প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫৭ পিএম
নিউজিল্যান্ডের বর্ষসেরা পাখি হিসেবে জয়ী হয়েছে হোইহো বা হলুদ চোখের পেঙ্গুইন। ছবি : সংগৃহীত
শুনতে অদ্ভুত হলেও নিউজিল্যান্ডে গত সোমবার নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে পাখিদের নির্বাচন। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে খবর প্রকাশের পর থেকেই ইন্টারনেট দুনিয়ায় আলোড়ন তুলেছে ঘটনাটি।
মূলত এই ভোটের আয়োজকরা প্রথমে হাস্যরস করতেই ইভেন্টের আয়োজন করেন। কিন্তু পরবর্তীতে অনেকেই আগ্রহ দেখাতে শুরু করেন। নির্বাচনে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ ভোট দিয়েছেন। ভোটের আয়োজকদের একজন রু মরগান জানিয়েছেন, মোট আড়াইশো পাখির মধ্যে পাঁচটি পাখির প্রজাতিকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়। এই পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে হোইহো প্রজাতির পেঙ্গুইন। এই প্রজাতির পেঙ্গুইনের চোখের অংশে সামান্য হলুদ ছোপ থাকায় পাখিটিকে হলুদচোখা পেঙ্গুইনও বলা হয়। দুর্লভ ব্ল্যাক রবিনের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা থাকলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে হোইহো পেঙ্গুইন।
হোইহো ইতোমধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিপন্নপ্রায় প্রজাতির পাখী বলে পরিচিত। পাখি নির্বাচনের মাধ্যমে মূলত বিপন্ন প্রজাতির পাখী রক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলা হয়। অ্যাসপাইরিং বার্ড ক্যাম্পেইন ম্যানেজার নামে একটি সংগঠন এই নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে ছিল। তারা জানিয়েছে, ‘নিউজিল্যান্ডের মানুষ পাখিদের ভালোবাসে। তাছাড়া এখানকার পাখিদের সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আমরা বিগত কয়েক বছর ধরেই পাখী নির্বাচনের আয়োজন করে আসছি। মূল উদ্দেশ্য, সবাই যেন পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজে এগিয়ে আসে। এবছর অবশ্য ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। তবে এবারের ক্যাম্পেইন গোটাবিশ্বে আলোড়ন তুলেছে।’
প্রাণীবিজ্ঞানীদের মতে, হোইহো সচরাচর মাওরি ভাষার শব্দ। এই পাখিটি এমনিতেও বিচিত্র। জন অলিভার নামে এক ব্যক্তি পুতেকেতেকে নামে একটি ক্যাম্পেইনও চালান। ওই ক্যাম্পেইনে তিনি পাখিটির বিষয়ে কিছু তথ্য দেন। জানান, এই পাখিটি অদ্ভুত। এরা নিজের পালক খেয়ে আবার বমি করে নিজের এলাকা চিহ্নিত করে। তাছাড়া পাখিটি দেখতেও সুন্দর। সমস্যা হলো, পাখিটির সংখ্যা ক্রমেই কমতে শুরু করছে। নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ ও চ্যাথাম দ্বিপপুঞ্জেই পাখিটি দেখা যায়। গত দুই বছরে পাখিটির সংখ্যা কমেছে ৭৮ শতাংশ।
গত সোমবার পাখী ভোটের সময় সারাবিশ্বেই এই নির্বাচন নিয়ে হাস্যরস হয়েছে। জর্জ হ্যাভিয়ের নামে এক ব্যক্তি তার ফেসবুক একাউন্টে লিখেছেন, ‘পৃথিবীর একমাত্র নির্বাচন যেখানে কেউ অনিয়মের অভিযোগ তুলতে পারবে না। তবে অতিরিক্ত পাখিপ্রীতির অভিযোগ হয়তো টানতে পারেন।’ অন্যদিকে অনেকে পাখির সাজসজ্জায় নিজেকে সাজিয়ে ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন। অনেকে গায়ে বিভিন্ন পাখির ট্যাটু আঁকিয়েছেন। অনেকে যাদুঘরে পাখী দেখতে গিয়েছেন ভোট দেওয়ার আগে। সে অভিজ্ঞতাও নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন সগর্বে।
সূত্র: সিএনএন