প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:১৮ পিএম
মাছে রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। ভোগ্যপ্রাণীর মধ্যে মাছ আমাদের অন্যতম প্রধান খাদ্য ও আমিষের উৎস। পৃথিবীতে প্রায় ২৫ হাজার প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। দেশের মিষ্টি পানিতে ২৬০ প্রজাতির এবং লোনা পানিতে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক মাছ খেলে কী পুষ্টি আর উপকারিতা পাওয়া যায়-
মাছে যথেষ্ট প্রোটিনের সঙ্গে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম ও আয়োডিন। হার্টের অসুখ ও মস্তিষ্কের রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেয় মাছের ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। পুষ্টিবিদদের মতে, সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিন ৭০ থেকে ৭৫ গ্রাম মাছ খাওয়া উচিত। গবেষকরা বলছেন, যারা সপ্তাহে তিন দিন বা এর বেশি মাছ খান তাদের মস্তিষ্কের নিউরন কোষ অনেক বেশি সুগঠিত ও কর্মক্ষম।
উপকারিতা
মাছের গুণাগুণ
রুই : প্রতি গ্রাম রুই মাছে রয়েছে ১৬.৪ গ্রাম আমিষ, ১.৪ গ্রাম চর্বি, ৬৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২২৩ মিলিগ্রাম ফসফরাস। রুই বাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
কাতলা : কাতলা সুস্বাদু পানির মাছ। কাতলা বায়ু, পিত্ত ও কফ কমায় এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
শোল : শোল মাছ মানবদেহে হাড় ও মাংসপেশি গঠনে সাহায্য করে, রুচি বাড়ায়। ১০০ গ্রাম শোলে ৯৪ গ্রাম ক্যালরি, ১৬.২ গ্রাম প্রোটিন, ১৪০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৫ মিলিগ্রাম আয়রন, ৯৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১ হাজার ৮০ মাইক্রোগ্রাম জিঙ্ক। শোল কোষ্টকাঠিন্য দূরীকরণ ও শরীরে রক্ত তৈরির জন্য খুব জরুরি।
মাগুর : প্রতি ১০০ গ্রাম মাগুর মাছে ৩২.০ গ্রাম আমিষ, ২.০ গ্রাম চর্বি, ১৭২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস ও ০.৭ মিলিগ্রাম লোহা থাকে। রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীর জন্য মাগুর ভালো উৎস।
পুঁটি : এ মাছ আমাদের দরকারি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। প্রতি ১০০ গ্রাম পুঁটিতে আছে শক্তি ১০৬ ক্যালরি, প্রোটিন ১৮.১ গ্রাম, চর্বি ২.৪ গ্রাম ও ক্যালসিয়াম ১১০ মিলিগ্রাম।
ট্যাংরা : প্রতি ১০০ গ্রাম ট্যাংরা মাছে আছে শক্তি ১৪৪ ক্যালরি, প্রোটিন ১৯.২ গ্রাম, চর্বি ৬.৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭০ মিলিগ্রাম, আয়রন ২ মিলিগ্রাম।
মলা : রক্তস্বল্পতা দূর করতে মলা মাছের তুলনা হয় না। ১০০ গ্রাম মলায় আছে ৮৫৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৫.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ভিটামিন এ ২০০০ ইউনিট ও জিঙ্ক ৩.২ মিলিগ্রাম।
কাঁচকি : কাঁচকি মাছে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। তা ছাড়া আমাদের প্রয়োজনীয় প্রোটিন কাঁচকি মাছ থেকে পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচকিতে আছে প্রোটিন ১২.৭ গ্রাম, চর্বি ৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৭৬ মিলিগ্রাম, আয়রন ২.৮ মিলিগ্রাম।
কাঁটাসহ ছোট মাছ : কাঁটাসহ ছোট মাছ ক্যালসিয়ামের অনন্য উপাদান। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলেন, মলা, ঢ্যালা, চাঁদা, ছোট পুঁটি, ছোট চিংড়ি, কাঁচকি ইত্যাদি জাতীয় মাছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, প্রোটিন ও ভিটামিন এ বিদ্যমান। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের পরামর্শ হলো ছোট মাছ খেতে হবে কাঁটাসহ চিবিয়ে। তাতে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম পাওয়া যাবে। কাজেই ছোট মাছ নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।