× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাপলেজা কুঠিবাড়ি

ধ্বংসের পথে ২০০ বছরের ইতিহাস

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪৫ পিএম

সাপলেজা কুঠিবাড়ি। প্রবা ফটো

সাপলেজা কুঠিবাড়ি। প্রবা ফটো

সুরক্ষার অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পিরোজপুর জেলার প্রত্নসম্পদ মঠবাড়িয়ার সাপলেজা কুঠিবাড়ি। ইংরেজ জমিদারদের গড়ে তোলা নানা দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাগুলো সুরক্ষা ও দেখভালের অভাবে আজ তা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একসময় এ কুঠিবাড়ি ঘিরে প্রজাদের উপস্থিতি পুণ্যাহ উৎসব হতো। প্রজারা উৎসব আমেজে খাজনা দিতে কুঠিবাড়িতে জড়ো হতেন। এ কুঠিবাড়ি ঘিরে নানা ইতিহাস নিহিত আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনুমানিক আঠারো শতকের গোড়ায় জনৈক ইংরেজ জমিদার অ্যাডওয়ার্ড প্যারি ক্যাসপার এ কুঠিবাড়ি নির্মাণ শুরু করেন। সোয়া নয় একর জমির ওপর নির্মিত হয় ক্যাসপারের কুঠিবাড়ি। কথিত আছে, মি. ক্যাসপার ঘটনাক্রমে সাপলেজা ভ্রমণকালে স্থানীয় ধনাঢ্য ফরাজউল তাকে সম্মানিত করতে উক্ত জমি উপহার দেন। পরবর্তীকালে এখানে ক্যাসপারের জমিদারি সম্প্রসারিত হয়। প্যারি ক্যাসপারের উপস্থিতিতে প্রতিবছর পৌষ মাসের শেষভাগে কুঠিবাড়িতে পুণ্যাহ উৎসব উপলক্ষে খাজনা আদায়সহ প্রজাদের মনোরঞ্জনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এর মধ্যে জাদু প্রদর্শনী, লোকগান, যাত্রা ও নিমাই সন্ন্যাস পালায় প্রচুর লোকসমাগম হতো। কথিত আছে, সোয়াহাত মাপের এক জোড়া জুতা দিয়ে অভিযুক্ত প্রজাদের বিভিন্ন অপরাধে শাস্তি দেওয়া হতো। কুঠিবাড়ির মূল ভবন নির্মাণে প্রচলিত ধারার ব্রিটিশ স্থাপত্যরীতিতে চৌকোনাকৃতির ১৮টি খিলানের ওপর দোতলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত ছিল। এ ছাড়া অন্যান্য স্থাপনা ও বড় একটি পুকুর রয়েছে। কুঠিবাড়ির ওপরের তলায় প্যারি ক্যাসপারের ব্যক্তিগত ব্যবহৃত মূল্যবান সামগ্রী ও তৈজসপত্র ছিল। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাগের পর ব্রিটিশরা চলে গেলে ভবন ও সম্পত্তি তখনকার সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। অজ্ঞাত কারণে ভেঙে দেওয়া হয় মূল ভবনটির দোতলার সম্পূর্ণ অংশ। তখন এ অংশে রক্ষিত মূল্যবান মালামাল বেহাত হয়ে যায়। লিখিত আকারে এই ভবনের বিস্তারিত ইতিহাস না পাওয়ায় অ্যাডওয়ার্ড প্যারি ক্যাসপার ও তার জমিদারি বিষয়, ব্যক্তিগত জীবন, ভবনের নির্মাণশৈলী ইত্যাদি সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা যায়নি। ধারণা করা হয় ব্রিটিশ আর্কাইভ বা কোনো প্রকাশনায় কুঠিবাড়ির তথ্য লিপিবদ্ধ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ক্যাসপারের ব্যবহৃত যে দুটি তরবারিসহ কিছু তৈজসপত্র ছিল তাও নিখোঁজ। বর্তমানে টিনের ছাউনির কুঠিবাড়িটি ২০০ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে অযত্নে-অবহেলায় দাঁড়িয়ে আছে। শান বাঁধানো ঘাটসহ পুকুর জৌলুশহীন। কুঠিবাড়ির তত্কালীন ম্যানেজার সুরেন্দনাথ সুর ও নায়েব সতীশ চন্দ্রের কোনো বংশধরের খোঁজ পাওয়া যায় না। প্রথমে ক্যাসপার সাহেবের মূল বাড়ি সংস্কার ও পরিবর্তন করে ইউনিয়ন ভূমি অফিস (তহশীল অফিস) হিসেবে ব্যবহার করা হয়। একই জমিতে অন্য স্থানে নতুন ভূমি অফিস ভবন নির্মিত হওয়ায় ক্যাসপারের বাড়িটি বর্তমানে পরিত্যক্ত, তবে স্থানীয় ডাকঘরটি ক্যাসপারের পিতা শিলার সাহেবের নামে এখনও শিলারগঞ্জ নামে পরিচিত।

এ বিষয়ে সাপলেজা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মিরাজ মিয়া বলেন, সাপলেজা কুঠিবাড়ি মঠবাড়িয়া অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। কুঠিবাড়ির স্থাপনাগুলো সংস্কারের অভাবে এখন ধ্বংসের দিকে। এলাকার ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষার স্বার্থে সংস্কার জরুরি।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা