দেখতে খানিকটা ফুলকপির মতো, কিন্তু উপকারের দিক থেকে কয়েক গুণ এগিয়ে। সেদ্ধ করে খান বা রোস্ট করে, এর পুষ্টিগুণ থাকবে অটুট-
আদতে ইতালির বাসিন্দা। রোমানদের প্রিয়। কিছুদিন আগে পর্যন্তও বাঙালির রান্নাঘরে সম্পূর্ণ অপরিচিত। কিন্তু আজকের দিনে, যখন ঘরে ঘরে পাস্তা আর মাছভাত দুইয়েরই কদর প্রায় সমান, এখন একে উপেক্ষা করার মানে হয় না। বলছি ব্রকলির কথা। মূলত শীতকালের সবজি হলেও সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায়। এটি এতরকম পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ যে বর্তমানে যেকোনো পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় প্রথম ৫-এ অনায়াসে জায়গা করে নিতে পারে। এতে সালফারোফেন নামক একটি ফাইটোকেমিক্যাল থাকে, যা ক্যানসার রোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া গ্লুকোফোনিন বা সেলেনিয়ামের মতো কিছু কেমিক্যালও আপনাকে এ মারণ রোগ থেকে রক্ষা করবে। ব্রকলিতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল মজুদ, যেগুলো পরিচিত অ্যান্টি-ক্যানসার এজেন্ট। সালফার, ভিটামিন সি আর কিছু বিশেষ অ্যামিনো অ্যাসিড থাকায় ব্রকলি খুব ভালো ডিটক্স করতে পারে। এটি শরীর থেকে ফ্রি র্যাডিকালস ও ইউরিক অ্যাসিডের মতো টকসিন কমাতে সাহায্য করে, যার জন্য রক্ত পরিষ্কার হয়, ত্বক ভালো থাকে। ভিটামিন সি আর বিটা ক্যারোটিনের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ফোলেট, ভিটামিন এ ইত্যাদি ত্বক ও চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
- পেটের জন্যও ব্রকলি খুবই উপকারী। এতে অন্যান্য সবজির তুলনায় অনেক বেশি ফাইবার থাকে, যা কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। ম্যাগনেসিয়ামের মতো মিনারেল পেটের গ্যাস দূর করে, হজমশক্তি বাড়ায়।
- ব্রকলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, হার্ট ভালো রাখে, অ্যানিমিয়া থেকে বাঁচায়।
- ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ফসফরাস থাকায় ব্রকলি চোখের জন্যও উপকারী। এ ছাড়া ব্রকলি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- অন্য সবজির থেকে এতে প্রোটিনের পরিমাণও বেশি। তবে ব্রকলিতে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম, তাই মোটা হওয়ার ভয় নেই।
এত গুণের জন্য ডাক্তাররা বিশেষভাবে বাচ্চাদের, বয়স্কদের এবং গর্ভবতী মহিলাদের ব্রকলি খাওয়ার পরামর্শ দেন। সারা পৃথিবীতেই সবজিটির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। হবে নাইবা কেন! স্টিম করে খান বা সালাদে দিন, এর উপকার অপরিসীম। তাই যারা এখনও খাননি, আজই শুরু করুন। এত গুণ যার, তাকে খাবার তালিকায় বাদ দিলে কি চলে!