প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৫ পিএম
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:১৬ পিএম
ডেভিড জনস ও তার মেয়ে এলিজাবেথ । ছবি : সংগৃহীত
পৃথিবীর প্রতিটি মা-বাবাই তার সন্তানকে অফুরন্ত ভালোবাসেন। সন্তানের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, তার সুখের সাক্ষী হওয়ার জন্য তারা যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। সম্প্রতি সন্তানের প্রতি ভালোবাসার এমনই এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত নজির করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক বাবা। ঘূর্ণিঝড় হেলেনের ভয়াবহতা উপেক্ষা করে ৩০ মাইল পথ পায়ে হেঁটে মেয়ের বিয়েতে গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন এই বাবা।
গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘূর্ণিঝড় হেলেনের কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি লন্ডভন্ড করে দিয়েছে দেশটির বেশকিছু অঞ্চল। দেড় শতাধিক মানুষ ইতোমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে যাবে। আর এই ঝড়ের মধ্যেই নিজের জীবনের কথা চিন্তা না করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে মেয়ের বিয়েতে শামিল হয়েছেন ডেভিড জনস। মেয়ের প্রতি তার এ অবিচল ভালোবাসার মর্মস্পর্শী গল্প ভাইরাল হয়েছে সামাজিকমাধ্যমে। জয় করে নিয়েছে অনেকের হৃদয়।
প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে পৌঁছানোর জন্য ডেভিড জনসের দৃঢ় সংকল্পের এ অনুপ্রেরণামূলক গল্পটি শেয়ার করেছে গুড নিউজ মুভমেন্ট।
গুড নিউজ মুভমেন্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ডেভিড জনসের মেয়ে এলিজাবেথের বিয়ে ছিল গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে। ইন্টারস্টেট ২৬ এ যেতে সাধারণত দুই ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু ঝড়ের কারণে তা সম্ভব ছিল না। কিন্তু তিনি মেয়ের বিয়ে মিস করবেন না বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।
জোন্স তার ব্যাগ গুছান। ব্যাকপ্যাকে কেবল কয়েকটি প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে পায়ে হেঁটে বেরিয়ে পড়েন। গন্তব্য এলিজাবেথের বিয়ে। হাঁটু সমান কাদার মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়াসহ তার এই যাত্রা ছিল নানা চ্যালেঞ্জে পরিপূর্ণ। টানা ১২ ঘণ্টার ক্লান্তিকর ট্রেকিংয়ের পর তিনি এ অধ্যবসায়ের প্রতিদান পান।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, ‘পথিমধ্যে একজন সেনা তাকে তার গন্তব্যে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিল। ১২ ঘণ্টার অগ্নিপরীক্ষার পর ডেভিড গোসল করে টাক্স পরেন। আর তার মেয়েকে নিয়ে করিডোর দিয়ে হেঁটে যান। তিনি জানান, কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারছিল না।’
এই নিবেদিতপ্রাণ বাবার আন্তরিক প্রচেষ্টা অনলাইনে অনেকের হৃদয়ে অনুরণিত হয়েছে। মন্তব্যকারীরা তার প্রশংসা করতে বাধ্য হয়েছেন।
একজন ডেভিড সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, ‘এমন একজন ব্যক্তি যিনি বাবা হিসাবে তার দায়িত্বগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেন।’
আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘একজন বাবার ভালোবাসা কেনো কিছুতেই থেমে থাকবে না।’
অন্য আরেকটি মন্তব্যে বলা হয়েছে,‘ড্যাড অব দ্য ইয়ার!’
একজন লিখেছেন, ‘এটা নিঃশর্ত ভালোবাসা।’
একজন মন্তব্যকারী লিখেছেন, ‘আমার মনে হয় না আমি আমার বাবাকে এমনটা করতে দিতাম। এমনকি তিনি চাইলেও দিতাম না। যাই হোক, এটি একটি সুন্দর ভালোবাসার গল্প। আমি নিশ্চিত তিনি কখনোই এই সাহসী মানুষটিকে ভুলতে পারবেন না।’
সূত্র : এনডিটিভি