× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কথা শোনে না

নুসরাত খন্দকার

প্রকাশ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:১৭ পিএম

কথা শোনে না

সন্তানদের নিয়ে এ অভিযোগ অনেক অভিভাবকেরই। ভেবে দেখেছেন কি, এর কী কারণ?

আমাদের কম বয়সে ‘বড়দের কথা শুনতে হয়’-এ কথাটাকে আমরা অনেকেই শিরোধার্য ভেবে নিয়ে চলতাম। সেটা বড়দের ভয় পেয়েই হোক বা সম্মান করে- এ মানসিকতার এখন পরিবর্তন ঘটেছে। ‘জেন জি’র অনেক বাচ্চাকে নিয়েই অভিভাবকদের সমস্যা-‘ও কোনো কথাই শোনে না!’ কিন্তু কেন শোনে না? কী করলে তারা কথা শুনবে? সেটা কি ভেবে দেখেছেন?

কথা না শোনার কারণ

টিনএজে সন্তান স্বতন্ত্র ব্যক্তিমানুষ হয়ে উঠছে। এ সময় তারা অন্ধভাবে বড়দের কথা শোনে না। বরং স্বাধীন চিন্তাভাবনা গড়ে তোলে। এটা খুবই স্বাভাবিক। এখনকার টিনএজাররা এমনকি আরো ছোট শিশুরাও ‘কে বলছে’র চেয়ে ‘কী বলছে’কে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়। যেহেতু তারা স্বাধীন চিন্তা ও যুক্তি গঠন করছে, সে যুক্তির আলোতেই তারা সবার সব কথা বিচার করে। যদি সমবয়সি বা ছোট কেউও যুক্তি দিয়ে তাদের কিছু বলে, তারা কিন্তু মেনে নেয়। কিন্তু বড়রা যদি কোনো কারণ না দেখিয়ে ‘এটা বলছি, শুনতে হবে’ জাতীয় কথা বলেন, তাদের মানতে অসুবিধা হয়। যিনি কিছু বলছেন, তার সঙ্গে টিনএজারটির কেমন সম্পর্ক, এর ওপরও ‘ওবিডিয়েন্স’ বা বাধ্যতা নির্ভর করে। যদি পারস্পরিক সম্মান, একে অন্যের কথা ধৈর্য ধরে শোনার অভ্যাস থাকে তাহলে অভিভাবক কোনো কথা বললে বাচ্চাটি কখনও সেটা প্রথমেই উড়িয়ে দেবে না। অন্তত শুনবে, ভাববে। কিন্তু সম্পর্কের মধ্যে যেখানে কনফিউশন, কনফ্লিক্ট, আর্গুমেন্ট, ডিমান্ড, অথরিটিÑএসবের পরিসর বেশি হয়, সেখানে বাচ্চা কথা শুনতে চায় না। বরং বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। বয়ঃসন্ধির সময়টা যেহেতু নিজেকে চিনতে শেখার, নিজের পথ গড়ে নেওয়ার, ফলে তখন অন্যের কথার চেয়ে নিজেকেই বেশি ভরসা করে বাচ্চারা। কথা না শোনার প্রবণতা সেখান থেকেও আসে।

টিনএজ ‘পিয়ার প্রেশার’-এরও সময়। অনেক সময় সমবয়সি বন্ধুদের চাপে পড়ে বা তাদের চোখে ‘কুল’ হওয়ার জন্যও অনেকে অভিভাবকদের সব কথা মানতে চায় না।

অভিভাবকদের যা খেয়াল রাখা উচিত-

  • অনেক সময় যে কথাগুলো আমরা শিশুদের বলি, সেগুলো নিজেরাই মানি না। ওবিডিয়েন্স বা বাধ্যতা এমনই গুণ যা জীবনচর্যার মাধ্যমেই বাচ্চাদের শেখানো যায়। বাচ্চাকে যদি বলেন ‘ভোরে উঠতে হবে’, সে জানতে চাইতেই পারে ভোরে উঠলে তার আলাদা কী লাভ হবে। আপনি নিজে যদি ভোরে উঠে দেখিয়ে দেন তাহলে হাতে কতটা সময় পাওয়া যায় এবং কত সহজে দিনের সব কাজ সেরে ফেলা যায়, ও উত্তর পেয়ে যাবে।
  • বাচ্চা কোনো কথা না শুনতে চাইলে সেটাকে ‘অবাধ্যতা’ না ভেবে, ‘মতের অমিল’ ভাবুন। মত কোথায় মিলছে না বের করার চেষ্টা করুন। পরিস্থিতির ভালোমন্দ বোঝাতে চেষ্টা করুন। ধরুন বাচ্চা একদল সদ্যচেনা বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে যেতে চাইছে। বুঝিয়ে বলুন যে এমন পরিস্থিতিতে ঠিক কী কী ধরনের বিপদ হতে পারে। এমন নয় যে আপনি চান না ও আনন্দ করুক। ও যদি বন্ধুদের সম্পর্কে মোটামুটি তথ্য, তাদের ফোন নম্বর ইত্যাদি আপনাকে দিতে পারে, তাহলে যেতে দেওয়া যায় কি না ভেবে দেখুন।
  • নিজের মনটাও খোলা রাখুন। কোথাও যদি মনে হয় আপনি ভুল, তাহলে মেনে নিন।
  • বাড়িতে যদি নিজেদের মধ্যে সুন্দর কমিউনিকেশন থাকে, বাধ্যতা জোর করে আদায় করতে না হয়, অবসরে যদি একসঙ্গে গল্প করেন, ছুটির দিনে ঘুরতে যান, বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলার সময় ওদের যদি সমানে-সমানে গুরুত্ব দেন... ওরাও আপনাকে সম্মান করবে। আর যদি ওদের মূল্যবোধ, ওদের ‘চয়েস’কে বাধা দেন, তাহলে ওরাও অবাধ্য হয়ে উঠবে। আর পরিবারের সবাইকে সম্মান করুন, তাহলে আপনাকে দেখেই ওরাও সম্মান করতে শিখবে।
  • বাচ্চাদের জগতে একটু ঢুকতে শিখুন। এ মুহূর্তে আমাদের চেয়ে হয়তো ওরা অনেক বেশিই স্ট্রাগল করছে! নিজেদের চেনা, কী চায় তা বুঝতে শেখা... সবটাই ওদের হয় এ টিনএজেই। তার ওপর ‘অ্যাকসেপ্টেবল’ হয়ে ওঠার চাপ! ভাবুন তো, এখনকার একটা টিনএজারকে বন্ধুদের মধ্যে জায়গা বানাতে হলে টেকস্যাভি হতে হয়, স্টাইলিশ হতে হয়... কত কিছু করতে হয়! আবার শুধু তো বন্ধুদের সঙ্গে খাপ খাওয়ালেই হয় না, বড়দের সঙ্গেও খাপ খাওয়াতে হয়।
  • তা বলে বাচ্চার বন্ধু হয়ে উঠছেন ভেবে তাকে একদম শৃঙ্খলাছাড়া করে তুলবেন না! কিছু নিয়ম সবাইকেই মানতে হয়। নিয়মগুলো চাপিয়ে না দিলেই হলো বা বাচ্চার ব্যাপারে ‘তুই তো হাতের বাইরে চলে গিয়েছিস!’ জাতীয় জাজমেন্ট না তৈরি করলেই হলো।
  • বাচ্চা যেন আপনাকে শাসনের প্রতিমূর্তি না ভেবে পথ দেখিয়ে দেওয়ার বন্ধু ভাবতে শেখে।
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা