সাইফুল হক মোল্লা দুলু
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৩:১৪ পিএম
সেন্টোসা দ্বীপ
সিঙ্গাপুর মাত্র ৫৯৯ বর্গকিলোমিটারের একটি ছোট দেশ হলেও সারা বিশ্বের ভ্রমণপিয়াসীদের কাছে কাঙ্ক্ষিত এক পর্যটনের স্থান। ব্যবসা, চিকিৎসা কিংবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য সিঙ্গাপুর বর্তমানে অনেকের ভ্রমণের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অবস্থানের কারণে সিঙ্গাপুরে তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা দুই-ই বেশি থাকে প্রায় সারা বছর। এ কারণে বছরের যেকোনো সময়ই আপনি সিঙ্গাপুর ভ্রমণ করতে পারেন। সিঙ্গাপুরের চাঙ্কি বিমানবন্দরে নামার পরই বিমানবন্দরের আধুনিক সৌন্দর্য ও কারুকার্য আপনার মধ্যে মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেবে। সিঙ্গাপুরে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। ট্রাফিক জ্যামমুক্ত ঝকঝকে নগররাষ্ট্রটিতে উপভোগ করার মতো অনেক উপকরণই রয়েছে। দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মেরিনা বে স্যান্ডস, সেন্টোসা দ্বীপ, বোটানিক গার্ডেন, সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ারের চমৎকার দৃশ্য।
সিঙ্গাপুর ফ্লাইয়ার
সিঙ্গাপুরের অনন্য আকর্ষণগুলোর মধ্যে ফ্লাইয়ার অন্যতম। একে নির্দ্বিধায় পৃথিবীর বৃহত্তম নাগরদোলা বলা চলে। ২৪০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত ১৬৫ মিটার উচ্চতার এ নাগরদোলাটি ২০০৮ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। রাতের বেলা এ নাগরদোলায় চড়ে চমৎকার আলোকোজ্জ্বল সিঙ্গাপুরের ৩৬০ ডিগ্রি দৃশ্য দেখার চেয়ে রোমান্টিক আর কী হতে পারে? ইচ্ছা করলে নাগরদোলায় থাকাকালেই বিশেষ ব্যবস্থায় আপনার ডিনারটা সেরে নিতে পারেন। এক কোথায় অপূর্ব কিছু অনুভূতি পাবেন এখানে।
বোটানিক গার্ডেন
বোটানিক গার্ডেন সিঙ্গাপুরের প্রথম ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ মনোনয়নপ্রাপ্ত স্থান। সিঙ্গাপুরের পুরোটা কনক্রিট জঙ্গল মনে হলেও এ বোটানিক গার্ডেনই সেই ধারণা বদলে দেয়। এটি যেন ইটপাথরের জঙ্গলের মাঝে এক টুকরো সত্যিকারের জঙ্গল। এখানে হাঁটতে হাঁটতে দেখতে পাবেন সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও পশুপাখি।
মেরিনা বে স্যান্ডস
সিঙ্গাপুরের সবচেয়ে দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান মেরিনা বে স্যান্ডস (Marina Bay Sands)। এটি দেশটির একটি অত্যাধুনিক রিসোর্ট কমপ্লেক্স। ২০১০ সালে নির্মিত এ মেরিনা বে স্যান্ডস বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিল্ডিংগুলোর একটি। এখানে আছে একটি হোটেল, বিভিন্ন দামি ব্র্যান্ডের শোরুম, আর্টসায়েন্স মিউজিয়াম, রেস্টুরেন্ট, কনভেনশন সেন্টার, থিয়েটার, একটি শপিং মল, যার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে একটি খাল এবং মেরিনা বে স্যান্ডস স্কাইপার্ক, যেখান থেকে সমগ্র সিঙ্গাপুর দেখা যায়। সমগ্র সিঙ্গাপুর দেখার এ ডেক ও ইনফিনিটি পুল অবস্থিত একটি জাহাজের মধ্যে। কেবল হোটেল গেস্টরা এ ইনফিনিটি পুল ব্যবহার করতে পারলেও যে-কেউই পর্যবেক্ষণের ডেক দেখতে পারবেন। এখানে কৃত্রিম বরফের তৈরি একটি স্কেটিং কোর্টও আছে।
সেন্টোসা দ্বীপ
সিঙ্গাপুরের সেন্টোসা দ্বীপ এক মজার রাজ্য। এটি শিশুদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য চমৎকার একটা জায়গা। দ্বীপে যাওয়ার পথ থেকেই যেন রোমাঞ্চ শুরু। মাউন্ট ফ্যাবার থেকে ক্যাবল-কারযোগে যেতে হয় সেন্টোসা দ্বীপে। ক্যাবল-কার থেকে আপনি উপভোগ করতে পারবেন সিঙ্গাপুর হারবারের অ্যারিয়াল ভিউ। সাতটি ভিন্ন ভিন্ন থিমে সাজানো ইউনিভার্সাল স্টুডিওতে গিয়ে উঠতে পারেন রোমাঞ্চকর সব রাইডে। সাই ফাই সিটি জোনে শিশুদের জন্য রয়েছে ব্যাটেলস্টার গ্যালাকটিকা, হিউম্যান ভার্সেস সাইক্লোন রোলার কোস্টার। রিভেঞ্জ অব দ্য মামি সিনেমার থিমে রয়েছে আরও একটি রোলার কোস্টার। পরিবার নিয়ে একবার হলেও অবশ্যই যাওয়া উচিত এসইএ অ্যাকোয়ারিয়ামে। ১০টি জোনে বিভক্ত এ অ্যাকোয়ারিয়ামে আপনি দেখতে পাবেন হাঙ্গর, মানটা রেসহ ১ লাখের বেশি সামুদ্রিক প্রাণী। আরও রয়েছে চোখ ধাঁধানো অপটিক্যাল আর্ট মিউজিয়াম, ট্রিক আই মিউজিয়াম, থ্রিডি আর্ট।
দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুর আছেন নেত্রকোণার জোবায়ের। তিনি জানান, ভ্রমণকারী বাংলাদেশিদের ঘুরে ফিরে একবার মোস্তফা সেন্টারে আসতেই হয়। কারণ এখানে না এলে কেমন যেন অপূর্ণতা থেকে যায়। এখানে আসার পর মনে হবে আপনি পুরান ঢাকায় অথবা কোনো বিভাগীয় শহরের প্রধান মার্কেটে বসে আছেন। ভাষা ও সংস্কৃতির মিল থাকায় বাংলাদেশিরা মোস্তফা সেন্টারে দেখাাসাক্ষাৎ কিংবা আড্ডা দিতে আসেন। কেনাকাটা আর বাঙালি ও ভারতীয় খাবারের জুড়ি নেই এ এলাকায়।