প্রেমের অনুগল্প
জায়েদ বিন আলী সুজন
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:০৭ পিএম
জোহরার সঙ্গে বিষাদের প্রথম দেখা হওয়ার দিন তাকে চারটা মারবেল দিয়ে বলেছিল, ‘একটি তুমি, একটি তোমার স্বামী আর বাকি দুটি তোমার দুই বাচ্চা।’
জোহরা মারবেলগুলো হাতে নিয়ে একটু অবাক হয়ে হেসে বলেছিল, ‘আচ্ছা’।
ওই চারটি মারবেলে ভর করেই জোহরা আর বিষাদের ভালোবাসা এসেছিল। এরপর জোহরাকে কত কিছু দিয়েছে বিষাদ। কিন্তু জোহরা বলত, সেই মারবেল চারটিই বিষাদের কাছ থেকে পাওয়া তার সেরা উপহার। ওগুলো সে সারা জীবন রেখে দেবে।
আজ প্রায় ছয় বছর পর বিষাদ জোহরাকে দেখল, রাস্তায়। জোহরার পাশে তার সঙ্গী আর কোলে দুটি ফুটফুটে বাচ্চা।
ব্যস্ত সড়কে বিষাদ থমকে দাঁড়াল। থমকে গেল নিঃশ্বাস, গাড়ির হর্ন, রিকশার টুংটাং, হকারের চিৎকার। সব ছাপিয়ে মাথায় একটা চিন্তা ঘুরছিলÑআচ্ছা, জোহরা কি মারবেলগুলো এখনও রেখেছে নাকি হারিয়ে ফেলেছে কালের ধুলোয়?
রিকশার বেলের শব্দে সম্বিত ফিরে পেল বিষাদ। চিন্তা এলোÑআরে ওই রিকশাতেই তো মারবেল চারটি আছে। যার একটি জোহরা নিজে, একটি ওর স্বামী আর বাকি দুটি ওদের দুই বাচ্চা! চারটি মারবেল, কি সুন্দরভাবেই না ঈশ্বর মিলিয়ে দিয়েছেন!
জোহরার চলে যাওয়ার ছয় বছর পর সবার প্রশ্ন ছিলÑকে কাকে ছাড়ল, বিষাদ জোহরাকে নাকি জোহরা বিষাদকে? বিষাদ কেবল হাসত, মনে মনে বলতÑআরে ওরা বোঝেনি, আমরা কেউ কাউকে ছাড়িনি। বরং ভালোবাসাই আমাদের ছেড়েছে!
ঘরে ফেরার পথে বিষাদের মনে হলো, ওর কাছে জোহরার দেওয়া কিছু নেই। সব হারিয়ে ফেলেছে। শুধু আছে হৃদয়ের দেয়ালে সযত্নে টাঙিয়ে রাখা একটি ছবি। সেই ছবিটি জোহরার।