হুমায়ুন কবীর, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:৫৯ পিএম
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:০১ পিএম
বিশাল এলাকাজুড়ে ডাল ও কাণ্ড ছড়িয়ে আছে বটগাছটি
ময়মনসিংহের ত্রিশালের মোক্ষপুর ইউনিয়নের সাপখালী এলাকায় অনেক ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশালাকার বটবৃক্ষ। তবে কেউ বলতে পারে না এই বটবৃক্ষের বয়স কত। পুরোনো বটগাছটি দিব্যি দাঁড়িয়ে প্রমাণ করে আসছে প্রবীণতার কালের সাক্ষী হিসেবে।
এই বটগাছের পাশেই রয়েছে লালপীরের মাজার। প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময় পীরভক্তরা এসে ভিড় জমায় এখানে। নানা ধরনের আয়োজন থাকে সেখানে। তৈরি হয় উৎসবের আমেজ। তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হলোÑ এই পীর কে, কোথা থেকে এসেছে বা কেউ কখনও দেখেছে কি না, কেউ বলতে পারে না!
লোকশ্রুতি আছে, এই বটবৃক্ষের পাতা ছিঁড়ে বেশ কয়েকজনের শরীরে জ্বর এসেছিল। তারপর থেকে ভয়ে কেউ পাতা ছেঁড়া বা ডালপালা ভাঙার সাহস পায় না। আরও শোনা যায়, এখানে এসে মনের ইচ্ছা ব্যক্ত করলেও পূরণ হয়। বটগাছটির একেবারে কাছেই ভক্তকুল এসে দোয়া, প্রার্থনা ও মানত করে। থাকে ভূরিভোজের আয়োজন।
প্রায় প্রতিদিনই গাছটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসে লোকজন। বেশ কয়েকবার ঝড়-তুফানে বটগাছটির ডালপালা ভাঙলেও প্রতিবারই আবারও স্বমহিমায় জেগে ওঠে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বটগাছের শেখর ও ডালপালা মাটিতে পড়ে পুনরায় গাছ হয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এখন ডালপালা ও শেখর থেকে বিশাল বিশাল শিকড় মূল হয়ে একসঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। আবার কিছুটা দূরত্বে ডালপালা থেকে অসংখ্য মূলের সৃষ্টি হয়েছে। মূল বটগাছ থেকে শাখা-প্রশাখার বটগাছগুলো দিব্যি দাঁড়িয়ে রয়েছে। কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫টি এমন শাখা মূল রয়েছে। পুরোনো এই বটগাছের ডালপালা বিশালাকৃতির। ডালপালাগুলো চারদিকে ছড়িয়ে বছরের পর বছর ছায়া দিচ্ছে। ওই বটগাছের পাশে লালপীরের মাজার নামের একটি মাজার রয়েছে। এই মাজারে প্রতিবছর ওরস মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাজারে এসে লোকজন বটগাছটির নিচে দোয়া, প্রার্থনা ও মানত করে থাকে।
অবশ্য কেউ কেউ বলছে, প্রথমে বটগাছটি মাজারে ছিল। মাজার থেকে এনে কেউ পাশেই ডালপালা ফেলে দিলে এই স্থানে গাছটি জন্মায়। তবে এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য কেউ দিতে পারেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মালেক, জাকির, শরিফসহ কয়েকজন জানান, প্রথমে এই বটগাছের পাতা ছিঁড়লেই নাকি শরীরে জ্বর হতো। বটগাছটি নিয়ে অনেক অলৌকিক ঘটনা রয়েছে বলেও তারা জানান। যা পূর্বপুরুষদের মুখে মুখে শুনে আসছেন তারা।