× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভৈরব নদ

কচুরিপানা-দূষিত পানির দাপট

মেহেরাব হোসেন অপি, মেহেরপুর

প্রকাশ : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩২ এএম

আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:৩৩ এএম

কচুরিপানার কারণে নদের পানি দূষিত হয়ে গন্ধ ছড়িয়ে দূষিত করছে পরিবেশ

কচুরিপানার কারণে নদের পানি দূষিত হয়ে গন্ধ ছড়িয়ে দূষিত করছে পরিবেশ

মেহেরপুরে ভৈরব নদ ৫৯ কিলোমিটার খনন শেষ হলেও মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। শত কোটি টাকা খরচ করেও কচুরিপনার দাপটে প্রত্যাশিত ফল মিলছে না। নদের বুকে এখন চলছে কচুরিপানার রাজত্ব। কচুরিপানার কারণে পানি দূষিত হয়ে গন্ধ ছড়িয়ে যেমন দূষিত করছে পরিবেশ, মৎস্যসম্পদও পড়েছে হুমকির মুখে। 

মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১ জুলাই ৬৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথম দফায ২৯ কিলোমিটার নদ খনন করা হয়। খনন কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালের ৩০ জুন। ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ৩০ কিলোমিটার খননকাজ শুরু হয়। এ দফায় ব্যয় ধরা হয় ৪৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ ছাড়া ভৈরব নদ ঘিরে দুই পারে পর্যটক আকৃষ্ট করতে করা হয় ওয়াকওয়ে। প্রথম দফায় এক কোটি তিন লাখ টাকা ব্যারে এক কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে দ্বিতীয় দফায় ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। 

ভৈরব নদ খনন ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের ফলে প্রান ফিরে পেয়েছিল নদটি। উপকার পেতে শুর করে মেহেরপুরের তিন উপজেলার প্রায় শতখানেক গ্রামের মানুষজন। কিন্তু এ যাত্রায় বাধা সাজে কচুরিপানা ও নদীর নব্যতা না থাকা। তাই ভেসতে যেতে বসেছে সরকারের এই পরিকল্পনা। 

তবে কচুরিপানা অপসারণ ও নদে ১২ মাস পানি রাখার জন্য নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। ভৈরব নদের নব্যতা বাড়াতে ও পানি ধরে রাখতে ভৈরব নদের তিনটা উই আর নির্মাণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার রতনপুরে একটি গোপালনগরে একটি। রতনপুরে উই আর নির্মাণে ব্যায় ধরা হয়েছে ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। গোপালপুরে ব্যায় ধরা হয়েছে ২৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এই উই আর নির্মাণ হলে ১২ মাস ভৈরব নদীর পানি ধরে রাখা সম্ভব হবে।


মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের চাষী আনসার শেখ জানান, এক সময় ভৈরবের পানি দিয়েই চলতো আমাদের চাষাবাদ। কিন্তু নদীর নব্যতা নষ্ট হয়ে পানি শূন্য হয় পড়েছে নদীটি। বর্তমানে পূর্ণখনন করা হলেও পানি ধরে রাখাটা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ নদীর নব্যতা নাই। অন্যদিকে অল্প পানি থাকলেও কচুরিপানার কারণে সেই পানি ব্যবহার করতে পারেনা চাষিরা।

মেহেরপুর সদর উপজেলার বন্দর গ্রামের আবু লায়েচ জানান, এক সময় নৌপথে বড় বড় জাহাজ আসতো মেহেরপুরে। এসকল জাহাজগুলো নামতো বন্দরে তখন থেকেই এই গ্রামের নামকরণ করা হয় বন্দর। যা আমরা বাপ দাদাদের মুখে শুনেছি। কিন্তু আমাদের জন্মের পরে আমরা আর তা দেখিনি। তিনি বলেন নৌপথে আবারো ভৈরব নদকে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করলে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবে। মেহেরপুরের প্রবীণ সাংবাদিক তুহিন অরণ্য জানান, ভৈরব নদকে ঘিরে নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা যেতে পারে। ইতিমধ্যে সরকার ৫৯ কিলোমিটার পূর্ণ খননের মাধ্যমে ভৈরব নদকে নতুন করে জন্ম দিয়ছে। এখন এটিকে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করলে একদিকে যেমন এই অঞ্চলের কৃষকদের উপকৃত হবে অন্যদিকে মৎস্য চাষের মাধ্যমে মেহেরপুরের মাছের ঘাটতি পূরণ করাও সম্ভব হবে।  

মেহেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হান্নান প্রধান বলেন, ভৈরব নদকে ঘিরে মহা পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এর অংশ হিসেবে ৫৯ কিলোমিটার খনন করা হয়েছে। ১২ মাস পানি ধরে রাখার জন্য ভৈরব নদে তিনটি পৃথক স্থানে উই আর নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজ ২০২৫ সাল নাগাদ শেষ হবে। এটি নির্মাণ সম্ভব হলে ভৈরব নদে বারো মাস পানি ধরে রাখা সম্ভব হবে। যার ফলে এই অঞ্চলের কৃষক ও মৎস্যজীবীরা নানামুখী উপকৃত হবেন। কচুরিপানা অপসারণের জন্যও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতি মধ্যে কচুরিপানা অপসারণের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে অল্পদিনের মধ্যেই কচুরিপানা অপসারণ করা হবে। অঞ্চলের কচুরিপানা সৃষ্টির উপাদান রয়েছে তাই এটি অপসারণ করলেও আবারো সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তিনি কচুরিপানা অপসারণ সরকারের পাশাপাশি মেহেরপুরের সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা