স্বাদু সংবাদ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৩৮ পিএম
মরুভূমির বুকে সবুজ প্রাণবন্ত মরূদ্যান। ছবি : সংগৃহীত
মরুভূমির কথা
শুনলেই চোখে ভাসে এক শুষ্ক বিস্তীর্ণ প্রান্তরের দৃশ্য। যেখানে রৌদ্রতাপ আর বালুর
রাজ্যে জীবনের কোনো চিহ্নই চোখে পড়ে না। কিন্তু সেই মরুভূমির বুকে সবুজ প্রাণবন্ত
মরূদ্যানের কথা কি শুনেছেন কখনও? অবাক করার মতো হলেও বাস্তবে আছে তেমনটাই; যা
অনেকের কল্পনাকেও হার মানায়।
বলছি ইরানের শাজদেহ
গার্ডেনের কথা; যা প্রিন্সের গার্ডেন নামেও পরিচিত। মরুভূমির মধ্যখানে প্রায় ৬
হেক্টর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠেছে এ অনিন্দ্যসুন্দর বাগান। ইরানের কেরমান প্রদেশের
মাহান শহর থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শাজদেহ গার্ডেন উনিশ শতকের শেষভাগে
কাজার রাজদের শাসনামলে (১৭৯৪-১৯২৫) প্রদেশটির গভর্নরের আদেশে নির্মিত একটি
ঐতিহাসিক বাগান। এটি ইরানের সর্বাপেক্ষা বড় অপ্রাকৃতিক বাগান।
এখানে আছে সবুজ
বাগান আর জলের ফোয়ারা। আয়তাকার সম্পূর্ণ জায়গাটি পাথরের দেয়াল দ্বারা বেষ্টিত যা
এর চারপাশের কঠোর মরুভূমি থেকে ভেতরের সবুজ স্বর্গ রক্ষা করে থাকে।
এ বাগানে রয়েছে
পাঁচটি চিত্তাকর্ষক জলের ফোয়ারা, একটি পুকুর। যেখানে দারুণ প্রকৌশলের মাধ্যমে
একটি কূপ দ্বারা ভূগর্ভস্থ জলাশয়ের পানি সরবরাহ করা হয়। কয়েকটি ধাপে নির্মিত বাগানে
সেচের জন্য জলপ্রপাতের মতো ওপর থেকে নিচের ধাপে পানি প্রবাহিত হয়। ফলে গোটা
বাগানেই বছরজুড়ে পানির সরবরাহ থাকে অটুট। এ ছাড়া পাশের শহরের তুষারপাতও ব্যবহার
করা হয় বাগানের সতেজতা রক্ষায়।
২০১১ সালে ইউনেস্কো
শাজদেহ গার্ডেনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ফলে বাগানটি
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণপিপাসুর জন্য হয়ে উঠেছে দারুণ গন্তব্য।
মরুভূমির বুকে সাংস্কৃতিক এবং প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের দারুণ মিশ্রণে গড়ে ওঠা শাজদেহ গার্ডেনটি পর্যটকদের জন্য বিস্ময় নিয়ে অপেক্ষায় থাকে।
উঁচু ভবনে ওঠানামার জন্য লিফট বা এলিভেটরের অবিষ্কার। ধারণা করা হয়, খ্রিস্টের জন্মের ২৩৬ বছর আগে রোমান স্থপতি ভিটরুভিয়াস প্রথম এলিভেটরের ধারণা দেন। পরে কালে কালে অনেকের হাত ধরেই উঁচু স্থান বা ভবনে মালামাল পরিবহন বা যাতায়াতে এ যন্ত্রের আধুনিকীকরণ ঘটেছে।
বর্তমানে প্রায় সব উঁচু ভবনেই রয়েছে লিফট। এগুলো সাধারণত ১০ থেকে ১৫ জন পর্যন্ত বহনে সক্ষম। কিন্তু যদি শোনেন এমনও একটি লিফট রয়েছে যেখানে একসঙ্গে দুইশর বেশি মানুষ ওঠানামা করতে পারে, অবাক হবেন নিশ্চয়ই।
অবাক করার
মতো ঘটনাটি ঘটিয়েছে ফিনল্যান্ডের এলিভেটর প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কোনি (KONE)। প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে ভারতে এমন একটি লিফট স্থাপন করেছে, যাতে
একবারে ২৩৫ জন ওঠানামা করতে পারে। মুম্বাইয়ের জিও ওয়ার্ল্ড সেন্টার ভবনে স্থাপিত
এ লিফটকে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এলিভেটর।
১১৮ একর
জায়গা জুড়ে অবস্থিত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের এ ভবনটি ভারতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের
নিদর্শন। ভবনটিতে নিয়মিতই আয়োজিত হয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এখানে আগতদের সুবিধার্থেই
এ লিফটি স্থাপন করা হয়েছে। ২৫ দশমিক ৭৮ বর্গমিটার আয়তনের এ লিফটে চাইলে একটি বিয়ের
অনুষ্ঠানে আগত সব অতিথি একবারেই গন্তব্যে যেতে পারবেন। এর স্বচ্ছ কাচের দেয়ালের
মাধ্যমে অতিথিরা চারপাশের সুন্দর সবুজ বাগানের রূপও দেখতে পারবেন। বিশ্বের বৃহত্তম
যাত্রীবাহী লিফটটি নতুন ধারণা তথা উদ্ভাবনী পুলি বিম সিস্টেমের ওপর নির্ভরশীল। যেখানে
১৮টি লোহার পাতের বিম রয়েছে। আছে নয়টি ইস্পাতের তার। আছে চারটি প্যানেল বিশিষ্ট
কাচের দরজা। আর আছে কাচের দেয়াল ও স্ফটিক-খচিত সিলিং। লিফটটি তৈরিতে কত খরচ হয়েছে
তা প্রকাশ করেনি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।