প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:২৩ পিএম
আপডেট : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:২৬ পিএম
ব্রাজিলের আদালত মিশরের রাজা পিয়ের নামে এ নবজাতকটির নামকরণ করায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বের প্রতিটি দেশের আদালতই তার দেশের নাগরিকদের হিতে ও নিরাপত্তার খাতিরে সময় সময়ে নানা ধরনের নিয়ম বানিয়ে থাকে। কখনো কোনো কিছু করতে হবে বলে আদেশ দেয় আবার কখনো দেয় নিষেধাজ্ঞা। তবে এবার দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ ব্রাজিলের আদালত একটু ভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন।
সম্প্রতিই দেশটির একটি আদালত এক কৃষ্ণ দম্পতিকে তাদের নবজাতকের নাম মিশরীয় রাজার নামে রাখতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। আর ভবিষ্যতে এ নামের জন্য নবজাতকের বুলিং এর শিকার হতে পারার সম্ভাবনাকে এ নিষেধাজ্ঞার পেছনের কারণ হিসেবে দর্শিয়েছেন।
ক্যাটারিনা ও ড্যানিলো প্রিমোলা নামের এক দম্পতি তাদের নবজাতক ছেলের নাম রাখতে চেয়েছিলেন পিয়ে। পিয়ে একটি ঐতিহাসিক চরিত্র। তিনি মিশরের প্রথম ফারাও। মিশরের ইতিহাসে পিয়ে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি মিশরে ২৫ তম রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ৭৪৪-৭১৪ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ৩০ বছর মিশরে শাসন করেছিলেন।
তবে, এ অস্বাভাবিক নামের জন্য নবজাতকটিকে তার জীবদ্দশায় উপহাস ও বুলিং এর সম্মুখীন হতে হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে আদালতটি।
৩১ আগস্ট প্রিমোলা দম্পতির প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসে। কিন্তু এর আগেই তারা তাদের সন্তানের নাম ঠিক করে রেখেছিলেন। তারা ২০২৩ সালের কার্নিভাল উদযাপনের থিম গান শোনার পর নামটি ঠিক করেছিলেন।
নামটি তারা কীভাবে পেলেন সে সম্পর্কে ডেইলি মেইলকে ড্যানিলো বলেছেন, ‘সেখানে কালো ফারাও সম্পর্কে একটি শব্দ বলা হয়েছিল। আমরা তা সম্পর্কে গবেষণা করতে গিয়ে পিয়ের গল্পটি পেয়েছি। তিনি ছিলেন একজন নুবিয়ান যোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করে মিশরকে জয় করেছিলেন। আর তিনি মিশরের প্রথম কালো ফারাও হয়েছিলেন।’
তাদের আফ্রিকান বংশের সঙ্গে যোগসূত্র বজায় রাখাটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা পিয়ের সম্মানার্থে তার নামে তাদের ছেলের নাম রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
ড্যানিলো আরও বলেন, ‘কালো মানুষের ইতিহাসে একটি নতুন গল্প সংযুক্ত করার একটি শক্তিশালী উপায় হলো আফ্রিকান নাম পুনরুদ্ধার করা। আমাদের সন্তানদের এই শক্তি, এই সংস্কৃতি দিয়ে শিক্ষিক করার অধিকার আমাদের আছে। তাদেরকে এমনভাবে শিক্ষিত করার অধিকার আমাদের আছে যাতে করে তাদের নামে তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকে।’
নিউজ পোর্টালের তথ্যানুসারে, মিনাস গেরাইস কোর্ট অফ জাস্টিস তার রায়ে জানিয়েছে, ফারাওয়ের নামের উচ্চারণ পর্তুগিজ শব্দ ‘প্লিয়ে’ এর মতো। আর প্লিয়ে একটি ব্যালে নৃত্যের ধাপ। আর এর ফলে শিশুটি ভবিষ্যতে উপহাসের সম্মুখীন হতে পারে বিধায় নামটিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ড্যানিলো বলেছেন, ‘আমরা জানি যে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে কিংবা শাস্তির মাধ্যমে বুলিং প্রতিরোধ করা সম্ভব না। পড়াশুনা ও সমাজের অজ্ঞতা নিয়ে কাজ করে বুলিং প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
সূত্র : এনডিটিভি