শনিবারের হাসি
নাহিদ আশরাফ উদয়
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৩৬ পিএম
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:১৬ পিএম
শনিবারের হাসি
বড় ফুপির
বাসার কাজের মেয়ের নাম ফুলবানু।
ফুলবানু
প্রত্যেক দিন ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময় ঘ্যান ঘ্যান করে। তার ভাষ্যমতে, এভাবে নিচু হয়ে
ঝাড়ু দিলে কোমর ব্যথা করে। বয়স হওয়ার আগেই বৃদ্ধ হয়ে যাবে। তাই সে সব রুম ঝাড়ু
দিতে পারবে না। ফুপিও কম যান না। রুম ঝাড়ু না দিলে টাকাও কম নেওয়ার অফার দেন।
প্রত্যেক দিন
সকালে এসব নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যালাপ চলে। ফুপা ঝগড়াঝাঁটি শুনতে শুনতে গম্ভীর মুখে নাশতা
করে অফিসে রওনা দেন।
(দুপুর নাগাদ
অবশ্য এই ঝগড়া শেষ হয়ে যায়। দুপুরের খাবার শেষে দুজন মিলে সিরিজ দেখতে বসে। ফুপি
টিভিতে OTT প্ল্যাটফর্ম চালাতে পারেন না। ফুলবানু আবার এসব ব্যাপারে ওস্তাদ। সিরিজ
দেখার সময় ফুলবানু ফুপির মাথায় তেল মেখে দিতে দিতে গল্প করে। দুজনের মধ্যে তখন
দারুণ সখ্যতা দেখতে পাওয়া যায়)
ঝগড়াঝাঁটি
থামাতে ফুপা আমাকে সমাধান জিজ্ঞেস করলেন।
আমি বললাম,
যেহেতু কোমর বাঁকা করে ঝাড়ু দেয়, ব্যথা হওয়াই স্বাভাবিক। আসলেই বিরাট সমস্যা। এক
কাজ করেন, লম্বা স্টিকের ঝাড়ু পাওয়া যায় কিনা দেখেন। তাহলে দাঁড়িয়ে থেকেই ঝাড়ু দিতে
পারবে। না রইল কোমর ব্যথা, না রইল বাকি ঘর ঝাড়ু দেওয়া।
সমাধান ফুপার
পছন্দ হলো। তিনি প্রসন্ন মুখে ঝাড়ু খুঁজতে লোক লাগালেন। তার পিএ চায়না থেকে
আলিএক্সপ্রেস দিয়ে লম্বা ঝাড়ু আনিয়ে দিল।
ডিজিটাল ঝাড়ু
বলা চলে। উচ্চতা অনুযায়ী হাতল ছোট-বড় করা যায়। ঝাড়ুর মাথার ফুলঝুরি ডিটাচ করা যায়।
তিন রঙের ফুলঝুরি লাগানো যায়। গোলাপি, নীল ও সবুজ। দেখতেই চোখে আরাম লাগে। ফুলবানু-ফুপি
দুজনরেই ঝাড়ু পছন্দ হয়েছে।
ফুপা শান্তির
নিশ্বাস ফেললেন। ঝগড়ার অবসান ঘটল বুঝি।
কিন্তু কিসের
কী?
প্রত্যেক দিন
সকালে এখনও ঝগড়া চলে। ফুলবানু ঝাড়ু দেবে না। তার কোমর ব্যথা করে। ফুপিও ছাড়বে
না।
আর সেই নতুন
ঝাড়ুর কী হলো?
সেই ঝাড়ুর
স্থান হলো ড্রয়িং রুমে টিভির পাশে। থাইল্যান্ড থেকে আনা মটকা টাইপের ফুলদানিতে
সাজিয়ে রেখেছেন। ফুলবানু ও ফুপির বক্তব্য— ঝাড়ুটা এত সুন্দর যে ওইটা দিয়ে ধুলাবালি
ঝাড়লে ঝাড়ু ময়লা হয়ে যাবে।
শুধু তাই নয়,
প্রত্যেক দিন দুপুরে সিরিজ দেখার আগে ফুলদানিতে রাখা ঝাড়ুর ওপর পরা ধুলা-ময়লা নিজেরাই
পরিষ্কার করেন।