প্রেমের অনুগল্প
কাজী সুলতানুল আরেফিন
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২১ পিএম
সকালে নাহিদা এসে একটি ফুল দিয়ে গেল; বেলিফুল। ফুলটি কুয়াশায় ভেজা। অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে আছি। বেলিফুল হয় সাদা। কিন্তু এর রঙ নীল। ঘ্রাণ ঠিকঠাক আছে। মনে প্রশ্ন এলো-ফুলটি নীল কেন?
ফুল অনেক রঙের হয়। অনেক রঙের গোলাপ দেখেছি। নীল রঙের গোলাপও দেখেছি। কিন্তু নীল রঙের বেলি এ প্রথম দেখলাম।
নাহিদার সঙ্গে প্রায় পনের বছরের সংসার আমার। ছেলেমেয়ে নিয়ে বেশ সুখেই আছি। আমাদের তেমন মনোমালিন্য হয় না। তবে একটি সমস্যা আছে, নাহিদা সারা দিন ঘ্যানরঘ্যানর করে। নাহিদাকে নাকি তার বাবা ছোটবেলায় আদর করে ‘ভ্যানভ্যানি’ ডাকতেন। আমি নিরালা পরিবেশ, চুপচাপ থাকতে পছন্দ করি। কিন্তু নাহিদা আমাকে নিরালা বসবাস করতে দিল কই! সংসারজীবনের শুরু থেকেই…। সে কথা বলে লাভই বা কী! গল্পে ফিরে আসি। নাহিদা বাগান করতে পছন্দ করে। তার বাগানে অনেক ফুলগাছ। বেলিফুলের গাছই বেশি। তার বাগানের ফুল কেউ ছিঁড়বে কি, ছুঁয়েও দেখার অধিকার নেই। আর আজ নাহিদা আমাকে বেলিফুল দিয়ে গেল, তাও আবার নীল রঙের!
তার পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। বললাম, ভালোবাসা দিবস, তাই কি ফুল দিলে? তাও আবার নীল রঙের বেলি!
-তো কী হয়েছে?
-না, ভাবছি ভালোবেসে নীল ফুলটিই আমাকেই দিলে...
-মোটেই না।
-তাহলে? প্রশ্ন ছুড়ে দিলাম।
হি হি করে হাসি দিয়ে বলল, আজ কাপড়ে নীল দিয়েছিলাম। কাপড় শুকাতে দিতে গিয়ে সেই কাপড়ের নীল পানি সাদা বেলির ওপর পড়েছিল। ভাবলাম রঙে ভিজে নষ্ট হওয়া এ ফুল তোমাকে দিই!
হজম করতে হষ্ট হলো। তবু মুখে শুকনো হাসি ফুটিয়ে বললাম, ‘নষ্ট হোক আর ভালো হোক, ফুল ফুলই। ভালোবাসার প্রতীক।
আমার কথা শুনে মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল নাহিদা।