সারোয়ার হোসেন
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪ ১২:৩৯ পিএম
আপডেট : ১৬ মে ২০২৪ ১৩:৩০ পিএম
চৈতীর পড়ার রুমের পাশে বাগান। জানালা দিয়ে ফুলের ঘ্রাণ ভেসে আসে। একদিন বিকালে জানালা দিয়ে একটি ফড়িং ঢুকে পড়ল। লাল টুকটুকে মিষ্টি ফড়িং। ডানা দুটোও রঙিন। ফড়িংটা চৈতীকে বলে, ‘চলো আমার সাথে।’
ফড়িংয়ের কথা শুনে চৈতী অবাক হয়ে বলল, ‘আমাকে কোথায় নিয়ে যেতে চাও?’ ফড়িং বলল, ‘আমার সাথে খেলবে। ঐ যে মাঠ। সেখানেই দুজন মিলে খেলা করব।’ ফড়িংয়ের কথায় রাজি হয়ে গেল। দুজন মাঠে পৌঁছল।
ফড়িং চৈতীকে বলল, ‘জানো তোমার সাথে খেলার জন্য আমি প্রায় প্রতিদিনই তোমার বাগানে আসি। কিন্তু এসে দেখি তুমি পড়াশোনায় ব্যস্ত। এই বয়সে তুমি কতগুলো বই পড়ো, পেটমোটা ভারী ব্যাগ থাকে তোমার কাঁধে।’
চৈতী বলল, ‘তুমি এসব কীভাবে জানো?’
ফড়িং বলল, ‘আমি সবই জানি। তুমি স্কুল থেকে এসেই আবার কোচিংয়ে যাও। তুমি একটুও খেলার সময় পাও না। অথচ আমার দাদি বলে, তাদের সঙ্গে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে কত্তো খেলা করত।
আর এখন তো তোমরা পড়ার বাইরে মোবাইলে আঠার মতো লেগে থাকো!
যতটুকু সময় পাও মোবাইলের গেমসে পড়ে থাকো।’
চৈতী বলে, ‘ফড়িং ভাইয়া তুমি ঠিকই বলেছ।’
ফড়িং বলে, ‘আজ তোমাকে পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। তোমার সাথে ইচ্ছেমতো খেলব। সবুজ ঘাসে ছোটাছুটি করব। লুকোচুরি খেলব।’
দুজন খেলা শুরু করল। এরই মধ্যে তাদের সাথে যোগ দিয়েছে নানা রঙের প্রজাপতি, নানা রঙের ফড়িং।
খেলতে খেলতে হঠাৎ চৈতীর চোখে ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে। লাল ফড়িংটা বলে, ‘তোমার কি ঘুম আসছে?’ চৈতী বলে, ‘হ্যাঁ।কয়েকটা দিন পড়ার খুব ধকল গেছে।’ ফড়িং বলে, ‘তুমি এই সবুজ গালিচায় ঘুমিয়ে পড়ো। ঘুম শেষে তোমাকে আমি আবার তোমার বাড়ি পৌঁছে দেব।’
এমন সময় চৈতীর মার ডাকে
চৈতীর ঘুম ভাঙল। চৈতী ঘুম থেকে জেগে বলল, ‘মা আমি ফড়িং হতে চাই।’
চৈতীর মা চৈতীকে জড়িয়ে ধরে
বলল, ‘কী হয়েছে তোমার, হঠাৎ ফড়িং হতে চাইছ?’
চৈতী তখন ঘুমের ভেতর যা যা ঘটেছে সব তার মাকে বলল।
মা তখন সব বুঝতে পেরে বলল, ‘মানুষ তো আর ফড়িং হতে পারে না। তবে তুমি প্রতিদিন বিকালে ফড়িংয়ের সাথে খেলা করবে।’ মায়ের কথা শুনে চৈতীর আনন্দ যেন আর ধরে না!