মনিরা খানম ঐশী
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৪ ১২:৩১ পিএম
আপডেট : ১৬ মে ২০২৪ ১২:৩৭ পিএম
গল্পের সঙ্গে সুন্দর ছবিটি এঁকেছে সারিনা সিকদার। সে ঢাকার উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী
তুলি স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি বিড়ালছানাকে দেখতে পেল। বিড়ালটাকে বাসায় নেবে কি নেবে না তা নিয়ে সে দ্বিধায় পড়ে গেল। বিড়ালটাকে দেখে মনে হচ্ছিল খুব অসুস্থ। তারপর সে সিদ্ধান্ত নিল বিড়ালটাকে বাসায় নিয়ে যাবে এবং সুস্থ করে তুলবে। বাড়িতে ঢুকতেই মা তুলির সাথে বিড়ালছানাটাকে দেখে বলেন, ‘ছানাটিকে তুমি কোথায় পেলে?’ তুলি তখন বলে, ‘মা আমি এটিকে রাস্তার পাশে কুড়িয়ে পেয়েছি। মা এটিকে আমি পুষতে চাই।’ মা তখন বলেন, ‘বিড়ালছানাটির মা হয়তো আছে। তাকে না পেয়ে এখনও খুঁজে বেড়াচ্ছে। তারচেয়ে বরং যেখানে ছিল সেখানে রেখে আসাই ভালো মনে হয়।’ কিন্তু তুলি মায়ের কথা না শুনে বিড়ালটাকে নিজের ঘরে নিয়ে যত্নআত্তি করতে লাগল। ধীরে ধীরে বিড়ালটি সুস্থ হয়ে উঠল। তারপর তুলি বিড়ালটার নাম দিল ‘পুসপুস’। তুলি যখন স্কুলে চলে যেত পুসপুস তখন সারা দিন বারান্দায় বসে তুলির জন্য অপেক্ষা করত। আর তুলি স্কুল থেকে ফিরে এলেই বাড়িজুড়ে মিউমিউ সুরে ডাকত। যেন বলতে চাইছে সে তুলিকে দেখে অনেক খুশি হয়েছে। তুলির মা বিড়ালটিকে খুব আদর করেন। পুসপুসও মায়ের আদর পেয়ে সারা দিন মায়ের পেছনে পেছনে ঘুড়ে বেড়াত। তুলি পুসপুসের জন্য চিলেকোঠাটা খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে। মাঝেমধ্যে পুসপুস ওখানে গিয়ে ঘুমাত।
একদিন বিকালবেলায় পুসপুস হঠাৎ করে উধাও হয়ে যায়। পুসপুস কোথায় গিয়েছে কেউই তা বলতে পারে না। এমনকি তুলি সারা বাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজেও পুসপুসকে কোথাও পায় না। পুসপুসকে কোথাও না পেয়ে তুলি কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। তুলির মা-বাবাও অনেক চিন্তিত হয়ে পড়েন। অনেক দিন হয়ে যায় পুসপুসের কোনো খবর পাওয়া যায় না। সেদিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরলে মা তাকে দেখে মিটমিট করে হাসতে থাকেন। কিন্তু তুলি মায়ের এই হাসির কারণ বুঝে উঠতে পারে না। মা তাকে ইশারায় চিলেকোঠার ঘরটার দিকে দেখিয়ে দেন। ঘরে ঢুকতেই সে দেখতে পায় পুসপুসসহ আরেকটা বিড়াল তার দিকে তাকিয়ে আছে। তুলি তো পুসপুসকে পেয়ে অনেক খুশি। পুসপুস তুলিকে পেয়ে আর যায় কোথায়। ঝাঁপিয়ে কোলে উঠে পড়ে। তুলির মা তখন পেছন থেকে বলে ওঠেন, ‘পুসপুস তো তার মাকে খুঁজে বের করে নিয়ে এলো, তাকেও তো যত্নআত্তি করতে হয়।’ এ কথা শুনে মা ও মেয়ে দুজনই হাসতে থাকে।
দশম শ্রেণি, বাখরাবাদ গ্যাস আদর্শ বিদ্যালয়, কুমিল্লা