× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গাছের কাণ্ডে জমে থাকা পানি যাদের ভরসা

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:৩৯ এএম

আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৩৮ এএম

গাছের কাণ্ডে জমে থাকা পানি যাদের ভরসা

আফ্রিকার উপসাহারান অঞ্চলে পাওয়া যায় একটি গাছ। ট্রি অব লাইফ নামে পরিচিত গাছটি। আসল নাম অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটা, যাকে সাধারণত আফ্রিকান বাবোবাব গাছ বলা হয়। এটি তার অস্বাভাবিক আকার, দীর্ঘায়ু এবং পরিবেশগত অভিযোজনের জন্য পরিচিত।

গাছটি তিন-চার হাজার বছর পর্যন্ত শুষ্ক আবহাওয়াও বেঁচে থাকতে পারে। নিজের কাণ্ডে অনায়াসে লক্ষাধিক লিটার পানি ধরে রাখতে সক্ষম। গাছটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও আশ্রয়ের উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।

অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটার কাণ্ড সাধারণত মোটা এবং বোতলের মতো আকার ধারণ করে। গাছটি তার কাণ্ডে প্রচুর পানি জমা রাখতে পারে, যা শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার হয়। একটি পূর্ণবয়স্ক বাবোবাব গাছের কাণ্ডে ১ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার লিটার পর্যন্ত পানি জমা থাকতে পারে। গাছটি এ ধরনের অভিযোজনের মাধ্যমে শুষ্ক পরিবেশে টিকে থাকতে সক্ষম।

এটি মৌসুমি পাতা ঝরায় এবং শুষ্ক মৌসুমে পাতা ঝরানোর মাধ্যমে পানির অপচয় রোধ করে। গাছটি বড়, সাদা এবং সুগন্ধি ফুল ফোটায়, যা রাতে পরাগায়নের জন্য বাদুড়ের ওপর নির্ভর করে।

অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটার ফল লম্বা, ডিম্বাকৃতির এবং শক্ত খোসাযুক্ত। ফলের ভেতরে থাকা পাল্প পুষ্টিতে ভরপুর এবং এটি বানান ফল নামে পরিচিত। এতে প্রচুর ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা স্থানীয় খাদ্য ও ওষুধ তৈরিতে ব্যবহার হয়।

অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটা গাছটি মাটির গভীর স্তর থেকে পানি শোষণ করতে পারে। এ ছাড়াও কাণ্ডে জমে থাকা পানি স্থানীয়রা কেটে বের করে পান করতে পারে। এই গাছের কাঠ তুলনামূলক নরম ও স্পঞ্জের মতো, যা পানিকে সংরক্ষণ করতে সাহায্য করে। শুষ্ক মরুভূমি অঞ্চলে একে টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য ব্যবস্থা।

বাবোবাব গাছটি অনেক প্রাণীর জন্য আশ্রয়স্থল। পাখি, বাদুড় ও কীটপতঙ্গ এই গাছের ওপর নির্ভরশীল। গাছটি মাটির উর্বরতা বজায় রাখে এবং ক্ষয় রোধে সাহায্য করে। গাছের বিভিন্ন অংশ খাদ্য, ওষুধ, কাপড় ও পানীয় তৈরিতে ব্যবহার হয়। এটি স্থানীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

অ্যাডানসোনিয়া ডিজিটাটা গাছের কাণ্ডে জমে থাকা পানি সাধারণত আফ্রিকার শুষ্ক ও আধা-মরু অঞ্চলের মানুষ পান করে। বিশেষ করে মালি, নাইজার, সুদান, সেনেগাল, তানজানিয়া, কেনিয়া, জিম্বাবুয়ে, মাদাগাস্কার দেশের মানুষ বাবোবাব গাছের পানি পান ও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে। মালির শুষ্ক অঞ্চলে খরার সময় মানুষ বাবোবাব গাছের ভেতরের পানি পান করে।

নাইজারের মরু অঞ্চলে বাবোবাব গাছ থেকে পানি সংগ্রহ করা একটি প্রচলিত প্রথা। সুদানে খরার সময় স্থানীয় জনগণ বাবোবাব গাছ কেটে তার ভেতরের পানি ব্যবহার করে। আবার সেনেগালে গ্রামীণ মানুষ এই গাছকে জীবনদাতা হিসেবে বিবেচনা করে এবং এর পানি ব্যবহার করে।

পূর্ব আফ্রিকার তানজানিয়া ও কেনিয়ার শুষ্ক এলাকায় বসবাসকারী মানুষও বাবোবাব গাছের পানি পান করে। এই দেশগুলোর গ্রামীণ অঞ্চলের লোকজনও খরার সময় এই গাছের ভেতরের পানি সংগ্রহ করে। শুধু মানুষ নয়, অনেক পশুপাখিরও পানির উৎস এই গাছ। এ ছাড়া বিশালাকৃতির হওয়ায় এই গাছের ভেতর মানুষ ঘর বানিয়ে বসবাসও করে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা