আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ১৪:১৭ পিএম
দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হলো আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল স্পেস ওয়ার্কশপ-২০২৪
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল (এসিপিএস) অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড স্পেস রিসার্চ ক্লাব এবং আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল আইটি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হলো আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল স্পেস ওয়ার্কশপ-২০২৪।
১৪ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি সাত দিন অনলাইনে এ কর্মশালা পরিচালনা করেন নাসা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি, জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের সাতজন বিশেষজ্ঞ। জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং মহাকাশ সম্পর্কে জ্ঞান অন্বেষণে যোগ দেয় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
কর্মশালা ১ : ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির সোলারিস উদ্যোগ এবং স্পেস সোলার পাওয়ার নিয়ে আলোচনা করেন ড. সঞ্জয় বিজেন্দ্রন। তিনি ১৫ বছর ধরে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং বর্তমানে সোলারিস উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ড. সঞ্জয় বিজেন্দ্রন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মশালা ২ : মহাকাশ গবেষণায় জ্যোতির্বিজ্ঞানের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দেন জর্জ সালাজার। তিনি ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে নাসায় স্পেস শাটল মডুলার অক্সিলিয়ারি ডেটা সিস্টেমের মতো যুগান্তকারী প্রকল্পগুলোয় সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন। স্পিকিং এনগেজমেন্ট, টিউটরিং এবং মেন্টরিংয়ের মাধ্যমে বিশ্বের ১৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীকে প্রভাবিত করছেন তিনি।
কর্মশালা ৩ : স্পেস ট্যুরিজম ও সুইস স্পেস ট্যুরিজম-৬ মিশন নিয়ে কথা বলেন বরিস অটার ও ক্লাউস রেইনার। বরিস অটার হলেন সুইস স্পেস ট্যুরিজমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট এবং সুইস স্পেস ট্যুরিজম-৬ মিশনের কমান্ডার এবং ক্লাউস রেইনার সুইস স্পেস ট্যুরিজম-৬ মিশনের ব্যাকআপ কমান্ডার। তাদের অতুলনীয় দক্ষতায় সীমাহীন উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের স্পেস ট্যুরিজমের রোমাঞ্চকর রাজ্যে নিয়ে যায়। বরিস ও ক্লাউস অংশগ্রহণকারীদের স্পেস ট্যুরিজমের বিশাল বিস্তৃতি, রহস্য এবং অসীম সম্ভাবনার উন্মোচন করে পথ দেখান।
কর্মশালা ৪ : মহাকাশচারীদের মহাকাশের জীবন নিয়ে আলোচনা করেন ড. সাতোশি সানো। তিনি ২১ বছর জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সিতে কাজ করেছেন। তিনি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন ইউটিলাইজেশন সেন্টারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তিনি টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাকাশ নৃবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মশালা ৫ : নাসার স্পেস শাটল প্রোগ্রাম এবং স্পেস শাটল কলম্বিয়া বিপর্যয় সম্পর্কে ধারণা দেন ড. জিভান পেরেরা। ৩৪ বছর ধরে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন তিনি। তিনি হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
কর্মশালা ৬ : নাসার ওপেন ইনোভেশন ও ক্রাউডসোর্সিং প্রোগ্রাম সম্পর্কে কর্মশালা পরিচালনা করেন স্টিভ রাডার। তিনি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে নাসায় বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে নাসার টুর্নামেন্ট ল্যাব এবং সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর কোলাবোরেটিভ ইনোভেশনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং মহাকাশ গবেষণার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস, মহাকাশ গবেষণায় প্রযুক্তির অগ্রগতি, মহাকাশ সংস্থা এবং কোম্পানিগুলোয় কাজের ভবিষ্যৎ, স্পেস ট্যুরিজমের সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ, মহাকাশচারী প্রশিক্ষণ এবং নির্বাচনপ্রক্রিয়া, নাসার স্পেস শাটল প্রোগ্রামের ওভারভিউ, মাইক্রোগ্রাভিটিতে স্পেস মেডিসিন এবং স্বাস্থ্যসেবা, স্পেস মিশনে রোবোটিকস এবং অটোমেশন, বিভিন্ন চন্দ্র অভিযান, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে বায়োমেডিক্যাল গবেষণা, মানবস্বাস্থ্যের ওপর মাইক্রোগ্রাভিটির প্রভাব, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে থেকে পৃথিবী পর্যবেক্ষণ, দীর্ঘমেয়াদি মিশনে মহাকাশচারী মনোবিজ্ঞান এবং মানসিক স্বাস্থ্য, মহাকাশ অনুসন্ধানে চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ, মহাকাশভিত্তিক সৌরশক্তির গুরুত্ব, স্পেস সোলার পাওয়ারের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন, স্পেস শাটল প্রোগ্রাম এবং এর অবদানসহ ৬০টির বেশি বিষয় নিয়ে ধারণা দেওয়া হয় এ কর্মশালাগুলোয়।
আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের উপাধ্যক্ষ (দিবা) দিলীপ কুমার রায় বলেন, ‘১৪-২০ ফেব্রুয়ারি আমাদের স্কুলের অ্যাস্ট্রোনমি এবং আইটি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে দ্বিতীয় এসিপিএস স্পেস ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়; যেখানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকরা কর্মশালাগুলো পরিচালনা করেন। এ ওয়ার্কশপে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে। আমাদের প্রত্যাশা, বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশ ও জাতির জন্য গৌরব বয়ে আনবে।’
বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকা থেকে কর্মশালায় অংশ নেওয়া একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়শা অহনা বলেন, ‘সম্প্রতি আমি দ্বিতীয় এসিপিএস স্পেস ওয়ার্কশপ-২০২৪-এ অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলাম। এটি আমার এবং আমার বন্ধুদের জন্য সত্যিই একটি আকর্ষণীয় এবং আনন্দের অভিজ্ঞতা ছিল। কর্মশালাগুলো শুধু তথ্যপূর্ণ ছিল না, বরং চিত্তাকর্ষকও ছিল, যা আমাদের মহাকাশ গবেষণায় অনেক অনুপ্রাণিত করেছে।’
এসিপিএস অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড স্পেস রিসার্চ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আলমাস সাকিব অভি বলেন, ‘জ্যোতির্বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে সবার আগ্রহ বৃদ্ধি করতে আমাদের ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছিল। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই আমাদের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে, সব প্রশিক্ষক, ক্লাব পার্টনার ও শুভাকাঙ্ক্ষীকে। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতেও আমরা বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এবং অলিম্পিয়াডের আয়োজন করব এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করব।’