সুমাইয়া সুমি
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৪ ১১:৩৪ এএম
দিলরুবা আক্তার মিলি
দেশ ও দেশের বাইরে নিজেদের কাজ দিয়ে যোগ্যতার প্রমাণ রাখছেন দেশের নারীরা। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গর্বের সঙ্গে তারা উড়িয়েছেন লাল সবুজের পতাকা। বর্তমানে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে নারীর। প্রায়ই তাদের সাফল্যগাথা শোনা যায়, তারাও সময়ের সঙ্গে সমানতালে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছেন আপন মহিমায়। সাহসী নারী দিলরুবা আক্তার মিলিও সে তালিকার একজন, যিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী বনরক্ষী।
২০১৬ সালে ঢাকায় বনরক্ষী হিসেবে যোগ দেন দিলরুবা। বর্তমানে মিরপুরের জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে কর্মরত। তবে তার এ অবস্থানের জন্য অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে, যার শুরুটা স্কুলজীবনেই।
পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার মেয়ে দিলরুবা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কাউখালী মহাবিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে উদ্যোগ নিই বনরক্ষী হওয়ার। বনজঙ্গল নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা থেকেই এ সিদ্ধান্ত। প্রথম দিকে কীভাবে কী করব দ্বিধায় ভুগছিলাম। কেননা যেকোনো কিছুর নতুন উদ্যোগ চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু আমার পরিবার, আপনজনের সহযোগিতা এবং বাবার হাত ধরেই এগিয়ে চলি। বরিশাল থেকে পড়াশোনা শেষ করি।’
তিনি বলেন, ‘এরপর বনরক্ষী হিসেবে পরীক্ষা, ভাইভা শেষ করে ট্রেনিং নিই রাজশাহী পুলিশ একাডেমি থেকে। তবে পরীক্ষা ও ট্রেনিং নেওয়ার সময় বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার মধ্যে পড়ি। এ পেশায় নারীসংখ্যা শূন্যের দিকে। ফলে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় আমাকে। আমাদের ট্রেনিংয়ের আগে ভাইভা দিতে হয়। ওই সময় ২০৩ জন পুরুষের মধ্যে একমাত্র নারী হিসেবে যোগ দিই আমি। সেখানে পরীক্ষা ও ভাইভায় উপস্থিত হতে সমস্যা হলেও মোকাবিলা করে এগিয়ে যাই। পাশাপাশি বেশ কয়েকজনের সহযোগিতায় ধীরে ধীরে নানা চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে থাকি। এরপর ঢাকায় বনরক্ষী হিসেবে ২০১৬ সালে যোগ দিই। তখন থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে বনরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছি।’
দিলরুবা বলেন, ‘শুরুর দিকে যখন চাকরি করতে ঢাকায় আসি তখন থাকা-খাওয়া এবং নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে চলাসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল। তবে যত দিন যাচ্ছিল ততই আত্মবিশ্বাসী হতে থাকি। এ ছাড়া প্রথম ও একা নারী হিসেবে এ পেশায় কাজ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং বিধায় সাহসী হওয়া খুব জরুরি ছিল আমার জন্য। তবে প্রতিদিনই বাড়তে থাকে আমার কাজের গতি ও আস্থা। আমি চাই প্রতিকূলতা জয় করে আমার মতো আরও মেয়ে এ পেশায় আসুক।’