখিয়েছে রনিন।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইঁদুর হিসেবে সবচেয়ে বেশি স্থলমাইন খুঁজে বের করে বিশ্বরেকর্ড করেছে রনিন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ার সিয়েম রিপ এলাকার কাছের একটি অঞ্চলে ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০৯টি স্থলমাইন এবং অবিস্ফোরিত গোলা খুঁজে বের করেছে ইঁদুরটি।
পাঁচ বছর বয়সি রনিনের জন্ম তানজানিয়ায়। সাধারণ পোষা ইঁদুরের চেয়ে এটির আকার বেশ বড়, লম্বায় দুই ফুটের বেশি। আর ওজন ২ দশমিক ৬ পাউন্ড। বেলজিয়ামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এপিওপিও এসব তথ্য জানিয়েছে। বিভিন্ন প্রাণীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে তারা। ১০০টির বেশি ইঁদুরকে বিস্ফোরণ খুঁজে বের করার প্রশিক্ষণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। রনিন সেগুলোর একটি।
এপিওপিওর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ইঁদুরগুলো মাত্র ৩০ মিনিটে একটি টেনিস কোর্টের আয়তনের সমান এলাকায় স্থলমাইন খুঁজে বের করতে পারে। একই কাজ করতে মেটাল ডিটেক্টরের (ধাতব বস্তু শনাক্তকারী যন্ত্র) চার দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
রনিনের আগে সবচেয়ে বেশি স্থলমাইন খুঁজে বের করার রেকর্ড ছিল মাগাওয়া নামের আরেকটি ইঁদুরের। ওই ইঁদুরকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল এপিওপিও। সেটি পাঁচ বছরে ৭১টি স্থলমাইন ও ৩৮টি অবিস্ফোরিত গোলা খুঁজে বের করেছিল। ২০২২ সালের জানুয়ারি ইঁদুরটির স্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
রনিন যে এলাকায় স্থলমাইন খুঁজে বের করে, সেটি কম্বোডিয়ার প্রেয়াহ ভিহেয়ার প্রদেশে অবস্থিত। বিংশ শতকে কয়েক দশক ধরে চলা সংঘাতের পর এখনও প্রদেশটির মাটির নিচে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্থলমাইন রয়ে গেছে। এ ছাড়া ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় এ অঞ্চলে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ওই গোলার অনেকগুলো এখনও অবিস্ফোরিত অবস্থায় সেখানে পাওয়া যায়। এপিওপিওর হিসাবে কয়েক বছর ধরে তাদের মাইনমুক্ত করার প্রচেষ্টার পরও এখনও কম্বোডিয়ায় মাটির নিচে ৪০ থেকে ৬০ লাখ অবিস্ফোরিত মাইন রয়েছে।