রাতুল মুন্সী
প্রকাশ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৮ পিএম
আদিব ও মারিয়া আফসার বন্ধুত্ব থেকে গড়ে উঠেছে দারুণ উদ্যোগ
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মারিয়া আফসা ও আদিব। পড়ছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্যাম্পাসে আলপনা করতে গিয়ে তাদের পরিচয় এবং ভালো বন্ধুত্ব। মারিয়া নৃবিজ্ঞান, আদিব চারুকলা বিভাগে। দুজনই চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনা শেষ করে দুজনই দেখছেন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন।
ভ্রমণপিপাসু মারিয়া ভ্রমণের নেশা থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বলে মনে করেন। এ পর্যন্ত ২৩টি জেলা ঘুরে দেখাও হয়েছে তার। ভ্রমণের নেশা থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছোট থেকেই নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে পছন্দ করতাম। শুধু যে ঘুরতে পছন্দ করতাম তা নয়, ঘুরতে গিয়ে সেই জায়গার সংস্কৃতি ধারণ করা এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাক-আশাক আর গহনা সংগ্রহ করার প্রবল নেশা ছিল আমার। এসব সংগ্রহ করা থেকে বুঝতে পারলাম প্রতিটি জায়গার পোশাক-আশাক ভিন্ন। আর এ ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাক-আশাক নিয়ে নতুন করে কিছু করা যায়। প্রথম ধারণা আসে গহনা তৈরির।’
মারিয়া যেহেতু ঘুরতে পছন্দ করেন তার সঙ্গে মিল রেখে ‘উদ্বাস্তু’ নামে খুলে ফেললেন পেজ এবং ২০২০ সালে সবাই যখন কোভিড-১৯-এ ঘরবন্দি মারিয়া তখন বসে না থেকে একাই মাত্র ১ হাজার টাকা মূলধনে শুধু গহনার পরিকল্পনা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন। মূলত সেই উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন শুরু। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণ আলপনা করার সময় পরিচয় আদিবের সঙ্গে এবং একসময় ভালো বন্ধুত্ব। ব্যবসা নিয়ে মাঝেমধ্যেই কথা হতো আদিবের সঙ্গে। মারিয়ার ফোক মোটিফে হ্যান্ডপেইন্টেড ডিজাইনের আইডিয়া শেয়ার করার পর আদিবের বিষয়টি ভালো লাগে এবং ২০২২ সালে যুক্ত হন আদিব।
সেই ভাবনা এবং চেষ্টা থেকে দুজনই বর্তমানে অনলাইন-অফলাইন দুটোতেই ভালো ব্যবসা দাঁড় করিয়ে ফেলেছেন। কাজ করছেন গহনা, হ্যান্ডপেইন্ড টি-শার্ট এবং শাড়ি নিয়ে। দিন দিন চাহিদাও তৈরি হচ্ছে বেশ। তাদের তৈরি গহনার চাহিদা শুধু ক্যাম্পাসে নয়, ক্যাম্পাসের বাইরে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামেও রয়েছে।
এ ছাড়া সারা দেশ থেকে অনলাইন পেজে অর্ডার আসে নিয়মিত। অনলাইন-অফলাইন দুভাবেই অর্ডার নিয়ে থাকেন তারা। অনলাইনের ক্ষেত্রে আলাদা ডেলিভারি ফি দিতে হয়। সমাজমাধ্যমে ‘উদ্বাস্তু’ নামে সার্চ করলেই তাদের পেজটি পাওয়া যায় এবং পেজে নতুন নতুন ডিজাইনের পণ্য দেখাসহ অর্ডার করা যায়। যেহেতু তাদের অধিকাংশ ক্রেতা ছাত্রছাত্রী সে বিষয় মাথায় রেখেই দাম নির্ধারণ করেন; যেন ক্রয়ক্ষমতা সবার থাকে। বর্তমানে তাদের ব্যবসার মূলধন অর্ধলাখের ওপরে।
‘উদ্বাস্তু’ নিয়ে আদিব বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা নিজস্ব শোরুম নেব এবং নতুন নতুন চিন্তা ও পণ্য দিয়ে ব্যবসাটা আরও বেশি সমৃদ্ধ করতে চাই।’